Koi Fish Farming: পুকুরে কই মাছ চাষ করে অধিক উপার্জন করুন

কই একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় মাছ | পুকুর বা ছোট জলাশয়ে খুব সহজেই কই মাছ চাষ করে দারুন লাভ করা যায় | এরা খুব দ্রুত বাড়ে, সাধারণত ৪ মাসে বাজারজাত করা হয়। শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য কই মাছের বাড়তি অঙ্গ থাকায় তাজা অবস্থায় মাছ বিক্রয় করা সম্ভব।

রায়না ঘোষ
রায়না ঘোষ
Koi Fish Farming
Koi fish (image credit- Google)

কই একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় মাছ | পুকুর বা ছোট জলাশয়ে খুব সহজেই কই মাছ চাষ করে দারুন লাভ করা যায় | এরা খুব দ্রুত বাড়ে, সাধারণত ৪ মাসে বাজারজাত করা হয়। শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য কই মাছের বাড়তি অঙ্গ থাকায় তাজা অবস্থায় মাছ বিক্রয় করা সম্ভব। পুষ্টিগুন অনেক বেশি, সুস্বাদু তাই বাজার মূল্য অনেক বেশি। বিরূপ পরিবেশেও বেঁচে থাকতে সক্ষম এবং মৃত্যুর হার খুবই কম।

অধিক ঘনত্বে চাষ করা যায়। রোগবালাই প্রায় নেই বললেই চলে। তুলনামূলক অল্প পঁজিতেই চাষ করা সম্ভব। কই মাছ মূলত কীট-পতঙ্গভূক। একারণে পোকামাকড়, ছোট মাছ, ব্যাঙের পোনা, শামুক, ঝিনুকের মাংস ইত্যাদি সরবরাহ করে এ মাছ চাষ করা যায়।

পুকুর নির্বাচন(Pond selection):

পুকুর রৌদ্র আলোকিত খোলামেলা জায়গায় হাওয়া উত্তম এবং পাড়ে ঝোপ- জঙ্গল থাকলে তা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। পাড়ে বড় গাছপালা থাকলে সেগুলোর ডালপালা ছেঁটে দিতে হবে এবং দিনে কমপক্ষে ৮ ঘন্টা রৌদ্রালোক পড়া নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবস্থাপনা সুবিধার জন্য পুকুর আয়তকার হতে হবে | পুকুরের আয়তন ২০-৩০ শতাংশের মধ্যে হলে ব্যবস্থাপনা করতে সুবিধা হয়, তবে পুকুরের আয়তন ৫০ শতাংশের বেশি না হওয়াই উত্তম। পুকুরের গড় গভীরতা ৪.৫-৫.৫ ফুট হলে ভাল হয়, যেখানে বৎসরে ৫-৬ মাস জল থাকে।

আরও পড়ুন -Boal Fish Farming: দেখে নিন বোয়াল মাছ চাষ ও প্রজনন পদ্ধতির সম্পূর্ণ পদ্ধতি

পুকুর প্রস্তুতি:

প্রথমে পুকুরকে সেচের মাধ্যমে শুকিয়ে ফেলা প্রয়োজন। পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে প্রতি শতাংশে প্রতি ফুট গভীরতার জন্য ১৮-২৫ গ্রাম রোটেনন পাউডার দিয়ে সব ধরনের মাছ অপসারণ করা যায়। পুকুরের তলায় কাদা হওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকলে হালকা করে কিছু বালি (দালান-কোঠা নির্মাণের জন্য যে বালু ব্যবহৃত হয়) ছিটিয়ে দেয়া যেতে পারে। এর ফলে পুকুরের তলায় গ্যাস হবে না, জল পরিষ্কার এবং পরিবেশ ভাল থাকবে। রোটেনন প্রয়োগের ২-৩ দিন পর শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে পাথুরে চুন প্রয়োগ করতে হবে। তবে চুন ছাড়াও জিওলাইট (প্রতি শতকে ১ কেজি) পুকুর প্রস্তুতির সময় প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি তথা প্রাকৃতিক খাদ্যে বৃদ্ধির জন্য সার প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পুকুর প্রস্তুতির শেষ ধাপে সার প্রয়োগ করা হয়। চুন প্রয়োগের ৪-৫ দিন পর শতকে ৮০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ৪০ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করা হয়।

পোনা মজুদ:

 প্রতি শতাংশে ১-১.৫ ইঞ্চি মাপের ৩০০-৩২৫টি কই-এর পোনা মজুদ করতে হবে। একই সাথে ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে নিবিড় কৈ চাষের ক্ষেত্রে শতাংশ প্রতি ৩-৫ টি কাতলা মাছের পোনা ছাড়া যেতে পারে।  কৈ মাছের সাথে শতকে ২০টি মাগুর অথবা ১০টি শিং মজুদ করা যেতে পারে।

পরিবহন জনিত কারণে পোনার শরীরে ক্ষত হতে পারে তাই বালতিতে ১০ লি. জল নিয়ে এর মধ্যে ২০০ গ্রাম খাবার লবণ অথবা ১ চা চামচ KMnO4 মিশাতে হবে। অতঃপর বালতির উপর একটি ঘন জাল রেখে তার মধ্যে ২০০-৩০০টি পোনা ছাড়তে হবে। যদি সম্ভব হয় পোনা ছাড়ার সময় থেকে ১০-১২ ঘন্টা পুকুরে হালকা জলের প্রবাহ রাখতে হবে।

খাদ্য(Food):

৩৫% প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার কৈ চাষের জন্য উপযোগী। এদের খাবারে প্রাণীজ প্রোটিন বেশী হওয়া আবশ্যক। তা ছাড়া মাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য গ্রোথ প্রোমোটর, ভিটামিন ও এনজাইম খাদ্যের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। পোনা মজুদের পরের দিন থেকে মাছকে তার দেহ ওজনের ১৬ ভাগ থেকে আরম্ভ করে দৈনিক খাবার দিয়ে যেতে হবে। প্রতি ১৫ দিন অন্তর খাদ্য প্রয়োগের হার ১% করে কমাতে হবে। মাছের ওজন ৫০ গ্রামের উর্ধ্বে উঠলে খাদ্য প্রয়োগের পরিমাণ হবে তার দেহ ওজনের শতকরা ৫ ভাগ।

রোগ ও প্রতিকার(Disease management system):

মাছ নিয়মিত বাড়ছে কিনা এবং মাছ রোগাক্রান্ত হচ্ছে কিনা জাল টেনে মাঝে মাঝে তা পরীক্ষা করতে হবে। ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া, ফাংগাস জনিত কোন রোগ যেন না হয় তার জন্য আগে থেকেই প্রতি শতাংশ ১ গ্রাম হারে Timsen (টিমসেন) ১৫ দিন পর পর ব্যবহার করতে হবে।

ক্ষত রোগ:

৫০০ গ্রাম চুন + ৫০০ গ্রাম লবনক্ষত রোগের প্রাদুর্ভাব হলে পুকুরে জীবানুনাশক (টিমসেন – ৮০ গ্রাম/বিঘা (১ম ডোজ) ও ৫০ গ্রাম/বিঘা (২৪ ঘন্টা পর ২য় ডোজ) ব্যবহার করতে হবে। একই সাথে এন্টিবায়োটিক হিসাবে ২ গ্রাম অক্সিটেট্রাসাইক্লিন প্রতি কেজি খাবারের সাথে মিশিয়ে ৭ দিন প্রয়োগ করতে হবে ।

সংগ্রহ:

চারমাসে থাই কৈ মাছ প্রতিটির গড় ওজন হবে ৭০-৮০ গ্রাম। চারমাসে ভিয়েতনামি কৈ মাছ প্রতিটির গড় ওজন হবে ১৫০-২০০ গ্রাম। চারমাস পর থেকেই আংশিক বা সম্পূর্ণ মাছ বিক্রয় করা যায়।

আরও পড়ুন - Tomato Farming: বাড়ির ছাদের টবে কিভাবে টমেটো চাষ করবেন, দেখুন পদ্ধতি

Published On: 06 August 2021, 03:31 PM English Summary: Koi Fish Farming: Earn more by cultivating Koi fish in the pond

Like this article?

Hey! I am রায়না ঘোষ . Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters