শুয়োর প্রতিপালন শুধুমাত্র একটি লাভজনক ব্যবসা নয়, এটি একটি খুব জনপ্রিয় ব্যবসা। শুয়োরের মাংস ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এই চাষ খুব সহজ নয়। একটি লাভজনক শুয়োরের ফার্ম করতে অনেক সময় এবং অর্থ লাগে।
তৃণক্ষেত্রের উপর শুয়োর চাষ - প্রথমত, অনেক ঘাস এবং মাটি দিয়ে একটি বড় এলাকা থাকতে হবে। তারপর একটি বড় বেড়ার প্রয়োজন যাতে শুয়োররা খুব সহজে খুব দূরে ঘুরতে পারে এবং আরাম অনুভব করতে পারে। কৃষকদের সবসময় বেড়া গঠন সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত। খুব শক্তিশালী কাঠ এবং পুরু কোণের খুঁটিগুলি ব্যবহার করে বেড়া করতে হবে কারণ প্রাপ্তবয়স্ক শুয়োরগুলি খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং তারা বেড়া ধ্বংস করার চেষ্টা করতে পারে। শুয়োর মাটি খনন করতে ভালোবাসে তাই বেড়া খুব শক্ত করে বানাতে হবে।
খামারে শুয়োর চাষ - খামারে শুয়োর প্রতিপালন সহজ। খামারের ভিতর শুকনো রাখা খুবই জরুরি। কৃষকদের মেঝে ঢালাই করা উচিত যাতে সহজে জল দিয়ে খামার পরিষ্কার করা যায়। সহজেই পরিষ্কার করার জন্য খাওয়ার এলাকাকে বাকি এলাকার থেকে আলাদা করতে হবে। প্রত্যেক দুটি শুয়োরের জন্য কমপক্ষে ১০ ফুট গভীর এবং ১০ ফুট প্রশস্ত এলাকা উপযুক্ত। বাকি এলাকাটি খাওয়ার এলাকার অর্ধেক হওয়া উচিত এবং একটি জলাধার থাকতে হবে যেখানে তারা স্নান করতে পারে এবং জলাধারটি কমপক্ষে ৫ ফুট হওয়া উচিত।
শুয়োরের প্রজাতির নির্বাচন - সারা পৃথিবীতে অসংখ্য শুয়োরের প্রজাতি পাওয়া যায়। কিছু সাধারণ এবং জনপ্রিয় শূকর প্রজাতির হয়; ইয়র্কশায়ার, স্পট, পোল্যান্ড চীন, ল্যান্ড্রেস, হ্যাম্পশায়ার, ডুরোক, চেস্টার হোয়াইট এবং বার্কশায়ার।
প্রতিপালন - খাবার জন্য এদেরকে লেটুস আর অন্য সবজি দেওয়া যেতে পারে, মাংস দেওয়া ঠিক নয়।কারন এতে এরা চর্বিযুক্ত হয়ে যাবে এবং এদের দাম কমে যাবে।শুয়োরের সঠিক ওজনের জন্য তাকে ১/২ কাপ ভুট্টার তেলের সাথে একটি ডিম মিশ্রিত করে দিনে দুবার খাওয়াতে হবে। যথাযথ পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে তার পর সফলভাবে শুয়োরের চাষ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে বিছানা হিসাবে খড় ব্যবহার করা উচিত। তাদের যাতে ঘাম না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
স্বাস্থ্য এবং রোগ - শুয়োরের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। তাই চিকিৎসায় মনোযোগ অপরিহার্য।কৃষকদের রোগের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। খাওয়ার প্রতি আগ্রহ নেই,ডায়রিয়া, অত্যধিক কাশি, হারনিয়া, শুষ্ক ত্বক এবং ত্বকে অনিয়মিত দাগ, অত্যধিক লম্বা চুল এই সাব রোগের লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি ক্রমাগত কাশি হয় তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পশুচিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। শুয়োরদের কেটে ফেলার ২১-৪৫ দিন আগে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া যাবে না। শুয়োরের চাষ খুব আকর্ষণীয় এবং লাভজনক ব্যবসা। কিন্তু একে ভালভাবে করতে হলে যথেষ্ট প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।
- দেবাশীষ চক্রবর্তী
Share your comments