বিলম্বি কামরাঙ্গা গোত্রের ফল।বিলম্বির ইংরেজি নাম বিলিম্বি। বৈজ্ঞানিক নাম এভেরহোয়া বিলিম্বি । এর গাছ ট্রি সোরেল নামেও পরিচিত। এর স্বাদও অনেকটা কামরাঙ্গার মতোই। বিলম্বি দেখতে অনেকটা পটলের মতো, তবে আরো ছোট। ফল ৩-৬ সে.মি. পর্যন্ত বড় হয় এবং রং উজ্জ্বল, হালকা সবুজ। বিলম্বি গাছে ধরে খুবই অদ্ভুতভাবে,গাছের ডালে তো বটেই, কান্ড ঘিরেও ফল ধরে। প্রতি থোকায় ১৫ থেকে ২০টি করে ফল ধরতে দেখা যায়।
বিলিম্বি এ দেশের হারিয়ে যেতে বসা এক অপ্রচলিত দেশি ফল। বিক্ষিপ্তভাবে কিছু গাছ দেখা যায়। উপকূলীয় অঞ্চলে বেশি। বান্দরবানের বালাঘাটায় হর্টিকালচার সেন্টারের মধ্যেও কয়েক বছর আগে দেখেছিলাম বিলিম্বির একটা বড় গাছ। ভারতের আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বিলিম্বি বেশ জনপ্রিয়। সেখানে বিলিম্বি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। ধারণা করা হয়, বিলিম্বির আদি নিবাস মালাক্কা-ইন্দোনেশিয়া। এ দেশ ছাড়াও ভারত, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশে বিলিম্বিগাছ দেখা যায়। ১৭৯৩ সালে তিমুর থেকে বিলিম্বিগাছ নিয়ে জ্যামাইকায় প্রথম লাগানো হয়েছিল। তাই এশিয়ার বাইরের কিছু দেশেও এ গাছ আছে।
বিলিম্বি ফল স্বাদে টক। তাই চৈত্রের দুপুরে কাঠফাটা রোদে এই ফল নুন দিয়ে চিবোতে বেশ লাগে। দুপুরের রোদে তা টনিকের মতো কাজ করে। ফল দিয়ে এ দেশে টক ডাল রান্না ও আচার বানানো হয়। বিলিম্বিগাছ মাঝারি আকৃতির। চিরসবুজ। দেখতে অনেকটা কামরাঙাগাছের মতো।এছাড়াও বিলম্বির পুষ্টিগুন অসাধারণ। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমান ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, আয়রন, ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম। সবচেয়ে বেশি রয়েছে ভিটামিন সি।
মাটি তৈরি
বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে তা রোপণ করলেই খুব স্বল্প সময়ে বড় হয়ে থাকে। দো-আঁশ মাটিতে অবশ্য ভাল জন্ময়। বছরের যেকোন সময়ে বিলিম্বি চারা রোপণ করা যায় তবে বর্ষাকালেই রোপণ করা উত্তম। চারা রোপণের জন্য ১ × ১ × ১ গর্ত করে কিছু পচা গোবর বা পচন সার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে রোপণ করা ভাল।
আরও পড়ুুনঃ লাউ চাষে এখন বাম্পার ফলন হবে, চাষিদের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে
সেচ ব্য়বস্থা
অতিরিক্ত জল দেওয়া আবার একদম কম জল দেওয়া উভয়ই গাছের জন্য ক্ষতিকর। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, বেশি জল দেয়ার ফলে বিভিন্ন রোগে গাছ আক্রান্ত হয়, এমনকি মারা যায়।তাই গাছের গোড়া শুকালে তবেই কেবল জল দেয়া উচিৎ। গোড়া ভেজা থাকলে কোনো মতেই তাতে জল দেওয়া যাবে না।কিছু গাছ বেশি জল গ্রহণ করে আবার অনেক গাছে জল কম লাগে। বৃষ্টি বা নালায় জমে থাকা জল গাছ বেশি পছন্দ করে। তবে সকাল বেলা গাছে জল দেওয়া উত্তম।
আরও পড়ুনঃ জাম চাষে ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার! রইল সম্পূর্ণ তথ্য
সার প্রয়োগ
গাছের সঠিক বৃদ্ধি ও কাঙ্খিত ফলাফল এর জন্য গাছের বৃদ্ধি ও ফুল ধরার সময় সঠিক মাত্রায় জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। সে ক্ষেত্রে অধিকাংশ গাছের ক্ষেত্রেই ১৫ দিন বা এক মাস অন্তর অন্তর সার প্রয়োগ করতে হবে। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।
Share your comments