বিজ্ঞানের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে হাঁসমুরগি পালন পদ্ধতিরও যথেষ্ট উন্নয়ন ঘটেছে। উন্নয়ন ঘটেছে খামার ব্যবস্থাপনারও। যদিও এদেশে গ্রামাঞ্চলে অথবা যারা অল্প সংখ্যায় হাঁসমুরগি পুষে থাকেন তারা সনাতন পদ্ধতিতেই এগুলোকে লালনপালন করেন। কিন্তু বাণিজ্যিকভিত্তিতে খামারে পালন করতে হলে অবশ্যই আধুনিক পদ্ধতিতে হাঁসমুরগি লালনপালন করতে হবে। তা না হলে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে ডিম বা মাংস উৎপাদিত হবে না।
খামার থেকে পর্যাপ্ত উৎপাদন পেতে হলে প্রতিটি খামারিকে অবশ্যই খামার ব্যবস্থাপনার খুঁটিনাটি বিষয়গুলোর দিকে সঠিকভাবে নজর দিতে হবে। খামার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সীমিত জ্ঞান থাকলে পোল্ট্রি থেকে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন পেতে সমস্যা হতে পারে। ফলে ব্যবসা লাভজনক হবে না। এতে অনেকেই খামার করতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন।
আরও পড়ুনঃ দ্বিগুন লাভ,শুধু বেছে নিতে হবে এই তিনটি বিশেষ জাত
এদের দুর্দশা দেখে খামার গড়তে আগ্রহী ব্যক্তিরাও খামার গড়তে চান না। অথচ খামারিরা যদি খামারিরা ব্যবস্থাপনার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করেন ও সে অনুযায়ী সঠিকভাবে খামারের প্রতিদিনের কাজকর্ম সম্পাদন করেন, তবে সহজেই এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠে খামারকে আর্থিকভাবে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আর একথা মনে রাখা উচিত যে, যে কোনো ছোটখাট অবহেলা বা ভুলত্রুটিই খামারের লোকসানের জন্য যথেষ্ট।
হাঁস পালনের কয়েকটি লাভজনক পদ্ধতি
খাঁচা পদ্ধতি
এ পদ্ধতিতে মুরগি পালন এখন বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিশেষ করে, শহর এলাকায় বাসাবাড়িতে এ পদ্ধতিতে মুরগি পালন খুবই সুবিধাজনক। বিভিন্ন বয়সের মুরগি পালনের জন্য বিভিন্ন ধরনের খাঁচা রয়েছে। মুরগির প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানি সরবরাহের জন্য খাঁচায় বিশেষ ডিজাইনের খাদ্য ও পানির পাত্র লাগানো থাকে। প্রতিটি খাঁচার সামনের দিকে বর্ধিত অংশ থাকে যেখানে খাঁচায় পাড়া ডিম গড়িয়ে গড়িয়ে এসে জমা হয়।এছাড়াও খাঁচার মেঝে তারজালি দিয়ে তৈরি করা হয় বলে মেঝের ফাঁক দিয়ে মুরগির বিষ্ঠা সহজেই নিচে বিষ্ঠা সংগ্রহের ট্রেতে গিয়ে পড়ে। খাঁচা তৈরিতে লোহার তার, অ্যাঙ্গেল লোহা, জি, আই, শীট, কাঠ, প্লাস্টিক, এমনকি বাঁশও ব্যবহার করা যায়।
হার্ডিং পদ্ধতি
এ পদ্ধতি বাড়ন্ত ও বয়স্ক হাঁস পালনের জন্য উপযোগী। এক্ষেত্রে হাঁসের জন্য কোনো নির্দিষ্ট ঘর থাকে না। হাঁসগুলো দল বেঁধে সারাদিন ঘুরে বেড়ায়। একটি দলে সাধারণত ১০০-৫০০টি হাঁস থাকে। সন্ধ্যায় এদেরকে একটি খাঁচি বা অন্য কোনোভাবে কোনো উঁচু স্থানে আবদ্ধ করে রাখা হয় এবং সকালে ডিম সংগ্রহ করে আবার ছেড়ে দেয়া হয়। হাঁসগুলোর তত্ত্বাবধানে একজন মানুষ নিয়োজিত থাকেন।
আরও পড়ুনঃ উন্নত জাতের এই তিন মুরগী পালনে ফিরতে পারে ভাগ্য,জেনে নিন সঠিক পালন পদ্ধতি
যেসব এলাকায় প্রাকৃতিক উৎস থেকে বেশি খাদ্য পাওয়া যায়, যেমন- ফসল কাটা জমি, সেখানে হাঁসগুলোকে নিয়ে যাওয়া হয়। ঐ এলাকায় কিছুদিন পালন করার পর খাদ্যাভাব দেখা দিলে আবার নতুন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এ পদ্ধতিতে খাদ্য খরচ নেই বললেই চলে। তবে, বিভিন্ন রোগ এবং চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় এ পদ্ধতিতে পালিত হাঁসের ১০-১৬% মারা যেতে পারে। ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও ভারতের কোনো কোনো স্থানে এ পদ্ধতিতে হাঁস পালন করা হয়ে থাকে।
Share your comments