সম্প্রতি প্রকাশিত এক স্টাডি রিপোর্ট অনুসারে বাজার চলতি বেশিরভাগ কসমেটিক্সেই এমন সব উপাদান রয়েছে, যা ত্বকের সৌন্দর্য অল্প সময়ের জন্য বাড়ালেও আদতে কিন্তু স্কিনের মারাত্মক ক্ষতি করে দেয়। তাই তো বলি বন্ধু, সৌন্দর্য বাড়ানোর চক্করে ত্বকের ক্ষতি করে ফেলবেন না যেন! এক্ষুনি এই প্রবন্ধটি পড়ে ফেলুন। তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে! আসলে এই লেখায় এমন কতগুলি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যেগুলিকে কাজে লাগালে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়বে চোখে পরার মতো। এদিকে স্কিনের কোনও ক্ষতিও হবে না দেখবেন!
১. মধুকে কাজে লাগান ত্বকের পরিচর্যায়: জানা আছে কি ত্বককে সুন্দর রাখতে মিশরীয় রানী ক্লিওপেট্রা প্রতিদিন দুধে মধু মিশিয়ে তা দিয়ে স্নান করতেন। আসলে মধু এবং দুধে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের অন্দরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে স্কিনের ভিতরে থাকা টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ফলে ত্বক তো টানটান হয়ে ওঠেই। সেই সঙ্গে স্কিনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। তাই তো বলি বন্ধু অল্প সময়ে স্কিনকে সুন্দর করে তুলতে ত্বকের পরিচর্যায় দুধ এবং মধুকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন!
২. হলুদের পেস্ট: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ত্বকের পরিচর্যা হলুদকে কাজে লাগালে ত্বকের অন্দরে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানেরা মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে তার প্রভাবে ত্বকের সৌন্দর্য তো বাড়েই, সেই সঙ্গে ব্রণ এবং বলিরেখার প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো হলুদ নিয়ে তা বেটে নিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই পেস্ট কিছুক্ষণ ত্বকে লাগিয়ে রেখে মুখটা ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। এইভাবে যদি সপ্তাহে ৩-৪ দিন ত্বকের পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলে ফল পাবেন একেবারে হাতে-নাতে।
৩. নিয়মিত শরীরচর্চা করা মাস্ট: একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে সপ্তাহে কম করে ৩-৪ ঘন্টা শরীরচর্চা করলে সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে শরীর থেকে টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, নিয়মিত শরীরচর্চা করলে এন্ডোর্ফিন নামক একটি হরমোনের ক্ষরণও বেড়ে যায়। এই কারণেও ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।
৪. স্ট্রেস লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে: ওজন কমাবার সেরা কৌশল- কিছু না করেই 1মাসে 28কেজি ওজন কমাবার সেরা কৌশল- কিছু না করেই 1মাসে 28কেজি নেরোল্যাক-এর কালার ও টেক্সচারের বিশাল সম্ভার থেকে বাছুন ৪. স্ট্রেস লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে: ত্বকের সৌন্দর্য কমে যাওয়ার পিছনে যে যে কারণগুলি দায়ি থাকে, তার মধ্যে অন্যতম হল স্ট্রেস। তাই ত্বককে যদি ভিতর থেকে সুন্দর করে তুলতে হয়, তাহলে স্ট্রসকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে ভুলবেন না যেন! আর এই কাজটি করবেন কীভাবে? খুব সহজ! নিয়মিত ৩০ মিনিট প্রাণায়ম করার চেষ্টা করুন। দেখবেন উপকার মিলবেই মিলবে!
৫. ডায়েটের দিকে নজর দেওয়া জরুরি: কথায় বলে "ইউ আর ওয়াট ইউ ইট"। সহজ কথায় আপনার শরীর কতটা ভাল থাকবে, তা পুরোটাই নির্ভর করবে কী ধরনের খাবার আমরা খাচ্ছি, তার উপর। তাই ত্বককে ভিতর থেকে সুন্দর করে তুললে বেশি করে ফল এবং সবুজ শাক-সবজি খেতে হবে। সেই সঙ্গে রোজের ডায়েটে রাখতে হবে মাছের মতো ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবারকে। এখানেই শেষ নয়, রোজের ডায়েটে রাখতে হবে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, যেমন ডিম এবং চিকেনকে। কারণ এই উপাদানগুলি ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬. ঘুমের কোটায় ঘাটতি হলেই বিপদ: আপনার ত্বক কতটা সুন্দর দেখাবে, তা অনেকাংশেই নির্ভর করে কতটা সময় ঘুমাচ্ছেন তার উপর। কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমলে শরীর এবং ত্বক নিজেকে সারিয়ে তোলার সুযোগ পায়। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের অন্দরে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। এখন প্রশ্ন হল ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে কত সময় ঘুমানোর প্রয়োজন রয়েছে? চিকিৎসকেদের মতে শরীর এবং ত্বককে চাঙ্গা রাখতে দৈনিক ৭-৮ ঘন্টার ঘুম জরুরি। ৭. সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না:
৭. সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না: যখনই আমরা সান স্ক্রিন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোই, তখনই অতিবেগুনি রশ্মির খারাপ প্রভাব পরার আশঙ্কা বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও। তাই ত্বককে যদি দীর্ঘদিন সুন্দর রাখতে চান, তাহলে ভুলেও বাড়ির বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। প্রসঙ্গত, ডার্মাটোলজিস্টদের মতে ত্বককে সুন্দর রাখতে "এস পি এফ ৩০" সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। তাই এবার থেকে সানস্ক্রিন কেনার আগে এই বিষয়টি মাথায় রাখবেন কিন্তু!
৮. শরীরে যেন জলের অভাব না হয়: ত্বককে সুন্দর করে তুলতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়া জরুরি। কারণ শরীরে জলের পরিমাণ বাড়তে থাকলে দেহের অন্দরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। প্রসঙ্গত, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেলে অসময়ে বলিরেখা প্রকাশ পাওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। ফলে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা যায় কমে!
৯. কসমেটিক্স ব্যবহারে নৈব নৈব চ: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে মাত্রাতিরিক্ত কেমিকাল রয়েছে এমন কসমেটিক্স বেশি মাত্রায় ব্যবহার করা শুরু করলে সাময়িকভাবে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেলেও আদতে কিন্তু স্কিনের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে ত্বকের স্বাস্থ্যের এত মাত্রায় ক্ষতি হয় যে সৌন্দর্য কমতে সময় লাগে না।
- Sushmita Kundu