গরুর দুধ মানুষের কাছে অত্যাবশ্যকীয় এক পণ্য। শিশু থেকে বৃদ্ধ, দুধের প্রয়োজন কম বেশি সবার। দুগ্ধজাত বিভিন্ন খাবার, মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। সাধারণত, দুধ উৎপাদনের হ্রাস-বৃদ্ধির উপর গুরুর স্বাস্থ্য, বাসস্থান, দুধ দোহনের পদ্ধতি সবকিছু নির্ভর করে। শুধু গরুর স্বাস্থ্যই নয়, উল্লেখিত বিষয়গুলি মেনে চলার চেষ্টা করলে গরুর দুধের পরিমাণও বাড়বে সঙ্গে সঙ্গে গরুর দুধের মানও উন্নত হবে।
গরু বড় না ছোট তার উপর উৎপাদন অনেকাংশে নির্ভরশীল। সাধারণত বড় আকারের গরুর দুগ্ধ উৎপাদনের ক্ষমতা বেশি। বাছুরের জন্ম দেওয়ার উপরেও গরুর দুগ্ধ উৎপাদন নির্ভর করে। গরু পুষ্টিকর খাবার ভালো মতন পেলে সঠিক পরিমাণে দুগ্ধ উৎপাদনে কোনও বাধা থাকে না। স্বাভাবিক ভাবেই গরু সুষ্ঠ সবল থাকলে তার দুধ উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সবশেষে দুধ দোহনের সঠিক মানের ব্যবস্থাপনা এবং গরুর গোয়ালঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হলে উৎপাদিত দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় সাথে সাথে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত দুধও মেলে।
গরুর খাঁটি দুধের উৎপাদন বাড়ানোর কৌশল ( Increasing clean milk production)
১. বাছুর প্রসবের আগে সন্তানসম্ভবা গরুর পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন। সন্তান জন্ম দেওয়ার আগে গরুর সুষম পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্য দরকার । পুষ্টি ঠিকঠাক পেলে গরুর দুধ দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে সাথে বাছুরের স্বাস্থ্যও ভালো হয়।
২. জন্ম দেওয়ার পর বাছুর বড় হওয়ার থেকে পুনরায় গরু গর্ভবর্তী হওয়ার আগে অবধি সময়কে ড্ৰাই পিরিয়ড বলে। সদ্য মা হয়ে ওঠা গরু এইসময় পরবর্তী সন্তানের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে পারবে।
৩. বাছুর জন্ম দেওয়ার কালে গরুকে সঠিক ভাবে পরিচর্যা করা উচিত। এই সময়টাতে গরুকে খড়ের বিছানায় শুতে দেওয়া উচিত। আসন্ন প্রসবা হওয়ায় এই সময়টাতে অনেক সময় গরুর জ্বর আসে, তার জন্য পরিমাণ অনুযায়ী গরুকে ক্যালসিয়াম খাবারে মিশিয়ে খাওয়ানো উচিত।
৪. গোয়ালঘর সবসময় পরিষ্কার রাখা উচিত। পরিষ্কার বাসস্থানের উপরেও গরুর দুধের উৎপাদন নির্ভর করে। গরুর গোয়ালঘরে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো বাতাস খেলা করা উচিত। খেয়াল রাখতে হবে গরুর থাকার জায়গা যাতে স্যাঁতস্যাঁতে না হয়। ঠিকঠাক পরিবেশ হলে গরুর রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং দুধ উৎপাদনও গরুর ভালো হয়.
৫. দুধ উৎপাদন বাড়াতে গরুকে কাঁচা ঘাস বেশি করে খাওয়াতে হবে। কাঁচা ঘাস খেলে গরু বেশি পরিমাণে দুধ দেয়।
আরও পড়ুন: PMFBY Update: আসামে ৫ লাখ কৃষকদের প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার আওতায় আনা হবে
৬. নিয়ম করে একটি নির্দিষ্ট সময়ে গরুর দুধ দোহন করা উচিত। গবেষণায় প্রমাণিত, নির্দিষ্ট সময়ে একই ব্যক্তি দ্বারা দুধ দোহন করলে দুধ উৎপাদনের মান ভালো হয়।
৭. গরু শান্ত থাকলে দুধ দোহনে সুবিধা হয়। দুধ দোহনের ঘরের পরিবেশ শান্ত থাকা জরুরি। চিৎকার-চেঁচামেচিতে গরুর দুধ দোহনের অসুবিধা হতে পারে।
৮. গরুর শরীরের ভিটামিন, মিনারেলের অভাব পূরণ করতে বাজারজাত মিক্সড পাউডার খাওয়ানো যেতে পারে।
আরও পড়ুন: Khaki Campbell Duck Farming: অধিক অর্থ উপার্জনে পালন করা খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস
Share your comments