বাঁকুড়া জেলার ওন্দা ব্লকের অন্তর্গত দাতিনা গ্রামের বাসিন্দা ২৩ বছরের যুবক সৌমেন মোল্লা উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ শেষ করে অনেক চেষ্টা করেও মনমতো কাজের সংস্থান না করতে পেরে জীবিকার সন্ধানে পাড়ি দেয় নেপালের কাঠমান্ডু-তে। সেখানে দীর্ঘ এক বছর কর্মরত ছিলেন কুরিয়ার সার্ভিসে।
মূলতঃ সৌমেনের রোজগার, সাথে পারিবারিক কৃষিকাজের মাধ্যমে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট পরিবারটির ভালোভাবেই চলে যাচ্ছিলো।
ছাগল খামার তৈরি (Goat farm) -
কিন্তু বিশ্বব্যাপী কোরোনার প্রকোপে আচমকাই কর্মহীন হয়ে পরে সৌমেন। লকডাউন পরবর্তীকালে যোগাযোগ ব্যবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হলে দেশে ফিরে আসেন সৌমেন। খুঁজতে থাকে বিকল্প জীবিকা।সাহসী যুবক সৌমেন ঠিক করেন বাণিজ্যিকভাবে ছাগল খামার (Goat farm) করার।
কিন্তু খামার করার জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি থাকলেও ছাগল পালনের প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে বিশেষ কিছুই জানাছিল না। এর মধ্যে পরিচয় ঘটে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম সাপোর্ট সুজয় পাঠকের সাথে। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন সেই সময় ধারাবাহিকভাবে কৃষিজীবী ও পশুপালকদের জন্যভার্চুয়াল ট্রেনিংএর আয়োজন করছিলো। মূলতঃ সুজয়ের সাহায্যেই ভার্চুয়াল ট্রেনিং –গুলিতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান এবং রিসোর্স পার্সন ডাক্তার কৌশিক পাল (অশোকনাগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র) এর সাথে মত বিনিময়ের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ছাগল খামার করার খুঁটিনাটিগুলি, বিশেষ করে ঘর, পুষ্টিকর খাবার, টিকাকরণ-এর সময়, de-warming ইত্যাদি জেনে নেন।
শিক্ষিত যুবক সৌমেনের একজন সফল উদ্যোগী হওয়ার গুণগুলি আগে থাকতেই ছিল, কাজেই goat management এর বিষয়গুলি রপ্ত করতে বিশেষ অসুবিধা হয়নি। এরপর প্রায় ১৮,০০০/= টাকা বিনিয়োগ করে সৌমেন প্রাথমিকভাবে ১০-টি ছাগল কেনেন অগাস্ট ২০২০সালে। রিসোর্সপার্সনএরনির্দেশ ছাড়া ও রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এর হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০৪১৯৮৮০০ তো আছেই, কাজেই যে কোনো সমস্যায় হেল্পলাইনের মাধ্যমে অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নেন সৌমেন।
আর এভাবেই একজন পরিযায়ী শ্রমিক থেকে সফল উদ্যোগী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন সৌমেন। পেশাগত দক্ষতায় আজ খামার পরিচালনা করছেন, আর তার ফলস্বরূপ কয়েক মাসে পর ১০-টিছাগল বাচ্চা হয়। দু'টি ছাগল (Buck) বিক্রি করে দিয়ে ইতিমধ্যেই ১২,৮০০/- টাকা রোজগার করেছেন। নিজে যুক্ত হওয়া ছাড়াও ভাইকেও খামার পরিচালনার কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন।করোনা পরবর্তীকালে পরিবারে যে ধোয়াঁশা তৈরি হচ্ছিলো, আজ তা কেটে গিয়েছে।
আরও পড়ুন - Dragon Fruit Farming: ড্রাগন ফল চাষে ব্যাপক সাফল্য উত্তরবঙ্গের মহিলা কৃষকের
উদ্যোগী সৌমেন বলেন " রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন-এর স্যার ও সাপোর্ট টীম পাশে না থাকলে কোনোদিনই উদ্যোগী হতে পারতাম না, পেটের টানে হয়তো সারা জীবন পরিযায়ী হিসেবেই কাজ করে যেতাম। আমার পরিবার রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন-এর কাছে কৃতজ্ঞ "।
আরও পড়ুন - Papaya Farming - পেঁপে চাষ করে এই কৃষক মাসে আয় করছেন ৩০০০০ টাকা
Share your comments