উন্নত পদ্ধতিতে সিসল চাষের মাধ্যমে আদিবাসী চাষির অর্থনৈতিক উন্নয়ণ

কিছুকিছু আদিবাসী চাষিরা প্রথাগত ভাবে তাও খুবই কম জমিতে সিসল চাষ করেন এবং ফলন হয় গড়ে মাত্র ৩০০ কিলোগ্রাম/হেক্টর হিসাবে। এতে চাষির অর্থনৈতিক কোনো সুরাহা হয় না। তাই উন্নত বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে সিসল চাষ করতে হবে।

KJ Staff
KJ Staff
সিসল

কিছুকিছু আদিবাসী চাষিরা প্রথাগত ভাবে তাও খুবই কম জমিতে সিসল চাষ করেন এবং ফলন হয় গড়ে মাত্র ৩০০ কিলোগ্রাম/হেক্টর হিসাবে। এতে চাষির অর্থনৈতিক কোনো সুরাহা হয় না। তাই উন্নত বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে সিসল চাষ করতে হবে।

নীচু জমিতে প্রথাগত ফসল যেমন ধান ও অন্যান্য তন্ডুল ফসল এবং অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে লাইন করে জোড় দ্বিসারি (Double Row Planting) পদ্ধতিতে সিসলের চারা লাগানো, সুপারিশমতো জৈব ও অজৈব (ও অনুখাদ্য) সারের সুষম ব্যবহার, চারা লাগানোর প্রথম দুই বছর অন্তর্বর্তী ফসল হিসাবে অল্পদিনে তোলা যায় এমন ডালশস্যের চাষ ইত্যাদি ব্যবস্থাপনা করতে পারলেই সিসলের উৎপাদন প্রতি হেক্টরে ১৫০০ কিলোগ্রাম পাওয়া যাবে।

যদি কোনো অপেক্ষাকৃত সম্পন্ন চাষি ফোঁটা সেচ (ড্রিপ) পদ্ধতির ব্যবহার করতে পারেন তাহলে সিসলেব ফলন হেক্টরে ২৫০০ কিলোগ্রামের থেকেও বেশি হতে পারে যা অত্যন্ত লাভজনক বলে ধরে নেওয়া যায়। তবে হেক্টর প্রতি ১৫০০ কিলোগ্রাম ফলনেও যথেষ্ট লাভ হবে। একবার সিসল রোপন করলে ঐ জমিতে ৮-৯ বছর পর্যন্ত সিসল থাকবে ও ফলন দেবে। প্রতি বছরের গড় হিসাবে হেক্টর প্রতি ৪৭ হাজার টাকা লাভ একজন আদিবাসী চাষিভাই সহজেই পেতে পারেন (সারণি-৪)। এই মালভূমি অঞ্চলের কম উর্বর ঢালু জমি, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, উষ্ণ আবহাওয়া, ক্রমাগত ভূমিক্ষয় ইত্যাদি প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সিসলের উৎপাদন অবশ্যই লাভজনক হবে।

আরও পড়ুনঃ তরমুজ চাষ করা খুবই সহজ, শুধু শিখে নিন এই পদ্ধতি, লাভ হবে লাখে

কিন্তু এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র প্রচলিত ফসলের উপর নির্ভরশীল হলে চাষিদের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি রোধ করা যাবে না। উন্নত পদ্ধতিতে সিসল চাষের সঙ্গে সঙ্গে, সিসল চাষিরা এলাকা ভিত্তিক সিসল সমবায় তৈরী করতে পারেন, যার ফলে সিসল পাতা থেকে উন্নত যান্ত্রিক পদ্ধতির দ্বারা তন্ত্র নিষ্কাশনের সুযোগ গ্রহন, সিসল তন্তুর গাঁট তৈরী (বেইলিং) এবং এই সমবায়ের মাধ্যমে তন্তু একত্রিত করে উচ্চ দামে বিক্রির ব্যবস্থা করা যাবে।

সিসল চাষের জন্য অন্যান্য সামাজিক ও প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণজনিত লাভ

আদিবাসীরা সিসল চাষের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে সরাসরি লাভবান তো হবেনই, সেই সঙ্গে এই ফসলের চাষের ফলে অন্যান্য আনুষঙ্গিক লাভ ও পাওয়া যাবে। সিসল থেকে অদিবাসীদের আয়ের পথ মসৃণ হলে, বন সম্পদের উপর আদিবাসী জনগনের চাপ স্বভাবতই কমবে। সিসল তন্তু এবং বর্জ কাগজের মন্ড তৈরীতে বিশেষ উপযোগী।

আরও পড়ুনঃ অধিক ফলন পেতে রোপণ পদ্ধতিতে আমন ধানের চাষ করুন,শিখে নিন পদ্ধতি

তাই সিসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাগজের জন্য গাছ কাটার দরকার কমে আসবে এবং প্রত্যক্ষভাবেই বনাঞ্চল সংরক্ষণে সাহায্য হবে। সিসল শিকড়ের বিস্তৃত জালের মাধ্যমে মৃত্তিকা সংরক্ষণে সাহায্য করে এবং ভূমি ক্ষয় রোধ করে। সিসল চাষ ও সিসল তন্ত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প তৈরী হবে ফলে সরাসরি ভাবে কর্মসংস্থান বাড়বে।

 সিসল তন্ত্রর মূল্য সংযোজক বিভিন্ন ছোট ও মাঝারি শিল্প তৈরী হবে যারা সিসলের নান মাপের দড়ি, গৃহস্থালি ও শিল্পে ব্যবহৃত ব্রাশ, সাইকেলের চাকার ফুল, ঘর সাজানোর জিনিস, পাপোশ ইত্যাদি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে তৈরী করবেন ফলে গ্রামীণ আদিবাসী মহিলারা অর্থনৈতিক ভাবে বহুলাংশে স্বাধীন হতে পারবেন।

Published On: 23 December 2023, 04:53 PM English Summary: Economic development of tribal farmers through improved system of sisal cultivation

Like this article?

Hey! I am KJ Staff . Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters