মাছ চাষ করলে ঠাণ্ডা মৌসুমে মাছের বিশেষ যত্ন নিতে হয়। বিশেষ করে মাছের বাচ্চাদের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন।এ মৌসুমে সঠিক পরিচর্যা না হলে কৃষকদের ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে। কারণ বিহারের চাপড়া জেলায় সঠিক পরিচর্যার অভাবে মাছ চাষিরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টায় কৃষকের মজুদকৃত ৭০ হাজার মাছের পোনা মারা গেছে।মাছের বাচ্চা গুলির ওজন ৩০ থেকে ৫০ গ্রাম পর্যন্ত হবে।মাছের বাচ্চা মারা যাওয়ায় মাছ চাষীদের প্রায় ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ঘটনাটি ছাপড়া জেলার শীতলপুরের। এখানকার কৃষক বিশ্বেবর দয়াল মাছ চাষ করেন।তার দুটি বায়োফ্লক পুকুর রয়েছে।এই বায়োফ্লক পুকুরে তিনি দেড় লাখ পাঙ্গাস মাছের পোনা মজুদ করেছিলেন। এর মধ্যে তিনি ৮০ হাজার পোনা বিক্রি করেছিলেন।
দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে মাছের পোনা মারা যায়
মঙ্গলবার ১৮ জানুয়ারি এলাকায় প্রবল বৃষ্টি হয়। এতে বিশ্বেবর দয়ালের বায়োফ্লকের তাঁবু ভেঙে পড়ে। মাছের পোনা সেই বায়োফ্লোকে মজুদ করা হয়েছিল। প্রবল বৃষ্টির কারণে সেখানে তাপমাত্রা উঠে যায় ১০ ডিগ্রিতে।কিন্তু তাঁবু ভেঙ্গে যাওয়ায় তিনি তড়িঘড়ি করে মাছের পোনা সেখান থেকে অন্য বায়োফ্লোকে সরিয়ে নেন।মাছের পোনা স্থানান্তর করার আগে তিনি জলের মাপকাঠি পরীক্ষা করেনি। বেসিক ওয়াটার টেস্ট করিনি।মাছের পোনা অন্য পুকুরে স্থানান্তরিত হলে জলে অ্যামোনিয়ার মাত্রা বেড়ে যায়। যার কারণে দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে সব মাছের পোনা মারা যায়।
মাছের বাচ্চাদের কোন রোগ ছিল না
তবে মাছের পোনা অন্য জলে স্থানান্তর করা হলে তখন একেবারেই ভালো ছিল। মাছের পোনার কোনো প্রকার রোগ ছিল না। তারা যে জলে বাস করত সেগুলি তাদের সাথে অভিযোজিত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই প্রচণ্ড ঠান্ডায় তাদের স্থানান্তর করা হয়। এর আগে ওই জলের তাপমাত্রা মাপা হয়নি ।এ কারণে মাছের পোনাগুলি মারা যায়। তাই শীতকালে মাছের বিশেষ যত্ন নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ছাগল পালন: লাভের দিশা দেখাচ্ছে ছাগল প্রতিপালন, পাবেন সরকারি ঋণও
শীতে মাছের যত্ন নিন এভাবে
শীতকালে বৃষ্টির কারণে দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায়। এ অবস্থায় মাছ অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই এই মৌসুমে একটানা জল বদলাতে হয়। জলের পরামিতি স্বাভাবিক রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যাতে সবকিছু স্থিতিশীল থাকে এবং মাছের অসুবিধা না হয়। খোলা জলাশয়ে সময়ে সময়ে চুন ও লবণ ব্যবহার করতে হবে।জলের পিএইচও পরীক্ষা করা উচিত।জলের pH ৭.৬ থেকে ৮.৬ এর মধ্যে হওয়া উচিত।
আরও পড়ুনঃ শীতের মরশুমে হাঁস-মুরগি, মাছের যত্ন নেবেন কিভাবে? কি বলছে কৃষি বিশেষজ্ঞ? দেখে নিন
মাছে চাপের লক্ষণ
জলের মাপকাঠি ঠিক না থাকলে মাছ ওপর চাপ পড়ে। মানসিক চাপের লক্ষণ হল সে অলস হয়ে পড়ে এবং এক কোণে চলে যায়।তাদের স্বাভাবিক আচরণ দেখা যায় না। পাঙ্গাস মাছ সব সময় উপর থেকে নিচ পর্যন্ত খেলে তা স্বাভাবিক। তবে ঠান্ডা আবহাওয়ায় এটি কিছুটা অলস হয়ে যায়। খাবারও কম খায়।
Share your comments