ভাতের বিকল্প হিসেবে শর্করার চাহিদা পূরণে মিষ্টি আলুর গুরুত্ব অপরিসীম। মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সিসহ অন্যান্য খনিজ পদার্থ। তবে, এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন। বাংলাদেশের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট ২৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয় মিষ্টি আলু। যার গড় ফলন হেক্টর প্রতি ১০ টন। আর একজন মানুষ বছরে গড়ে মিষ্টি আলু খায় এক কেজি ৭৫ গ্রাম।
তবে আশার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশে মিষ্টি আলুর গড় উৎপাদন বাড়াতে এবং কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদ লাভজনক করতে তিনটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
বাংলাদেশের সংবাদপত্র অনুযায়ী,ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক আরিফ হাসান খান রবিন এবং সহযোগী অধ্যাপক ড. জোবেদাতুন নাহারের নেতৃত্বে দুই বছরের গবেষণায় মিলেছে বাউ মিষ্টি আলু-৪, বাউ মিষ্টি আলু-৫ এবং বাউ মিষ্টি আলু-৬ নামে তিনটি জাত।
সুত্রের খবর ,নতুন উদ্ভাবিত তিনটি জাত উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলবে বলে প্রত্যাশা গবেষণা সংশ্লিষ্টদের। তারা জানান, এই জাতগুলোর চারা বর্তমানে বাকৃবি ক্যম্পাসে এবং কিশোরগঞ্জে উৎপাদন করা হচ্ছে। এ জাতের ফলন প্রচলিত গড় ফলনের চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি। এর মধ্যে বাউ মিষ্টি আলু-৫ প্রচলিত শীত মৌসুম ছাড়াও বছরের অন্য সময়েও চাষের উপযোগী আর বাউ-৬ জাতটি আগাম জাতের।
আরও পড়ুনঃ ১লা জুলাই থেকে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে চলেছে কেন্দ্র
বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জোবেদাতুন নাহার বলেন, প্রচলিত যেকোনো মিষ্টি আলুর চেয়ে নতুন এই জাতটিতে রয়েছে অধিক পুষ্টিমান। দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে আবাদি জমি ছাড়াও সারাবছর সবজি হিসেবে ছাদ বাগানে, গ্রামাঞ্চলে বাড়ির আশেপাশে, পুকুর পাড়ে বা যেকোনো স্থানে স্বল্প পরিসরে চাষ করা সম্ভব। ডাল কাটিংয়ের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করায় বীজ সংগ্রহ বা ক্রয়ে তেমন অর্থ ব্যয় না হওয়ার কারণে অল্প খরচে এই ফসল চাষ করে কৃষকরা অত্যন্ত লাভবান হতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ ভুয়া লিংকে ক্লিক করার পরই অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে গেল অভিনেতার
অধ্যাপক ড. আরিফ হাসান খান রবিন বাংলাদেশের এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি এবং দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা মাথায় রেখেই এই জাতগুলো উদ্ভাবন করা হয়েছে। এটি প্রচলিত জাতের তুলনায় স্বল্প জীবনকাল এবং সারাবছর চাষযোগ্য হওয়ায় লাভজনক এই মিষ্টি আলু চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে বলে আমি মনে করি। আগামী সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে মাঠ দিবসের মাধ্যমে এসব জাতের চারা কৃষকদের মাঝে আমরা বিতরণ করব।
Share your comments