প্রায় হারিয়ে যাওয়া শোল মাছের প্রাকৃতিক ভাবে পোনা উৎপাদন ও বানিজ্যিক ভাবে চাষ করা যায়। শোল মাছের বাজারে ভালোই দাম আছে।
সবাই রুই, কাতলা, মৃগেল সহ অন্যান্য প্রজাতীর মাছ চাষ করতে বেশি আগ্রহি। কিন্তু শোল মাছ চাষ না করে রাক্ষুসে মাছ বলে মেরে ফেলা হয়। কিন্তু শোল মাছকে বানিজ্যিক ভাবে চাষ করলে লাভবান হওয়া যায়। একদিকে যেমন হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করা যাবে আবার ক্ষুদ্র মাছ চাষিরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হবেন।
বেকার যুবক ছোট্ট পুকুর বা ডোবায় মাত্র পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকায় এই ব্যবসা শুরু করতে পারে। চাষে খরচ কম । অল্প জায়গায় । লাভ জনক চাষ। ছোট পুকুরে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকায় ব্যবসা চাষ করা যাবে।
মাত্র দেড় ডেসিম্যাল পুকুর থেকে এক বছরে প্রায় এক টন উৎপাদন হবে। যেকোনো পুকুরে করা যাবে, তবে পরিবেশ তৈরী করে দিতে হবে। কচুরি পানা, কলমি লতা থাকলে ভালো, আড়ালে আবডালে থাকতে চায়। নেট বা জাল দিয়ে পুকুর ঘিরে দিতে হবে।
মাছ চাষিরা নিজেই শোল মাছের বাচ্চা পোনা তৈরি করে নিতে পারেন। এরজন্য ৬ ডেসিম্যালের একটু পুকুর যেখানে ১০-১২ টি পুরুষ ও স্ত্রী বড় শোল মাছ ছাড়তে হবে । দুটি ভিন্ন জলাশয়ের ব্রূড মাছ সংগ্রহ করে পোনা উৎপাদন করার জন্য। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে শোল মাছের পোনা উৎপাদন করা খুবই সহজ। এমনিতে শোল মাছ বৈশাখ মাসের প্রথম থেকে প্রজনন করে ।
স্ত্রী ও পুরুষ শোলমাছ চিনতে হলে, শোল মাছের পেটের দিকে চাপ দিলে লালা বের হয়। স্ত্রী মাছ লালার রঙ হলুদ । পুরুষ মাছ লালা সাদা রঙের হয়।
শোল মাছের ডিমগুলি জলের ওপর ভাসতে থাকে। স্ত্রী মাছ সেখানে ডিম দেয় শিশু মাছ না হওয়া পর্যন্ত পুরুষ ও স্ত্রী উভয় মাছই ঘুরে বেড়ায়। পুকুর থেকে সপ্তাহখানেক বয়সের বাচ্চা সংগ্রহ করে নিয়ে ঐ গুলি বড় পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে। হাফ ইঞ্চি সাইজের পোনা বিঘায় ৫০টি করে ছাড়তে হবে। ছোট মাছই এর প্রধান খাদ্য। শোল মাছকে খাবার হিসেবে চিংড়ি শুটকির গুঁড়া ভালভাবে পিষিয়ে দিতে হবে এবং মাছ কুচি কুচি কেটে ট্রেতে করে দেন। শোল মাছ সব ধরনের দুর্যোগ যেমন খরা, অতিবৃষ্টি কিংবা প্রতিকূল পরিস্থিতি সবকিছু সহ্য করতে পারে- যা অন্য মাছের জন্য কঠিন। মা শোল মাছই নিজেদের মতো করে ডিম নার্সিং ও পোনা লালন করে। শত্রু মাছের কবল থেকে নিজেই ঠেকায় ।
এভাবে ভাল করে চাষ করলে শোল মাছ ৬ মাসে ৭০০- ১০০০ গ্রাম ওজন হয়। শোল মাছ চৌবাচ্চাতেও চাষ করা যায়।
Image source - Google
Related link - (Commercial rabbit rearing) বাণিজ্যিক খরগোশ পালন কম খরচের সুবিধাজনক উদ্যোগ, আয় অতিরিক্ত
Share your comments