মৃগেল মাছ কার্প পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এই মাছটি দক্ষিণ এশিয়াতে বেশী পাওয়া যায় বিশেষত ভারতে। এটা কাবেরী নদীতে বেশী পাওয়া যায়। মৃগেল মাছটি ভারতের ৩ টি কার্প মাছের মধ্যে অন্যতম। রুই আর কাতলা মাছের সাথে এর চাষ করা হয়। আজকে এই মাছের চাষ খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বিশেষত ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মায়ানমার। নেপাল, থাইল্যান্ড, লাওসের মত দেশগুলিতে। এছাড়াও বর্তমানে চিন, জাপান, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া সহ প্রভৃতি দেশে এর চাষ হচ্ছে। এই মাছ খুব বড় হতে পারে। বর্তমানে ধান জমিতে (Paddy farming) ধানের পাশাপাশি মৃগেল মাছ ও অন্যান্য মাছ চাষ করে কৃষকবন্ধুরা ব্যাপকভাবে লাভবান হয়ে থাকেন |
মৃগেল মাছের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Mrigal fish):
সাধারণত এই মাছের পিছেনর দিকের রঙ গাড় ধূসর হয়, আর পাশের দিকে ও পেটের রঙ হয় রুপালি। এদের মুখের চোয়ালে কোনো দাঁত থাকে না। সাধারণত এরা ১ থেকে ২ কেজির হয়, কিন্তু সর্বচ্চো এদের ওজন হতে পারে ১২.৭ কেজি। মৃগেল মাছ জলের নিচের স্তরে ডিম পাড়ে। কিন্তু বাচ্চা হওয়ার পর এরা জলের উপরের দিকে চলে আসে। কিন্তু বড় হলে এরা জলের নীচের স্তরে চলে আসে। এরা ১-২ বছরের মধ্যে পূর্ণতা পেয়ে যায়। এরা লাখ লাখ ডিম পাড়তে পারে। এরা মিষ্টি জলের মাছ।
কী জাতের ধান:
গভীর জলে উৎপাদনশীল ধানের জাত বাছতে হবে। যেমন, জলধি ১, জলধি ২, স্বর্ণ সাব ১।
পোনা মজুদের পরিমান:
ধান রোয়ার পর প্রতি হেক্টরে ২০০০-৩০০০ চারাপোনা ছাড়া হয়।
আরও পড়ুন -Bell Fruit Farming: জেনে নিন জামরুল চাষের দূর্দান্ত পদ্ধতি
জমির প্রস্তুতি:
জমিটি কমপক্ষে ৫-৬ বিঘা হলে ভাল। মোটামুটি এক হেক্টর জমির চারদিকে ৪-৫ ফুট চওড়া এবং ২-৩ ফুট গভীর খাল কেটে ওই মাটি দিয়ে চারদিকে উঁচু আল দিতে হবে। ধান খেতের সঙ্গে পুকুরের বা অন্য বড় জলাশয়ের যোগ থাকলে ভাল। না হলেও জল ঢোকা এবং বেরনোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। সেই পথে জালের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ধানখেত প্রয়োজনে জলে ডুবিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করা যায় যেন।
মাছ চাষের পদ্ধতি:
সাধারণত ২ ভাবে মাছ চাষ করা যায়—১)আহরণ পদ্ধতি, ২) পালন পদ্ধতি।
১)আহরণ পদ্ধতি:
আহরণ পদ্ধতিতে সংলগ্ন নালা থেকে মাছ জমিতে ঢুকে পড়ে। নালার জলের উচ্চতা ধান খেত থেকে ৩০ সেমি নীচে রাখা হয়। জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে খেতে সার দিয়ে ধানের চারা রোপণ করা হয়। শ্রাবণ মাসে বর্ষার জলে নালার জলের উচ্চতা বাড়ে। ওই সময় ধানখেতের চারপাশের বাঁধের কিছু জায়গা কেটে দিলে নালার মাছ ক্ষেতে ঢুকে পড়ে। এরপর একই সঙ্গে ধানগাছ ও মাছের বৃদ্ধি হয়। ধান কাটার আগেই মাছ তুলে ফেলতে হবে। পালন পদ্ধতিতে সরাসরি জমিতেই মাছের চারা ছাড়া হয়।
২) পালন পদ্ধতি:
এ ক্ষেত্রে ধান ও মাছ চাষ একসঙ্গে করা যায়। আবার আগে ধান ও পরে মাছ চাষ করা যেতে পারে। পরে মাছ চাষ করতে চাইলে জমি থেকে ধান কাটার পর চারপাশে বাঁধ দিয়ে ধানখেতটিকে একটি অস্থায়ী পুকুরে পরিণত করা হয়। এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে কৃষকবন্ধুরা লাভবান হয়ে উঠতে পারে | এর পাশাপাশি চাষের খরচও কমবে অনেকটাই |
আরও পড়ুন -Jayanti Rohu Fish Farming: জয়ন্তী রুই মাছ চাষে আপনিও হবেন লাভবান , শিখে নিন কৌশল
Share your comments