কোচবিহার জেলার মোট চাষযোগ্য জমির ৭০-৮০ ভাগ জমিতে খরিফ মরশুমে আমন ধানের চাষ করা হয়ে থাকে। কৃষকরা মূলত রোপণ পদ্ধতিতেই (কাদা বীজতলায় চারা তৈরী করে মূল জমিতে রোপণ। আমন ধানের চাষ করে থাকেন। কিন্তু কৃষকদের চাষ পদ্ধতিতে ধান চাষের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানভিত্তিক চাষ পদ্ধতির থেকে কিছু পার্থক্য ও দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়। নীচের আলোচনায় রোপণ পদ্ধতিতে বিজ্ঞানভিত্তিক আমন ধানের চাষ পদ্ধতি মূলত কৃষকদের দুর্বলতার ক্ষেত্রগুলি সহ সবিস্তারে উল্লেখ করা হল।
বীজের হার
রোপণ পদ্ধতিতে ধান চাষে (ক) সরু ধান ৩.৫-৪ কেজি (থ) মাঝারি ধান ৪-৫-৫ কেজি ও (গ) মোটা ধান ৫৫-৬ কেজি ১ বিঘা জমিতে রোয়া করার জন্য যথেষ্ট।
বীজ বাছাই
পুষ্ট ও স্বাস্থ্যবান বীজ বেছে নেওয়ার জন্য-
সরু ও মাঝারি ধানের ক্ষেত্রে ১০ লিটার জলে ৯.৫ কেজি থাবার লবণগুলে ১-২ বিঘার জন্য প্রয়োজনীয় বীজ ডুবিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করলে অপুষ্ট বীজত্ত লি ভেসে উঠবে। ভেসে ওঠা বীজগুলি ফেলে দিতে হবে। নীচে ডুবে থাকা পুষ্ট বীজন লি সংগ্রহ করে পরিস্কার জলে ৩-৪ বার ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ তরমুজ চাষ করা খুবই সহজ, শুধু শিখে নিন এই পদ্ধতি, লাভ হবে লাখে
মোটা ধানের ক্ষেত্রে ১০ লিটার জলে ২৫ কেজি লবণগুলে উপরে বর্ণিত পদ্ধতিতে পুষ্ট বীজ শুকিয়ে নিতে হবে।
বীজ শোধন
বাছাই করা পুষ্ট বীজ শোধনের জন্য ৯০ লিটার জলে ৯০ গ্রাম ট্রাই সাইক্লোজোল (৭৫%) অথবা ২০ গ্রাম কার্বেনডাজিম (৫০%) মিশিয়ে তাতে বীজ ৮-১০ ঘন্টা ভিজিয়ে নিয়ে জল ঝরিয়ে ৩ ৪ বার ভালো করে ধুয়ে অঙ্কুরোদম করতে দিতে হবে।
বীজতলা তৈরী
বীজতলা তৈরীর সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।
ক) চারার ঘনত্ব পাতলা করতে হবে। সাধারণত ১ বিঘা জমি রোয়া করার জন্য ২ কাঠা বীজতলা তৈরী করা উচিত।
থ। বীজতলার মাটি নরম করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জৈবসার প্রয়োগ করতে হবে। ২ কাঠা বীজতলায় অন্তত ২০০ কেজি জৈবসার মিশিয়ে লাঙল ও মই দিয়ে অন্তত ১ সপ্তাহ রেখে দেওয়া উচিত।
গ। বীজতলা তৈরীর সময় শেষচাষে প্রতি ২ কাঠায় ১.৫ কেজি ইউরিয়া, ৪ কেজি সিঙ্গল সুপার ফসফেট ও ১ কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া ধানতলার জমির উর্বরতার ভিত্তিতে প্রয়োজনবোধে প্রতি ২ কাঠা পিছু ১-৫-২৫ কেজি ইউরিয়া ১৫-২০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ছয়ের পরিবর্তে ১৫ কুইন্টাল ফলন পেতে এই পদ্ধতিতে মুগ ডাল চাষ করুন
ঘ। জমি তৈরীর পর বীজতলাকে ৪-৫ ফুট চওড়া ও জমির আকার অনুযায়ী সুবিধামত লম্না থন্ডে ভাগ করে দুটি খন্ডের মাঝে ১ ফুট চওড়া ও ৯-৫ ফুট গভীর নালা রাখতে হবে।
Share your comments