আজকের সময়ে, অনেক কৃষক কৃষিকাজের পাশাপাশি পশুপালনও করে থাকেন। প্রাণীপালনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন, এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। আর সর্বোপরি প্রাণীপালন এক লাভজনক ব্যবসা। জৈব সার পশুর গোবর থেকে তৈরি করা হয়, যা কৃষিজাত উত্পাদন করে। এর সাথে সাথে প্রাণী থেকে পাওয়া যায় দুধ। এমন পরিস্থিতিতে কৃষিকাজের পাশাপাশি পশুপালনও কৃষকদের আয়ের বড় উত্স হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি আপনিও কৃষিকাজের সাথে পশুপালন করার কথা ভাবছেন, তবে আপনি ছাগল পালন শুরু করতে পারেন।
ছাগল পালনে সবচেয়ে বড় সুবিধা হ'ল বাজার এর জন্য স্থানীয়ভাবে উপলব্ধ হয়। ছাগল পালন সর্বদা গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষের জন্য উপকারী হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। এটি একটি ছোট প্রাণী, তাই রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয়ও খুব কম। বিশেষ বিষয়টি হ'ল যে কোন পরিস্থিতিতে সহজেই এর খাবারের ব্যবস্থা করা যায়। তবে অনেক সময় ছাগল গলগণ্ড রোগে আক্রান্ত হয়।
পাসটিউরেলা মালটোসিডা নামক একটি ব্যাকটিরিয়ায় সংক্রমণের ফলে এই রোগ হয়। অক্টোবরে বা কখনও কখনও ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে হঠাৎ বৃষ্টিপাতের কারণে এই রোগ হতে পারে।
গলগণ্ড রোগের লক্ষণ -
গায়ে জ্বর
চোখ – নাক থেকে জল পড়া
খাদ্য জল না খাওয়া
ঝিমিয়ে যাওয়া
চোখ লাল হয়ে থাকা
শ্বাস প্রশ্বাসের গতি বৃদ্ধি
খুব বেশি পরিমাণে লালা ঝরা
জিহ্বার লালভাব
গলা এবং ঘাড়ে ফোলাভাব
ঘড়ঘড় আওয়াজ করা
এ ছাড়া ছাগলের রক্ত-মলও হতে পারে। সংক্রমণ বেশী হলে ছাগল ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে মারাও যায়।
গলগন্ড রোগের চিকিত্সা
রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রথমেই ছাগলকে ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত। এটি একটি যুক্তিসঙ্গত সমাধান। এই রোগের চিকিত্সা করা খুব কঠিন, তাই সময়মত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
টিকাপ্রদান –
ভাইরাসজনিত রোগ যেমন পিপিআর, গোটপক্স, ক্ষুরা রোগ ইত্যাদি এবং ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ যেমন – এনথ্রাক্স, ব্রুসেলোসিস ইত্যাদি খুবই মারাত্মক বলে এগুলির বিরুদ্ধে যথাযথ টিকা প্রদান করা আবশ্যিক। যে সকল ছাগীকে পূর্বে পিপিআর, গোটপক্স, একথাইমা, ব্রুসেলোসিস ইত্যাদি টিকা দেওয়া হয় নি, তাদেরকে গর্ভের পঞ্চম মাসে উক্ত ভ্যাকসিনগুলি দিতে হবে। বাচ্চার বয়স যখন ৫ মাস, তখন তাকে পিপিআর ভ্যাকসিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দিতে হবে।
Share your comments