উৎপল রায়, জলপাইগুড়ি, কৃষি জাগরণ: ময়নাগুড়ির চূড়াভান্ডার গ্রামের একাধিক চাষী ভারাক্রান্ত মন নিয়ে চাল কুমড়ো গাছে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক স্প্রে করছেন। বিগত বছর যে তুলনায় ক্ষতি হয়েছে সেই তুলনায় দ্বিগুণ ক্ষতি হবে বলে সংশয় প্রকাশ করছেন এই গ্রামের অধিকাংশ কৃষকেরা। কারণ গাছে ফুল ফল হওয়ার আগেই পোকার আক্রমণে অনেক গাছ মারা যেতে শুরু করেছেন।
অধিকাংশ কৃষকের জমিতে চাল কুমড়ো গাছে ভালো ফুল ফল লক্ষ্য করা গেলেও কতটা ফল ধরবে বলে এ নিয়ে চিন্তায় চাষীরা। কারণ, গত বছর সে রকম লাভ হয়নি। এ বছর লাভ হওয়ার আশায় কৃষিজ জমিতে চাল কুমড়ো চাষ শুরু করেছেন। কিন্তু ফুল ফল হওয়ার আগেই মাছি এবং পোকার আক্রমণে একাধিক ফল নষ্ট হয়েছে। বাকি ফলগুলো যাতে নষ্ট না হয় সেই কারণে চাল কুমড়ো গাছে কীটনাশক স্প্রে প্রয়োগ করছেন।
একজন চাষী বাপ্পা সরকার বলেন, এবছর দুই বিঘা জমিতে চালকুমড়ো লাগাতে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গত বছরে সে রকম ভাবে লাভ হয়নি। এবছর গাছে ফুল ফল হওয়ার আগেই পোকার আক্রমণ অতিরিক্ত দেখা দিয়েছে তাই গাছ গুলো মরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এ বছর লাভ হবে না। গত বছর প্রথমদিকে সাত-আট টাকা বিক্রি হয়েছে। পরের দিকে দু-তিন টাকা করে বিক্রি হলেও বাজারে চাহিদা নেই। এই গ্রামের চাষিরা সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন এবছর কতটা লাভ এবং চাহিদা থাকবে সে নিয়ে।
আরও পড়ুনঃ আলুর বন্ড না পেয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ কৃষকদের
চালকুমড়ো উদ্ভিদ লতা জাতীয়। চাল কুমড়ো শুধু ঘরের চালেই নয় মাচায় ও জমিতে চাষ করেও ভালো ফলন পাওয়া যায়। কাঁচা অবস্থায় গায়ে হালকা কাঁটা যুক্ত সবুজ রং, পরিপক্ব হওয়ার সাথে সাথে সবুজ রঙের ওপর চুনের মতো সাদা রং ধারণ করে। এই চুনের মতো সাদা রং জন্যই এটি দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। চালকুমড়ো ৮০ সেমি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। চালকুমড়ো ভালো ফলনের জন্য উঞ্চ, প্রচুর সূর্যালোক এবং নিম্ন আর্দ্রতা প্রয়োজন। চাষকালীন সময়ে উচ্চ তাপমাত্রা ও লম্বা দিন হলে পুরুষ ফুলের সংখ্যা বেড়ে যায় এবং স্ত্রী ফুলের সংখ্যা কমে যায় যার ফলে ফলন কমে যায়। অতি বৃষ্টির কারনে জমিতে জল বেশি জমে গেলে নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি জল সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ঐতিহ্যের তাঁত থেমে যাচ্ছে ময়নাগুড়িতে
Share your comments