বাজারে একের পর এক সবজির অগ্নিমূল্যে আমজনতার অবস্থা বেশ সংকটজনক। তবে এবার কি খাদ্যশস্যেও তার প্রভাব পড়তে চলেছে? প্রথমে অনাবৃষ্টি, পরে নিম্নচাপের বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে লাল স্বর্ণ, শতাব্দী, বিএন ২০, দেশি খাস-সহ বিভিন্ন প্রজাতির ধান চাষে এই বছর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে চাষীদের। পাশাপাশি শোষক পোকার আক্রমণে দেশি খাসধানের শিষের নিচে ব্লাইট বা শিষ ঝলসা জাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ফলে ক্ষতি হয়েছে বহু এলাকায়।

বুলবুলের ঝড়ের প্রভাবেও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বিষ্ণুপুর মহকুমার ধানচাষীরা। বাঁকুড়া জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মরশুমে জেলার তিনটি মহকুমায় সব মিলিয়ে প্রায় দু’লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। যা অন্য বছরের তুলনায় অনেকটাই কম। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের রাইপুর, রানিবাঁধ, সিমলাপাল, সারেঙ্গার পাশাপাশি খাতড়া, হীড়বাঁধ, ইন্দপুর ও তালডাংরা ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় কংসাবতী সেচখালের জল পৌঁছয়। কংসাবতী সেচখালের ছাড়া জলে সেচসেবিত এলাকার জমির ধান কিছুটা রক্ষা পেলেও অন্যত্র ক্ষতি স্পষ্টতই দৃশ্যমান।

বাঁকুড়ার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) সুশান্ত মহাপাত্র জানিয়েছেন, “জেলায় এবার ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার। কিন্তু অনাবৃষ্টির জেরে তার পরিমাণ এখন ২ লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টর। এছাড়া পুজোর আগে ও পরে নিম্নচাপের বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় বিষ্ণুপুর মহকুমার পাত্রসায়ের, ইন্দাস, জয়পুর, সোনামুখী, বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর ব্লকের বেশ কিছু মৌজায় দেশি খাস ধানে শোষক পোকার আক্রমণ ও ধসার উপদ্রব দেখা দিয়েছে। দেশি খাস ধান গাছে ব্লাইট বা ধসা জাতীয় রোগ হয়েছে। ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রয়োগ করার পরেও বিশেষ উন্নতি না হওয়ায় দেশি খাস ধানে ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।”
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
Share your comments