কৃষিজাগরন ডেস্কঃ বাংলায় গ্রীষ্ম প্রায় এসে গেছে। যার জেরে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। হঠাৎ করে তাপমাত্রার এই বৃদ্ধি ধান চাষে কৃষকদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় রবি ধানে রোগবালাইয়ের সম্ভাবনা বেড়েছে। অনেক এলাকায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান ফসলে মারাত্মক রোগবালাই দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি, ওড়িশার অনেক জেলায় ধানে কান্ডের পোকার প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে, যার কারণে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এমতাবস্থায় ফসল বিপর্যয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকরা। অন্যদিকে, ওড়িশা সরকার কীটনাশক স্প্রে করার জন্য কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে কৃষকদের কিছুটা স্বস্তি মিলবে।
এই পোকার প্রাদুর্ভাব শুধু ওড়িশাতেই নয়, অন্যান্য জায়গায়ও হতে পারে। এমতাবস্থায় যেসব কৃষক রবি মৌসুমে ধান বপন করেছেন তাদের অবশ্যই পোকামাকড় ও রোগবালাই থেকে ফসল রক্ষার ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত করা উচিত, যাতে সময়মতো ফসলকে পোকা থেকে রক্ষা করা যায়।
আরও পড়ুনঃ বেগুন চাষের আগে জানতে হবে সার প্রয়োগ পদ্ধতি,নাহলে বাড়তে পারে ক্ষতির আশঙ্কা
স্টেম বোরার রোগ কি?
কান্ড ছিদ্রকারী পোকা ধানের শীষের মতো সাদা রঙের পোকা। এর মুখ কালো বা বাদামী। উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এ পোকার প্রকোপ বেশি হয়। কান্ড ছিদ্রকারী পোকা ভিতর থেকে কান্ড খেয়ে ফেলে যার কারণে কান্ড শুকিয়ে যেতে শুরু করে। এর পরে কান্ড হলুদ হয়ে যায়। কিছু দিন পরে গাছটি লাল হয়ে যায় এবং তারপর সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়। এতে ধানের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং উৎপাদনও হয় খুবই কম।
আরও পড়ুনঃ অধিক ফলন পেতে রোপণ পদ্ধতিতে আমন ধানের চাষ করুন,শিখে নিন পদ্ধতি
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সময়মত সেচ: তাপমাত্রা থেকে রক্ষা করতে ধানের সঠিক সেচ গুরুত্বপূর্ণ
১।পুষ্টির পুনঃপূরণ: পুষ্টির পূর্ণতা নিশ্চিত করতে সঠিক পরিমাণে সার ব্যবহার করুন।
২।কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা: ধানে পোকামাকড় এড়াতে সময়ে সময়ে কীটনাশক ব্যবহার করুন।
বীজ বপনের পর এই কাজটি করুন
১। রবি ধান নভেম্বর মাসে এবং স্বাভাবিক ধান জুলাই মাসের প্রথম পাক্ষিক বপন করতে হবে।
২। বীজ বপনের ১৫ দিন পর, নার্সারিতে প্রতি ১০০ বর্গমিটারে ১ কেজি হারে অ্যাগ্রোনিল-জিআর ফিপ্রোনিল ০.৩% জিআর উপাদানের সাথে বালিতে মিশিয়ে দিতে হবে।
৩। ফসলে নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সার ব্যবহার করতে হবে।
৪। চারা রোপণের আগে গাছের উপরের অংশ কেটে রোপন করতে হবে।
৫। এই পোকার প্রাপ্তবয়স্ক মথকে আকৃষ্ট করতে সুগন্ধি ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে।
৬। রোপনের পর ফসলের পর্যায় অনুযায়ী আমেজ-এক্স প্রতি ৮০ গ্রাম বা ফেম প্রতি ৬০ মিলি বা কোরাজান প্রতি ৬০ মিলি, তাকুমি প্রতি ১০০ গ্রাম প্রতি একর স্প্রে করতে হবে।
৭। তাপ ও পানির চাপের বিরূপ প্রভাব কমাতে জমি অনুযায়ী ফসলে হালকা সেচ দিতে হবে।
৮। বাতাসের গতির কথা মাথায় রেখে সেচের জন্য সন্ধ্যার সময়কে প্রাধান্য দিন।
Share your comments