পশুপালন কৃষকদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কৃষি কাজ, এখান থেকে তারা দুধ, সার এবং অন্যান্য কৃষি পণ্য পায়। গ্রামীণ অর্থনীতিতে পশুপালনকে বিশেষ বিবেচনা করা হয়, কারণ এটি অনেক মানুষের আয়ের প্রধান উৎস। অধিকাংশ কৃষকই কৃষিকাজের পাশাপাশি পশুপালন করতে পছন্দ করেন। এমতাবস্থায় পশুর স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি উন্নত দুধ উৎপাদন বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হয়। গরু, মহিষ ও ছাগলের মতো দুগ্ধজাত পশুর রোগের কারণে দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খামারিরা তাদের দুগ্ধজাত পশুর সঠিক পরিচর্যা করলে তাদের আয় বাড়তে পারে। এ জন্য কৃষককে মূলত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
চলুন কৃষি জাগরণের এই প্রবন্ধে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে দুগ্ধজাত পশুর দুধ উৎপাদন দ্রুত বাড়বে?
-
কৃষকদের উচিত তাদের দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তাদের দুগ্ধজাত পশুদের তাজা এবং পরিষ্কার খাদ্য সরবরাহ করা। খাদ্য হিসেবে সবুজ পশুখাদ্য ও দানা দিতে পারেন। আপনার পশুর স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত এবং তাদের টিকা দেওয়ার দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। আপনার প্রাণীদের বিশ্রামের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা দেওয়া উচিত। এ ছাড়া খামারিকে দুধ খাওয়ার সময় নির্ধারণ করে পশুকে শান্ত রাখতে হবে।
-
দুধ উৎপাদন বাড়াতে, আপনার পশুকে গ্রীষ্মকালে নিয়মিত গোসল করাতে হবে, যাতে তারা মাছি বা অন্যান্য পোকামাকড় থেকে রক্ষা পায়। গ্রীষ্মে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পশুদের গোসল করানো উচিত। শীতকালে, প্রাণীদের ঠান্ডা থেকে রক্ষা করা উচিত এবং তাদের উপর গরম কাপড় ঢেকে রাখা উচিত। কৃষকদের উচিত যতটা সম্ভব তাদের দুগ্ধ পশুদের পান করার জন্য জল সরবরাহ করা। আপনার পশুদের একটি ছায়াময় জায়গায় বেঁধে রাখুন এবং তাদের শেডে পর্যাপ্ত বায়ুচলাচলের অনুমতি দিন।
আরও পড়ুনঃ ভাল কলার ফলনের জন্য সেপ্টেম্বরে এই ১০ টি টিপস অনুসরণ করুন!
-
দুগ্ধজাত পশুদের সুস্থ রাখার পাশাপাশি তাদের দুধ উৎপাদনের উন্নতির জন্য তাদের সুষম খাদ্য দেওয়া খুবই জরুরী। ভালো দুধ উৎপাদনের জন্য পশুকে প্রোটিন দেওয়া খুবই জরুরি। কৃষকদের তাদের পশুদের দানাদার আকারে ডাল, তৈলবীজ কেক এবং অন্যান্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। ভাল দুধ উৎপাদনের জন্য, আপনি দানাগুলিতে জোয়ার, বাজরা এবং ভুট্টাও মেশাতে পারেন।
-
দুগ্ধজাত পশুদের জন্য চর্বি খুব ভালো বলে মনে করা হয়। পশুর শরীরে চর্বির সরবরাহ বজায় রাখতে, আপনার খাদ্যে তৈলবীজ অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। চর্বি সরবরাহ করতে, আপনি আপনার পশুকে সরিষার কেক, তিলের পিঠা, লাহি কেক, চিনাবাদামের কেক এবং ফ্ল্যাক্সসিড কেক খাওয়াতে পারেন। এতে দুধের পরিমাণ ও গুণমান বৃদ্ধি পায়।
-
দুগ্ধজাত পশুদের স্বাস্থ্যের জন্য খনিজ ও ভিটামিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। খামারিদের পশু খাদ্যে খনিজ মিশ্রণ ও ভিটামিন মেশাতে হবে। এছাড়া দুগ্ধজাত পশুর দুধ উৎপাদন বাড়াতে গমের ভুসি ও তুষও দিতে পারেন।
Share your comments