উৎপল রায়, জলপাইগুড়ি: ময়নাগুড়ি ব্লকে মাশরুম চাষ ও ভালো উৎপাদন করে চাষিদের দিশা দেখাচ্ছেন ঝাঝাঙ্গির চাষি সুনিল চন্দ্র রায়। এই চাষের মাধ্যমে কয়েক বছরে যথেষ্ট লাভবানও হয়েছেন তিনি। তাই মাশরুম চাষ প্রধান চাষে পরিণত হয়েছে ঝাঝাঙ্গির চাষি সুনিলের।
সুনিল বাবু জানান, কৃষিকাজ তার একমাত্র জীবীকা। অন্যান্য চাষের পাশাপাশি বিগত ১০ বছর ধরে তিনি মাশরুম চাষ করছেন। এই চাষে এখনও অবধি তাকে ক্ষতির মুখ দেখতে হয়নি। তাই মাশরুম চাষ এখন তার অন্যান্য চাষের তুলনায় প্রধান চাষে পরিণত হয়েছে। এই ত্রৈমাসিক চাষের মাধ্যমে প্রতিবছর তিনি ৩-৪ লক্ষ টাকা ঘরে তুলেন বলে দাবি সুনিল বাবুর। এ বছরও তিনি চারটি ফার্মে প্রায় কুড়ি হাজার সিলিন্ডার তৈরি করে মাশরুম চাষ করেছেন। প্রতিটি সিলিন্ডার তৈরি করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ টাকা।
প্রতিটা সিলিন্ডার থেকে প্রায় এক কেজি মাশরুম উৎপাদন হয়। যার বিক্রয় মূল্য ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। সুনীল বাবুর মতে মোটা পুঁজি ছাড়াও এই চাষের ক্ষেত্রে কিছু ঝুঁকি রয়েছে। অনেক সময় খড় পচে গিয়ে ধ্বসা জাতীয় রোগে সিলিন্ডার নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া উৎপাদিত ফসল বিক্রির জন্য কাছাকাছি উপযুক্ত বাজার পাওয়া যায় না। উৎপাদিত মাশরুম বিক্রির জন্য উপযুক্ত বাজার পেতে ময়নাগুড়ি থেকে শতাধিক কিলোমিটার দূরে পাহাড়ি বাজারে যেতে হয়। সুনিল বাবু জানান , সরকারিভাবে মূলধন ও উপযুক্ত বাজারের ব্যবস্থা করা হলে ময়নাগুড়ির চাষিরা মাশরুম চাষ করে যথেষ্ট লাভবান হতে পারবেন।
ময়নাগুড়ি কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে , ময়নাগুড়িতে এখনও মাশরুম চাষের প্রসার তেমন ঘটেনি। ব্লকের মুষ্টিমেয় কিছু চাষি তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই চাষ করে থাকেন। তবে এই চাষের জন্য যদি কোন চাষী সরকারি সহযোগিতার আবেদন করেন বিষয়টি দেখবেন ময়নাগুড়ি কৃষি দপ্তর।
সেপ্টেম্বরের দিকে মাশরুম চাষ শুরু হয়। চাষ শুরুর প্রায় ২৫ দিন পর থেকে মাশরুম উৎপাদন শুরু হয় ও ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে। আবদ্ধ ঘরের মধ্যে মাশরুম করতে হয়। খড়ের টুকরো প্লাস্টিকে মুড়িয়ে বাইন্ডিং করে তৈরি করা হয় সিলিন্ডার। সিলিন্ডারের ভিতরে মাশরুমের বীজ ও মেডিসিন থাকে। সিলিন্ডারগুলিকে দড়ির সাহায্যে ঘরের মধ্যে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এরপর নিয়মিত মটরের সাহায্যে জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হয় সিলিন্ডারগুলিকে। চাষ শুরুর প্রায় ২৫ দিন পর থেকে নিয়মিতভাবে মাশরুম তোলা শুরু হয়।
Share your comments