কলা একটি অর্থকারি ফসল । আজকে আমরা জানব কলা চাষ করার পদ্ধতি সম্পর্কে । কলার বৈজ্ঞানিক নাম মুসা একুমিনাটা। কলার চারা বছরে ৩ মৌসুমে অর্থাৎ আশ্বিন-কার্তিক, মাঘ-ফাল্গুন এবং চৈত্র-বৈশাখ মাসে রোপণ করা যায়। তাহলে আসুন জেনে নেই কলা চাষের নিয়ম-
মাটি
প্রায় সব ধরনের মাটিতে কলার চাষ করা যায়। তবে পর্যাপ্ত পরিমানে রস আছে এমন মাটিতে কলা চাষ করা উত্তম। এছাড়া সুনিষ্কাশিত দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিও নির্বাচন করা যেতে পারে। কলা চাষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে জল,আলো এবং উঁচু জমির দরকার । উর্বর দো-আঁশ মাটি কলা চাষের জন্য উত্তম।
চারা রোপণ
বছরের যে কোন সময়েই কলার চারা রোপণ করা যায়। তবে অতিরিক্ত বর্ষা ও অতিরিক্ত শীতের সময় চারা না লাগানোই উত্তম। শুকনো মৌসুমে গাছ রোপণ করলে ১৫ থেকে ২০ দিন পরপর সেচ দিতে হবে। কলাগাছে প্রচুর জলের প্রয়োজন হয় । তবে অতিরিক্ত জল সহ্য করতে পারে না। বর্ষার শেষে আশ্বিন-কার্তিক মাস চারা রোপণের সর্বোত্তম সময়।
সার প্রয়োগ
৭/৮ বার চাষ দিয়ে জমি ভালোভাবে তৈরি করে নিতে হয়। অতঃপর জৈবসার (যেমন গোবর, কচুরিপানা ইত্যাদি) হেক্টরপ্রতি ১২ টন হিসেবে প্রয়োগ করতে হবে। রোপণের দেড়-দুই মাস পর ২৫% ইউরিয়া, ৫০% এমপি ও বাকি টিএসপি জমিতে ছিটিয়ে ভালোভাবে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
আরও পড়ুুনঃ জানুন বিভিন্ন জাতের কলার বৈশিষ্ট্য ও আধুনিক পদ্ধতিতে কলা চাষের কৌশল
সেচ ও নিকাশ
চারা রোপণের সময় মাটিতে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা না থাকলে তখনই সেচ দেওয়া উচিত। শুষ্ক মৌসুমে ১০-১৫ দিন পর পর জমিতে সেচ দেয়া দরকার। আবার বর্ষার সময় বাগানে যাতে জল জমতে না পারে, তার জন্য নালা করে অতিরিক্ত জল বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়।
কলা গাছের পোকামাকড়
সাধারণত কলাতে বিটল পোকা, পানামা রোগ, বানচিটপ ভাইরাস ও সিগাটোকা রোগ আক্রমণ করে থাকে। পোকার আক্রমণে প্রথমে বয়স্ক পাতার কিনারা হলুদ হয়ে যায় এবং পরে কচি পাতাও হলুদ রং ধারণ করে।
আরও পড়ুনঃ সহজ উপায়ে বাড়িতে সবেদা চাষের উপায় জেনে নিন
ফসল সংগ্রহ
রোপণের পর ১১ থেকে ১৫ মাসের মধ্যেই সাধারণত সব জাতের কলা পরিপক্ব হয়ে ওঠে। গাছের কুঁড়ি থেকে পরিপক্ব কলা কেটে সাবধানে নামাতে হবে। কলার থোড় সুন্দরভাবে পরিষ্কার করে চটের বস্তা বিছিয়ে এর ওপরে রেখে দিতে হবে। থোড় কেটে নেওয়ার পর গাছের মাঝ বরাবর কেটে ফেলতে হবে। সেখান থেকে আবার নতুন চারা গজাবে।
Share your comments