ভুট্টা বাঙালিদের কাছে অন্যতম এক পছন্দের খাবার। ভুট্টার মোচা পুড়িয়ে খেতে ভোজনরসিক বাঙালিরা খুবই পছন্দ করে। ভুট্টার খই বা পপকর্ন খায়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। শুনলে অবাক হতে হয়, ভুট্টা থেকে রুটি, নাড়ু, খিচুড়ি সহ বিভিন্ন মুখরোচক পুষ্টিকর খাবার বানানো যায়। ভুট্টার স্বাদ নিয়ে কোনও কথাই হবে না। ভুট্টাতে রয়েছে ভিটামিন-এ যা চোখের দৃষ্টি ভালো রাখতে সাহায্য করে। রক্তাল্পতা দূর করতেও ভুট্টার কোন জুড়ি নেই। নিয়মিত এই শস্য দানা খেলে ত্বক ভালো থাকে, কারণ এতে ভিটামিন-সি-এর মতন পুষ্টিগুণও রয়েছে। কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবারে ভরা এই ফসল পেট পরিষ্কার রাখে সাথে শরীরে বলও জোগায়। ভুট্টা ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমায়।
অসাধারণ স্বাদের এই খাবারটির ফলন পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর পরিমাণে হয়। শুধু মানুষই নয়, ভুট্টা গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খাবার হিসাবেও ব্যবহৃত হয়। জ্বালানির ব্যবহারেও ভুট্টা গাছের ব্যবহার হয়। ভুট্টার চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকদের এই চাষের উপর ভালোবাসা ও আগ্রহও জন্মাচ্ছে। বর্তমানে ভুট্টার চাষ পশ্চিমবঙ্গে বহুল পরিমাণে হচ্ছে।
উন্নত জাতের ভুট্টা (Maize Variety)
ভুট্টা চাষের জন্য চাষিভাইয়েরা কাঞ্চন, নবজোট, নবীন, শ্বেতা, গৌরব প্রভৃতি জাতের বীজ মাটিতে পুঁততে পারেন। হাইব্রিড জাতের মধ্যে এইচকিউপিএম - ১৫, ডেকান- ১১৫ এমএমএইচ - ১৩৩, প্রো- ৪২১২ প্রভৃতি ভুট্টার জাত জনপ্রিয়। সবুজ ভুট্টার জন্য মাধুরী ও প্রিয়া, বেবি কর্নের জন্য প্রকাশ ও আজাদ কমল জাত চাষি ভাইদের কাছে ইতিমধ্যেই প্রসিদ্ধি লাভ করেছে।
বীজ শোধন পদ্ধতি (Seed treatment method)
ভুট্টা বীজ বপনের আগে থাইরাম বা অ্যাগ্রোসিন জিএন -এর মতো ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে নেওয়া উচিত। প্রতি কেজি অনুযায়ী বীজের জন্য ৩-৫ গ্রাম মিশিয়ে বীজ শোধন করে নেওয়া ভালো।
জমি প্রস্তুতির সার- (Fertilizer)
জমিতে ৫ থেকে ৮ টন ভালো পচা গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে। এর ফলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুন: Watermelon farming in dry land: রুখা-শুখা জমিতে তরমুজের চাষে বিপুল আয়
সেচকার্য- (Irrigation)
ভুট্টা চাষে কম করে ৪০০ থেকে ৬০০ মিমি জলের দরকার পড়ে। ফুল আসার সময় এবং শস্য বেড়ে ওঠার সময়, বেশি পরিমাণে সেচ দেওয়া যাবে না। ভুট্টা ক্ষেতে যাতে নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক থাকে তার খেয়াল রাখতে হবে।
নিড়ানি -
ভুট্টার বীজ বপনের ১৫ থেকে ২০ দিন পরে নিড়ানি দিয়ে নিতে হবে। অঙ্কুরোদগমের আগে একর প্রতি ৬০০ থেকে ৮০০ গ্রাম হারে ইট্রাজিন স্প্রে করে নেওয়া দরকার। এই সব কাজ মিটলে ২০ থেকে ৩০ দিন বাদে ক্ষেতে লাঙ্গল দিয়ে নিলে ভালো।
আরও পড়ুন: Cultivation of Black Rice: জৈব উপায়ে ব্ল্যাক রাইসের চাষ
Share your comments