বর্তমান যুগে ব্যবসায়ীক সিঙ্গাপুরী কলা চাষে টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে তৈরি গ্র্যান্ড-নাইন বা G-9 কলার জাত চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে, তবে এই কলা একটু বেশী খাদ্য উৎপাদন চায়, তাই পুরো রাসায়নিক সার ব্যতিরেকে এই জাতের পুরো ফলন প্রকাশ পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু দেশি মর্তমান, কাঁঠালী ও অন্যন্য সিঙ্গাপুরীর সঙ্গে কাঁচকলায় জৈব প্রযুক্তিতে ভালই ফলনের সম্ভবনা।
টিস্যু কালচার কলা কী ?
প্রথাগত তেউড় বাদে সুস্থ, নীরোগ, উন্নত গুণমানের, পরীক্ষিত ‘মা’ গাছের অংশ নিয়ে, অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরিতে, কৃত্রিম উপায়ে টেস্টটিউবের মধ্যে বাড়িয়ে, এক সঙ্গে হাজার হাজার উন্নত কলার চারা, পরিবেশে খাপ খাইয়ে, ছোট পলিপ্যাকে উৎপাদনই হল টিস্যু কালচার কলা। বর্তমানে জায়ান্ট গভর্নর বা সিঙ্গাপুরির মত টিস্যু কালচার কলার উন্নত জাত গ্র্যান্ডনাইন বহুল জনপ্রিয় ও অধিক বড় কাঁদিতে, অতি উন্নত কলার সঙ্গে, বিঘাতে লাখ টাকারও বেশী লাভ দিতে সক্ষম।
প্রথাগত তেউড়ের তুলনায় টিস্যু কালচার কলার সুবিধা – প্রথাগত তেউড়ের তুলনায় টিস্যু কালচার কলার চাষে কিছু সুবিধা পরিলক্ষিত হয়।
সেগুলি নিম্নে পর্যালোচনা করা হল –
- এই পদ্ধতিতে এক সাথে অনেক চারা তৈরি করা সম্ভবপর হয়।
- চারা সম্পূর্ণ রোগমুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
- প্রথাগত তেউড়ের তুলনায় তুলনামূলক তাড়াতাড়ি, ৮ থেকে ৯ মাসের মধ্যে ফল আসে।
- প্রথাগত সিঙ্গাপুরির তুলনায় ফলন দেড় থেকে দুই গুণ বেশী হয়, কাঁদির গড় ওজন হয় প্রায় ৫০-৫৫ কেজি।
- এই পদ্ধতির আর একটি সুবিধা হল, এক সাথে ফল আসে ও একেবারে কাঁদি কাটা যায়।
- একটি কাঁদিতে প্রায় ২২০ থেকে ২৪০ টি কলা থাকে।
- কলা চাষের জমি আগে চুন দিয়ে শোধন করে মাসখানেকে গভীর চাষ দিয়ে ২০-২৫ কুইন্টাল গোবরসার ১৫ কুইন্টাল কেঁচোসারের সাথে ২০০ কেজি নিমখোল (না পেলে নিমদানা ২ কেজি)+ ২ কেজি হিউমিক আসিড + ২ কেজি জৈব উৎসেচক ও ৫৩ কেজি ছাই মিশিয়ে দিতে হবে।
- গাছ বসানোর সময় ২০ কেজি গোবর সার/১০ কেজি কেঁচোসার ট্টাইকোডার্মা ও সিউডোমোনাস ৫০ গ্রাম করে প্রতিটি মিশিয়ে সঙ্গে ২৫ গ্রাম হিউমিক অ্যাসিড + ২৫ গ্রাম নিমদানা + ২৫ গ্রাম জৈব উৎসেক + পরিমাণ মত জীবণুসার দিয়ে চারা রোপন।
সার ব্যবস্থাপনা (Fertilizer application) -
প্রথম মাসে- ১ কেজি নিমখোলের সাথে ২৫ গ্রাম জৈব উৎসেক, ২৫ গ্রাম গ্রোথ এনহান্সার জৈব দানা প্রতি মাসে বাড়িয়ে অষ্টম মাসে ২ কেজি নিমখোলের সাথে + ৫০ গ্রাম জৈব উৎসেচক + ৫০ গ্রাম জৈব দানা।
- কলার ছড়া পড়লে দেদো পোকার আক্রমণ রোধে নিমবীজ নির্যাস বা নিমজাত কৃষি বিষ ২/৩ বার ৭ দিন ব্যবধানে স্প্রে ও পারলে পূর্ণতায় কাঁদি ঢাকা দিতে হবে।
- গাছের মোচা নামার আগে অবধি ভিতরে শুঁটিজাতীয় সবজি বা ডালশস্য চাষ। খুব বেশী
তেউড় না রেখে ১/২ টি সঠিক তেউড় পরের ফসলের জন্য বেছে রাখতে হবে।
Share your comments