আমরা প্রতিদিন কেউ বাজার করি কেউ বা করি না, যারা প্রতিদিন বাজার করে তারা ঠকে শেখে, আমার আলোচনা যারা রোজ বাজার করে তাদের জন্য নয়, কারণ তারা ভালোই জানে ভেজাল নির্ভেজাল এর ব্যাপারটা, আলোচনাটা ঠিক তাদের জন্য যারা জানে না খাঁটি ভেজাল এর তফাৎটা। মাছ, মাংস, দুধ, মশলা, আটা-ময়দা, মাখন-ঘি, মধু আমাদের খাদ্যতালিকার চাহিদার একদম উপরের দিকেই থাকে। এগুলি ছাড়া একটি সাধারণ পরিবারের খাবার এর কথা ভাবাই যায় না। কিন্তু খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল এটি আর নতুন কিছু নয়, আসল ব্যপার হল ভেজাল কাঁচামাল চিনবেন কী করে? যেমন ধরুন তুলো ভিজিয়ে যদি সবজির গায়ে ঘষা হয় তাতে যদি সবজির গা থেকে সবুজ রং বের হয় তার মানেই সবজিতে তুঁতে যুক্ত ম্যালাসাইট গ্রীণ মেশানো আছে বলে ধরে নেবেন। এটি তাম্রঘটিত বিষাক্ত রাসায়নিক। যেমন আটা,ময়দা ও সুজির ক্ষেত্রে যদি ম্যাগনেট পদ্ধতি অবলম্বন করেন তবে যদি দেখেন যে কিছু গুঁড়ো লেগে যায় তবে বুঝবেন লৌহচূর্ণ মেশানো আছে। এমনই মিষ্টি আলুতে রোডামিন বি, হলুদে সীসা ঘটিত রাসায়নিক লেড ক্রমেট, হলুদ গুঁড়োতে মেটালিক ইয়েলো, লঙ্কা গুঁড়োতে মেটালিক রেড অক্সাইড, গোলমরিচে শুকোনো পেঁপে বীজ, কালো জিরেতে ডাস্ট চারকোল, খাদ্যশস্যতে রাসায়নিক রং ইত্যাদি মেশানো হয়। তবে এগুলি যাচাই করা খুব মুশকিলের ব্যাপার। স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী দুধেও মেশানো হয় ডিটারজেন্ট পাউডার তা আপনি দুধ ঝাঁকালেই বুঝতে পারবেন, মাখন আর ঘি তে মেশানো হয় স্টার্চ, মধুতে থাকে ঘন চিনির দ্রবণ। মাছ মাংস ের ভেজাল তো আরও সাংঘাতিক। ইদানিং ভাগার নিয়ে যা চলছে, তাতে আপনিও টাটকা ভেবে যে মাছ বা মাংস নিয়ে আসছেন বাড়িতে সেটাও বা কতখানি স্বাস্থ্যকর? তবে মাছ মাংস টাটকা না বাসি সেটা বুঝবেন ওই মাছ বা মাংসের গায়ে চাপ দিয়ে, চাপ দেওয়া অংশটি যদি অনেকক্ষণ চেপে বসে যায় তবে তৎক্ষণাৎ বুঝতে হবে এটি বাসি মাছ কিংবা মাংস। হলুদ, লঙ্কা, গোলমরিচ এর ভেজাল বোঝা যায় জল দিয়ে, এগুলিতে জল দিলেই ভেজাল অংশটি ভেসে উঠবে, মধুকে ফ্রিজারে রাখলে জমে যাবে তখন বোঝা যাবে মধুর ভেজাল, মাখন ঘি-এর ভেজাল বুঝতে ব্যবহার করবেন টিঙ্কচার আয়োডিন, যদি মাখন বা ঘি নীল বর্ণ ধারণ করে তবে তা ভেজালে ভর্তি। এখন থেকে যাচাই করে খেতে শিখুন, সুস্থ থাকুন।
- প্রদীপ পাল