ভারতে ব্যাপক হারে ধান চাষ হয়। দেশের প্রধান ধান উৎপাদনকারী রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, বিহার, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং তামিলনাড়ু। অনেক সময় ধান কাটার পর পরবর্তী ফসল বপনের জন্য কৃষকদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু, একটু বুদ্ধি থাকলে কৃষকরা ধান চাষ থেকে প্রচুর মুনাফা অর্জন করতে পারে।
এই নিবন্ধে আমরা আপনাকে চাষের একটি মডেল সম্পর্কে বলব যা কৃষকদের সমৃদ্ধ করবে। প্রকৃতপক্ষে, চাষের এই মডেলকে মাছ-ধান চাষ বলা হয়। এই মডেল অবলম্বন করে কৃষকরা তাদের লাভ দ্বিগুণ করতে পারে। চীন, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন এবং থাইল্যান্ডে এই ধরনের চাষ খুবই জনপ্রিয়। একই সময়ে, চাষের এই মডেল ভারতেও গতি পাচ্ছে। ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড় এবং উত্তরপ্রদেশের মতো অনেক রাজ্যে কৃষকরা ধান ও মাছ চাষ থেকে ভালো আয় করছে।
আরও পড়ুনঃ ভুট্টা চাষের আগে এই বিপজ্জনক রোগ সম্পর্কে জেনে নিন, না হলে পুরো ফসলই নষ্ট হয়ে যেতে পারে
কিভাবে মাছ ধান চাষ করবেন
এই কৌশলে ধান ফসলের জন্য সঞ্চিত জলেও মাছ চাষ করা হয়। ধানের ক্ষেতে মাছের চারণ পাওয়া গেলেও মাছের বর্জ্য পদার্থ ধানের ফসলের জন্য জৈব সার হিসেবে কাজ করে। এতে ফসল ভালো হয় এবং মাছ চাষও হয়। এভাবে প্রতি মৌসুমে কৃষকরা হেক্টর প্রতি ১.৫ থেকে ১.৭ কেজি মাছের ফলন পেতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ কম বিনিয়োগের শীর্ষ ৫টি ব্যবসা, বাম্পার লাভবান হবেন!
মাছ-ধান চাষ কেন ভালো?
ধানক্ষেতে মাছ চাষের কারণে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা নগণ্য। ধানের ক্ষেতে মাছ ধানের পচা পাতা ও অন্যান্য আগাছা, পোকামাকড় খায় এতে শুধু ফসলের গুণগত মান বৃদ্ধি পায় না, ধানের উৎপাদনও বৃদ্ধি পায়। ধান কাটার পর ক্ষেতে জল ভরে মাছ চাষ করা যায়।
মাছ-ধান চাষের সুফল
-
মাটির স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
-
প্রতি ইউনিট এলাকা আয় বৃদ্ধি পায়।
-
উৎপাদন খরচ কম।
-
কম ইনপুট প্রয়োজন।
-
কৃষকদের আয়ের একাধিক উৎস তৈরি হয়।
-
পারিবারিক আয় সহায়তা পাওয়া যায়।
-
পারিবারিক শ্রমের পূর্ণ ও সঠিক ব্যবহার।
-
রাসায়নিক সারের খরচ কম।
-
কৃষকদের জন্য সুষম ও পুষ্টিকর।
-
কৃষকদের অবস্থা ও জীবন-জীবিকার উন্নতি।
মাছ-ধান চাষে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন
ধানের পাশাপাশি মাছ পালনের সময় খেয়াল রাখতে হবে জমির যেন সর্বোচ্চ জল ধারণ ক্ষমতা থাকে। মাছ চাষের জন্য মাঠে জলের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এতে কৃষকরা তাদের ক্ষেতের চারপাশে নেট বাউন্ডারি তৈরি করে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে চাষ করতে পারেন, যাতে ক্ষেতে জল জমে থাকে এবং মাছগুলো বাইরে যেতে না পারে। ধানের সাথে মাছ চাষ পদ্ধতিতে মাছকে চুরি ও পাখির হাত থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে মনে রাখতে হবে এই পদ্ধতিতে মাছের উৎপাদন নির্ভর করে চাষাবাদ, প্রজাতি ও এর ব্যবস্থাপনার ওপর কৃষিকাজ প্রান্তিক এবং ক্ষুদ্র পরিসরে এটি কৃষকদের অর্থনৈতিক উন্নতি ও অগ্রগতিতে বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে।
Share your comments