বর্তমানে কৃষি বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে ছন্দ মিলিয়ে উন্নতমানের মৎসচাষ ব্য়বসায়ীদের সমৃদ্ধ করে চলেছে । রই,কাতলা,শিঙি,মাগুর প্রভৃতির পাশাপাশি রঙিন মাছের চাষ ভারতবর্ষ তথা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে । আন্তর্জাতিক বাজারে রঙিন মাছের চাহিদা বিপুল।পাশাপাশি কম মূলধন বিনিয়োগে খরে বসেই সহজ পদ্ধতিতে মাছের চাষ শুরু করা সম্ভব। সমীক্ষা অনুযায়ী,যদিও দেখা যায় যে মাছ উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় এবং চিংড়ির রপ্তানীতে ভারতের স্থান প্রথম হলেও,রঙিন মাছের উৎপাদন ও রপ্তানীর ক্ষেত্রে আমাদের কোনো স্থান নেই। সম্পদ এবং সম্ভাবনা থাকার পরেও রঙিন মাছের ব্য়বসায়ীরা বারবার পিছিয়ে পড়ছেন। সিঙ্গাপুরের মতো বড় শহরের ব্য়বসায়ীরা আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রঙিন মাছের চারা কিনে বিপুল লাভে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করে থাকে । রঙিন মাছের ব্বসায় সবচেয়ে বড় সুবিধা হল,বড় পুকুর বা জলাশয় না থাকলেও বাড়ির ছাদ ও উঠোনে ছোটো চারি বা ট্য়াঙ্ক প্রতিস্থাপন করে তাতে মাছের চাষ করা সম্ভব। তাই গৃহবধূ মহিলাদের মধ্য়েও অনেক এগিয়ে আসছেন সাংসারিক গৃহকর্মের পাশাপাশি কিছু সময় ব্য়ায়ে রঙিন মাছ প্রতি পালনের মাধ্য়মে জীবনও জীবিকাকে উন্নততর বারবার লক্ষ্য় নিয়ে ।
২০০-র বেশি সংখ্য়ক প্রজাতীর রঙিন মাছের প্রজনন বারানো হয় ভারতের বিভিন্ন জায়গায়। শুধুমাত্র বিদেশী প্রজাতীই নয়,সৌন্দর্য্য়ের নিরিখে আমাদের দেশীমাছগুলিও অতুলনীয়। গ্রামবাংলার জনপ্রিয় পুঁটি ও খোলসা মাছের বিভিন্ন প্রজাতী অ্য়াকোরিয়াম মাছ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। নিম্নে কিছু দেশী রিঙিন মাছের সম্পর্কে ধারনা দেওয়া হল।
চোপড়া/ বড় খলিসা
ভারতবর্ষসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পুকুর, নদীনালা ,খাল-বিল ও ধানক্ষেতে এদের দেখা যায়। সুস্বাদু মাছ হিসাবে খাদ্য় তালিকাকেই শুধু এরা সমৃদ্ধ করেনি,পাশাপাশি অপরুপ রঙের ছটায় এরা অ্য়াকোরিয়ামের সৌন্দর্য্য় বৃদ্ধি করেছে । স্বভাবগত ভাবে এরা শান্ত প্রকৃতির মাছ। এদের আয়ু গড়ে চার বছর পর্যন্ত হয়। একবছর বয়সের থেকেই এরা প্রজননে সক্ষম হয়। একটি পূর্ণাঙ্গ মাছ পুরুষ হলে ১০ সেমি ও স্ত্রী মাছ ৮ সেমি হতে পারে। এদের খাদ্য় তালিকায় আমিষ ও নিরামিশ উভয় প্রকারের উপাদানই গ্রহনযোগ্য় ।
আরও পড়ুনঃ এই গরমে মুরগির খামারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে রইল কয়েকটি টিপস্
নুলাবাইলা
ভ্রমরের মতো সুন্দর সোনালী শরীরে কালো দাগের মিশ্রনে এরা অ্য়াকোরিয়ামের শোভাকে দ্বিগুনি বৃদ্ধি করতে সক্ষম। জন্মগতভাবে এরা এশিয়া মহাদেশের কাসিন্দা। স্বাদুজলে ও নোনাজল উভয় জায়গায়েতেই এদের দেখা মেলে। তবে ইষদ নোনাজল এদের বৃদ্ধি ও প্রজননের পরিমান লবন মিশিয়ে দেওয়া যায়। প্রজননের জন্য় সক্ষম হলে এদের রঙের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। পরুষ মাছের প্রজনন কালে গায়ের উলম্ব কালো দাগগুলি ম্লান হয়ে যায় এবং গায়ের হলদে সোনালী রঙ আরো গাঢ় হয়ে ওঠে ও ডিমপূর্ন পেট গোলাকৃতি আকার ধারন করে । এদের খাদ্য় তালিকায় প্রক্রিয়াজাত খাবারের পাশাপাশি সজীব উপাদান হিসাবে ছোটো চিংড়ি, প্রভৃতি রাখা বাঞ্চনীয়।
ফুষ্টানি পুঁটি
শান্ত প্রকৃতির আকর্ষনীয় এই দেশী পুঁটি মাছ অ্য়াকোরিয়াম মাছ হিসাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এরা সাধারনত স্বাদুজলের মাছ। একটি পূর্নাঙ্গ মাছ ৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। নিজবাসস্থানে সবুজ শৈবাল ও জলজ উদ্ভিদের আধিক্য় এদের বেশ পছন্দ। ছোট সজীব পোকামাকড় ,জুপ্ল্য়াস্কটন এদের খাদ্য় তালিকাতে অন্য়তম ।
আরও পড়ুনঃ আপনি কি কখনও নিরামিষ মাছ খেয়েছেন? যার চাহিদা বাজারে বেশি
Share your comments