মাগুর মাছ একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জিওল মাছ। দেশি মাগুর মাছের একক চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে আমাদের দেশের অনেক মাছ চাষিরাই ভালোভাবে জানেন না। আমরা আজ দেশী মাগুর মাছ চাষের ব্য়বস্থাপনা নিয়ে কথা বলব কারন,দেশি মাগুর মাছ চাষ ও রেণু পোনা উৎপাদন পদ্ধতি মৎস্য খামারিদের আগ্রহের বিষয় ।এই মাছ একটি আতি পুষ্টি সমৃদ্ধ ও সুস্বাদু প্রকৃতির মাছ। দেশি মাগুর মাছ চাষ বর্তমান সময়ে ব্যাপক জনপ্রীয় হয়ে উঠেছে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, চিন, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড সহ প্রভৃতি দেশে এই মাছের বিস্তার।
উন্নত দেশগুলোতে অরগানিক উপায়ে কিভাবে মাছের খাবার তৈরি করা যায় সেটা নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের দেশে কিভাবে কম খরচে মাগুর মাছ চাষ করা যায় সেটা নিয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে প্রতিনিয়ত গবেষণা চলছে। দেশের প্রেক্ষাপটে মাগুর মাছ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো।
হাইব্রিড মাগুর মাছ বৃহদাকারের হয়। এই মাছ মাংসাশী রাক্ষুসে। প্রচুর খায়। ভীষণ তাড়াতাড়ি এদের দেহের বৃদ্ধি হয়। এরা সুযোগ পেলে মানুষের মাংসও খাবলে খেয়ে নেয়। ওই জলাশয়ে অন্য মাছ রাখা বিপজ্জনক। এদের স্বাদ ও খাদ্যগুণ দেশি মাগুরের স্বাদ ও খাদ্যগুণের চেয়ে কম। এমনবিধ বিভিন্ন কারণে এদের চাষে সরকারের নানা বিধিনিষেধ আছে। তাই এদের সম্পর্কে আর বিস্তারিত আলোচনা করা হল না। আমরা দেশি মাগুর মাছেই আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখব।
মাগুর মাছ যে কোনও জলাশয়ে থাকতে পারে। সাধারণ মিঠা জল বা নোনা জলে (লবণতা ৮ পিপিটি) এরা সচ্ছন্দে বসবাস করতে পারে। এরা ভীষণ নোংরা নর্দমার ময়লা জল এমনকী অগভীর পাট পচানো জলেও বেঁচে থাকে ও বৃদ্ধি পায়। মাগুর মাছ সাধারণত এঁদো, নোংরা, ঘোলা অগভীর জলায় থাকতে ভালোবাসে।
দেশি মাগুর মাছের একক চাষ পদ্ধতি
শিং ও মাগুর মাছ চাষের জন্য পুকুর ১-১.৫ মিটার গভীর হওয়া দরকার। পুকুরের আয়তন ১০ শতক থেকে ৩০ শতক হলে ভালো হয়। পুকুর শুকিয়ে অথবা বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে সকল প্রকার মাছ নিধনের পর, প্রতি শতাংশে ২৫০ থেকে ৫০০ গ্রাম চুন প্রয়োগের দুই থেকে দিন পর প্রতি শতাংশে ৫০ ইউরিয়া ও ১০০ গ্রাম টিএসপি সার সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ পুকুরে মাগুর মাছের চাষ
পোনা মজুদ
পুকুরে সার প্রয়োগের ৫-৭ দিন পর ২-৩ ইঞ্চি সাইজের একক চাষের জন্য প্রতি শতাংশে ২৫০ টি মাগুর ও ৪০০ টি শিং দেওয়া যেতে পারে।
মাগুর মাছের খাবার
প্যরেট পোকা মাগুর মাছের জন্য একটি উৎকৃষ্ট মানের খাবার। এর মধ্যে ৭০-৮০% প্রোটিন থাকে । মাগুর মাছের খাবারে শতকরা প্রায় ৪০থেকে ৫০ ভাগ প্রোটিন প্রয়োজন হয়। এই কারণে প্যরেট পোকা হতে পারে মাগুর মাছের বিকল্প খাবার উৎস ।
আরও পড়ুনঃ মাছের মড়ক থেকে পুকুরকে বাঁচানোর উপায় জানুন
পুকুরে মাগুর মাছের চাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং লাভদায়ক একটি ব্যবসা। কিন্তু পুকুরে এই মাছের চাষের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার মাথায় রাখা দরকার, না হলে লাভের পরিবর্তে ব্যবসায়ীর ক্ষতির সম্ভবনা বেশী থাকে।
Share your comments