রোগ –বালাই –এর প্রতিকার সফল মাছ চাষের চাবিকাঠি

সাফল্যের কারর বা মূল কথা যাই হোক না কেন,যত্ন ,অধ্যাবসায় ও শ্রম এই ত্রয়ীর ভূমীকা যে অপরিসীম সে বিষয়ে মনে হয় সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই

KJ Staff
KJ Staff

কৃষিজাগরন ডেস্কঃ সাফল্যের কারর বা মূল কথা যাই হোক না কেন,যত্ন ,অধ্যাবসায় ও শ্রম এই ত্রয়ীর ভূমীকা যে অপরিসীম সে বিষয়ে মনে হয় সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই । মাছ চাষের সঙ্গেও সম্পৃক্তি থাকে পরিচর্য্যার বিষয়টি। চারাপোনা ছাড়লেই শুধু হলো না তার বৃদ্ধি,পুষ্টি,রোগ-বালাই প্রতিকার,সার্বিক উৎকর্ষ,বাসযোগ্য জল-মাটির প্রতিপালন-এ সব কিছুই মাছ চাষের সার্বিক সাফল্যের সঙ্গে জুড়ে আছে আর-তাই রোজগার-ও। রোগ সংক্রামন এড়াতে পারলে মাছের ফলনের কাঙ্ঘিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।

মাছের নানারকম রোগ হয়-অনেক কারনে হয়ঃ পুকুরের জলের গুনমান খারাপ হলে,রোগা-জীবানুর আধিক্য হলে,ক্রমাগত মাছের পুষ্টির খাটতি হলে যত্ন কম হলে ও আরও অনেক কারনে। প্রধান রোগ –জীবানু গুলো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া,ছত্রাক, প্রোটজোয়া, উকুন,কৃমি। মাছের শরীরে কোথায় কিকি অসুখ হতে পারে চিত্রে তা দেখানো হলো।(ছবি) অনেক সময়ে জেঁকি মাছের গায়ে লাগে আর তা থেকে সামান্য যে ক্ষত সৃষ্টি হয়-ছত্রাক আক্রমনের শুরু অনেক সময়ে এই থেকেই শুরু হতে পারে। কিছু লক্ষন দেখা দেয় রোগ সংক্রামন হলে যেমন- মাছ খেতে চায় না,অনেক মসয়ে পুকুরে ভাসতে দেখা যায়, ভারসাম্য হারায়,রক্তক্ষরন হতে পারে,ক্ষত সৃষ্টি হয়, মাছের স্বাভাবিক উজ্জ্বল্য ও জীবনীশক্তি কমে যায়,পরজীবির সৃষ্টি হতে দেখা যায় ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ লজ্জা নয়, মাছ ধরা পেশায় আনন্দ খুঁজে পাচ্ছেন শিক্ষিত যুবক সম্প্রদায়! টেকসই মৎস্য আহরণের পাঠ দিচ্ছে নন্দীগ্রাম-1 ব্লক মৎস্য বিভাগ

মিষ্টি জলের মাছে সাধারন কয়েকটি রোগবালাই হলো ফুলকা/পাখনায় পচন ধরে-ছত্রাক ঘটিত কারনে,শরীরে ঘা হতে পারে। মিক্সোসেপারিডিয়াম-এই এক কোষী প্রানার সংক্রামন হলে ফুলকাতে সাদা গুটি দেখা যায় মাছের বৃদ্ধি ব্যহত হয় এতে। পেটে জল জমে ফুলে যাওয়া এক ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। আরগুলাস-এক সন্ধিপদ প্রানী-আর তা মাছকে ক্ষত-বিক্ষত কর। এটা উকুন আর এই উকুন ছড়িয়ে পড়লে মাছ ত বাড়েই না-ওজন বরং কমতে থাকে। কাতলা ও রুই মাছে সাধারনত বেশী দেখা যায়। গাইরোভাকটাইলাস ও ড্যাকটাইলোগাইরাস নামে দুটি চ্যাপ্টা কৃমি। এছাড়া লার্নিয়া-আরেক ধরনের কৃমি রুই-কাতলার দেহের উপরিভাগে সাদা সূতোর আঁকশির মত লেগে থাকে। পুকুরে জল দূষিত দূষিত জলে, BOD-র মাত্রা বেশী হলে জৈব পদা্র্থের আধিক্যের কারনে-এই রোগ হতে পারে।

পুষ্টির ঘাটতি ক্রমাগত হতে থাকলে রোগবালাই সংক্রামন হয়- প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারনে তা হতে পারে। ভালো মানের খাবার না পেলে,পুকুরে মাছ ধারন ক্ষমতার মাত্রা ছাড়িয়ে বেশি মাছ মজুত করলে পুষ্টির সভাব হতে পারে। মাছের ক্ষত রোগ-লাল যায় রোগ ESU সাধারনত শীতের শুরুতে দেখা যেতে পারে। প্রথমে গায়ে লাল দাগ ওপরে সেই দাগই বড় ক্ষতে পরিনত হয়- লেজ ও পাখনায় পচন ও তার পর খসে পড়া শুরু হয়। ক্রমে পুকুরে সব মাছে ছাড়িয়ে পড়ে এই মহামারী রোগ। প্রথমে হয় পুকুরের তলার দিকে যে মাছ গুলি থাকে তাদের ও ক্রমেই তা দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে জীবানুরা ক্ষতরোগের মহামারী ডেকে আনে।

রোগ যে হয়েছে মাছের আচরনেই তা বুঝুয়ে দেয়।পুকুর পাড়ে দেহ ঘষবে,মাথা ওপরে রেখে ঝুলন্ত অবস্থায় ভাসবে,আস্তে আস্তে চলাফেরা করবে ও সর্বোপরি খেতে চাইবেনা।

আরও পড়ুনঃ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক মৎস্য শিকারীদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়জন করল মৎস্য বিভাগ

রোগ এড়াতে আগাম ব্যবস্থাই প্রতিরোধের উপায়। জলের PH মান নিয়মিত চেক করে পুকুরে হিসাব মত চুন প্রয়োগ,পুকুরের তলদেশ মাসে একবার করে রেকিং করা যেতে গ্যাস না জমে। পরিমানের বেশী জৈব/অজৈব সার প্রয়োগ না করা,উদ্ভিদকনা যাতে পরিমানের চেয়ে বেশী না জমে-সেদিকে লক্ষ্য রাখা,পুকুরে জাল দেওয়ার আগে তা শোধন করে নেওয়া,ভালো চারার জন্য স্বীকৃত হ্যাচারিতে যোগাযোগ,খাবার তৈরীর উৎপাদনের গুনমান বজায় রাখা ও সঠিক পদ্ধতিতে খাবার প্রয়োগ- নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে দিতে হবে।

ডঃপ্রতাপ মুখোপাধ্যায় অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিজ্ঞানী , ICAR- CIFA

Published On: 20 March 2023, 04:49 PM English Summary: Disease control is key to successful fish farming (1)

Like this article?

Hey! I am KJ Staff . Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters