এখনকার দিনে সবজি বাজারে এমন কোন সবজি আপনি পাবেন না, যার মধ্যে কোনো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না। প্রতিটা সবজি, ফল বা খাদ্যশস্যতেই রাসায়নিক কীটনাশক, ও ইনজেকশনের প্রয়োগ হয়েই চলেছে। আর ভালো মানের ফলনের জন্য ভালো সার প্রয়োগও জরুরী।
বিভিন্ন ধরনের কৃষিজ ফসলে সারের অভাবে অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। যেসব সার ফসলের জন্য কম লাগে কিন্তু নির্ধারিত মাত্রায় ব্যবহার না করলে ফসলের জন্য সমস্যার সৃষ্টি হয় সেসব সারের মধ্যে বোরন অন্যতম।
বোরনের অভাবে গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। ফুল সংখ্যায় কম আসে এবং ফুল ঝরা বৃদ্ধি পায়। ফল আকারে ছোট হয় ও ফেটে যায়। ফল এবড়ো খেবড়ো বা বিকৃত হয়, আভ্যন্তরিন দানা পুস্ট হয় না, অপরিপক্ক অবস্থায় ফল ঝরে যায় ।
বোরন সারের কাজ : গাছের কোষের দেয়াল শক্ত করে, শিকড় ও ডগার বৃদ্ধি হয়, ফল ফেটে যাওয়া রোধ করে, নিষিক্তকরণ ও সীম জাতীয় দানাদার ফলের দানার গঠনে সাহায্য করে, ফলন বৃদ্ধি করে।
প্রয়োগ মাত্রা বা পরিমান :
ফলগাছে ফুল আসার আগে প্রয়োগ করলে ভাল রেজাল্ট পাওয়া যাবে, ছোট টবে আধা চা চামচ বড় টবে এক চা চামচ আর হাফড্রামে এক টেবিল চামচ। টবের উপরের মাটি এক/দেড় ইঞ্চি তুলে টবের ভিতরের মাটির সাথে ভাল করে মিশিয়ে পরে ঐ তোলা মাটি গুড়া করে সুন্দর করে ঢেকে দিতে হবে।
ফল বৃদ্ধির সময় জিংক প্রতি লিটার জলে ১ গ্রাম, বোরন (বোরাক্স/ বরিক অ্যাসিড) প্রতি লিটারে ২ গ্রাম একত্রে ১ লিটার জলে মিশিয়ে ২০-২২ দিন পর প্রথমবার এবং ৪০-৪৫ দিন পর ২য় বার স্প্রে করলে ফল ঝরে পড়া ও ফাটা উভয় সমস্যা কমে যায়।
যেসব গাছে বারোমাস ফল থাকে ২ মাস পর পর, একবার ফল দেয় ঐ গাছে বছরে একবার, দুইবার ফল দেয় ফুল আসার এক মাস আগে একবার বোরন প্রয়োগ করলে ভাল রেজাল্ট পাওয়া যাবে।
বোরনের অভাব পূরণে যদি সময়মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তাহলে ফসলের ভালো ফলন পাওয়া যায়। বোরন পরিমাণে যেমন খুব বেশি লাগে না, তেমনি বেশি প্রয়োগ করলেও উল্টো ফল দেয় অর্থাৎ বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। ফলন কমে যায়। তাই সঠিক মাত্রায় ও সঠিক সময়ে বোরন প্রয়োগ করা জরুরি নয়তো অতিরিক্ত প্রয়োগের ফলে ফলন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
আরও পড়ুন - Monsoon Crop Care: কিভাবে বর্ষায় ফসলের যত্ন নেবেন?
জমির অনুখাদ্য দেখে একর প্রতি ১০ কেজি জিঙ্ক সালফেট ৪ কেজি বোরক্স ও ৪০০ গ্রাম অ্যামোনিয়াম মলিবডেট শেষ চাষে মিশিয়ে দিন। তবে বেশীরভাগ চাষিরা মাটি পরীক্ষা করেন না। তাই অনুখাদ্য বেশী-কম হওয়ায় সমস্যা থেকে বাঁচতে প্রথম ও দ্বিতীয় চাপান প্রয়োগের সময় জলে গোলা গ্রেড – ২ অনু খাদ্য মিশ্রন ২-৩ গ্রাম / লিটার জলে গুলে স্প্রে করে দিন।
আরও পড়ুন - Citrus Crop - লেবু গোত্রীয় ফসলে কৃমি জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ-এর সহজ উপায়
Share your comments