কৃষিজাগরণ ডেস্কঃ মাছ চাষের জন্য চাষীদের প্রয়োজন বড় পুকুর এবং প্রচুর পুঁজি। আপনিও যদি মাছের ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে এটি নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই এবং একটি বড় পুকুর তৈরি করার প্রয়োজন হবে না। মাছ চাষের এই নতুন কৌশলকে বলা হয় বায়োফ্লক। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি খুব কম জায়গায় প্রচুর মাছ উৎপাদন করতে পারবেন।
বায়োফ্লক প্রযুক্তি কি ?
বায়োফ্লক হল মাছ চাষের একটি নতুন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি,যাতে মাছের মলমূত্র ,তাদের অবশিষ্ট খাদ্য এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থকে বৈজ্ঞানিকভাবে মাছের খাদ্য হিসেবে প্রস্তুত করা হয়।এভাবে মাছ চাষের জন্য বড় ট্যাংক তৈরি করা হয়। এই ট্যাঙ্কের আকার আপনার মাছের সংখ্যার উপর নির্ভর করে।
আরও পড়ুনঃ খালে মাছ চাষ একটি অন্যতম রোজগারের পাথেয়
এই বায়োফ্লক প্রযুক্তিতে বায়োফ্লক নামক ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে বর্জ্য পদার্থ পচে যায়। এই কৌশলে সিমেন্টের তৈরি ট্যাঙ্কে মাছ রাখার পর তাদের খাবার দেওয়া হয়। এই মাছগুলো যে খাবার খায় তার 75 শতাংশ মল ত্যাগ করে এবং বায়োফ্লক ব্যাকটেরিয়া সেই মলকে প্রোটিনে রূপান্তরিত করে , যা মাছ আবার খায় এবং তাদের বৃদ্ধি খুব ভালো হয়।
বায়োফ্লক প্রযুক্তিতে ব্যয়
মাছ চাষের জন্য ২০ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার ট্যাঙ্ক তৈরি করলে মোট খরচ হতে পারে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আসুন আমরা আপনাকে বলি যে এই ট্যাঙ্কটি 5 থেকে 7 বছর ব্যবহার করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে আপনি 6 মাসে 4 থেকে 5 কুইন্টাল মাছ পেতে পারেন , যা বাজারে বিক্রি করা যায় এবং আপনি প্রচুর লাভ করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ সমবায় ভিত্তিক মাছের উৎপাদনে চাষের সরঞ্জাম সামগ্রী বিতরন
বায়োফ্লক প্রযুক্তির সুবিধা
বায়োফ্লক প্রযুক্তির সাহায্যে মাছ চাষ খরচ কমায় এবং খামারের সীমিত এলাকায় এটি প্রয়োগ করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে কম পরিশ্রমে বেশি মাছ উৎপাদন করা হয়। এ পদ্ধতিতে চার মাসে মাত্র একবার পুকুর পানি দিয়ে ভরাট করতে হয় এবং কাজের জন্য কম শ্রমিকও লাগে।
বায়োফ্লক প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ
বায়োফ্লক প্রযুক্তি একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি , গ্রাম পর্যন্ত কৃষকদের শিক্ষিত করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। এ পদ্ধতিতে শ্রমের প্রয়োজন কম হওয়ায় কর্মসংস্থানের উপায় কমে যায়। Biofloc প্রযুক্তি শুধুমাত্র একটি সীমিত এলাকার জন্য , এটি একটি বড় স্কেলে প্রয়োগ করা যাবে না।
Share your comments