কোয়েলের আদি জন্মস্থান জাপানে। পরবর্তীতে জাপান সহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে কোয়েলকে একটি লাভজনক পোলট্টি উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কোয়েল পালন করার জন্য অতিরিক্ত বা বাহুল্য কোন খরচ হয় না। বাড়ির যেকোন কোণ বা আঙিনা অথবা বাড়ির ছাদ ইত্যাদি জায়গাতেও কোয়েল পালন করা যায়। এই কারণে, শহরে কী গ্রামে অনেক সব স্থানেই কোয়েল পালন সহজতর। বিভিন্ন হাস মুরগির খামারেও ইদানিং কোয়েল পালন ব্যাপকভাবে সাড়া জাগিয়েছে | কোয়েল পালনে (Quail rearing) কৃষকরাও আর্থিক দিক থেকে ব্যাপক লাভবান হতে পারেন |
কোয়েল পাখি পালনের সুবিধা(Benefits):
১)ভাল জাতের কোয়েল (Koel bird) বছরে ২৮০ থেকে ৩০০টি ডিম দিয়ে থাকে এবং এরা এক টানা ১৪ মাস ডিম পাড়তে পারে ।
২) স্বল্প পুঁজিতে কোয়েলের খামার তৈরি করা যায়।
৩) কোয়েলের আকার ক্ষুদ্র বলে এদের লালন পালনের জন্য বেশি জায়গা লাগেনা |
৪) রোগ ব্যাধির দিকে থেকে কোয়েল খুবই লাভজনক বিনিয়োগ। কারণ, কোয়েলের রোগ ব্যাধি প্রায় হয় না বললেই চলে ।
৫)সাধারণত ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ বয়সেই একটি কোয়েল ডিম প্রদান করে থাকে। এদের ডিম খুব সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।
আরও পড়ুন -Sheep farming: স্বল্প ব্যয়ে ভেড়া পালনে ব্যাপক লাভ করুন
কোয়েলের বাসস্থান(shelter):
মোটামুটিভাবে ১২ ফুট দৈর্ঘ্য,৬ ফুট প্রস্থ এবং ২-৩ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট একটি খাঁচায় কমপক্ষে ৮০ থেকে ১০০টি কোয়েল পালন করা যায়। খাঁচার সামনে ও পিছনে নেট দিতে হবে এতে খাঁচায় আলো বাতাস চলাচল করবে । প্রস্থের দিকে নেট দেবার প্রয়োজন হয় না, তবে নেটের ফাকগুলো একটু ঘন হতে হবে। যাতে করে কোয়েলের মুখ সেই ফাক দিয়ে বাইরে বেরিয়ে না থাকে । খাঁচাতে যেন ইদুর, ছুচো না ঢুকতে পারে-সেদিকে লক্ষ্য রেখে ছোট ফাঁকের নেট ব্যাবহার করতে হবে। কোয়েলের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়না । ড়িম দেবার সময় খাবার এর তারতম্য হলে ড়িম দেওয়ার পরিমান কমতে পারে ।
খাবার(Food):
কোয়েলের জন্য আলাদা তেমন কোন সুষম খাদ্যের প্রয়োজন হয় না। সাধারণভাবে একটি পূর্ণাঙ্গ বয়সের কোয়েল দিনে ১৫ থেকে ২০ গ্রাম পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করতে পারে। সাধারণভাবে মুরগির যে খাবার সরবরাহ করা হয় সেই খাবারেই কোয়েল পালন করা যায়। তবে খাবারের দানা মুরগির খামারে ব্যবহৃত আকারে একটু ছোট হলে ভাল হয়। খাবারের অপচয় রোধে পুরুষ পাখি না রাখাই ভাল ।মুরগির মত কোয়েলরও ডিম পাড়ার সময় আলোর প্রয়োজন হয় । তাই দিনে ১৬ ঘন্টা আলোর ব্যাবস্থা রাখলে ডিম্ দেওয়ার হার ভালো হয় |
পরিচর্যা:
কোয়েলেরও তেমন কোন রোগ ব্যাধি নেই বললেই চলে। তবে মাঝে মাঝে কোয়েলকে রোগক্রান্ত হতে দেখা যায়। কোন কোয়েল অসুস্থ হলে সাথে সাথে তাকে সুস্থ কোয়েলের খাঁচা থেকে সরিয়ে নিতে হবে। কোয়েলের বিভিন্ন রোগ ব্যাধির মধ্যে আমাশয় উল্লেখ্যযোগ্য। এই রোগ হলে কোয়েলের ঘন ঘন পায়খানা হয়, খাবার গ্রহনে অনীহা দেখা দেয় পাশাপাশি কোয়েলের স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে। এই অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এম্বাজিন জাতীয় ঔষধ খাওয়ানো যেতে পারে।
কোয়েল পালনে লাভের পরিমান(Profits):
১০০০ কোয়েল থেকে মাসিক আয় হতে পারে, দৈনিক ডিম পাওয়া যাবে ৭৫০ টি | যার বাজার মূল্য প্রায় অনেক | ১০০ কোয়েলের থাকে প্রায় ২০ হাজারের বেশি টাকা উপার্জন করা সম্ভব |
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
আরও পড়ুন - Cow-food preserving method: জেনে নিন বর্ষায় গো-খাদ্য সংরক্ষণের পদ্ধতি
Share your comments