মৌমাছিরা বিভিন্ন প্রজাতির হয়। কিছু প্রজাতি সম্বন্ধে নীচে আলোচনা করা হল।
এপিস ইন্ডিয়া - এদেরকে ইন্ডিয়ান মৌমাছিও বলা হয়। এরা গাছের কোঠরে, বাড়ীর কোণে, ফাটা দেওয়ালে মৌচাক বানায়। এরা শান্ত প্রকৃতির এবং মাঝারি সাইজের হয়। এরা সাধারণত সমতল জায়গায় মৌচাক বানায়। তবে কিছু কিছু মৌমাছি পাহাড়ি এলাকাতেও মৌচাক বানায়। তাছাড়া গর্তে , গুহাতে, উঁচু বাড়ীতে ও গভীর জঙ্গলেও এরা মৌচাক বানায়। পাহাড়ি এলাকার মৌমাছিরা সমতল এলাকার মৌমাছিদের থেকে শান্ত ও উজ্জল হয়। এদের শান্ত স্বভাবের এর জন্য এবং এদের অনেক পরিমানে পাওয়া যায় বলে এদের ব্যবসার খাতিরে ব্যবহার করা যেতে পারে। এদের তৈরি মৌচাক ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। একেকটি মৌচাক বছরে ৩-৬ কেজি মধু হয়।
এপিস দোরসাটা - এরা সাধারণত পাহাড়ি এলাকাতে থাকে। সেইজন্য এদেরকে রক মৌমাছি বলা হয়। অনেক সময় এদেরকে মনস্টার মৌমাছিও বলা হয়। এরা আকারে বড় হয় এবং আক্রমনাত্বক হয়। এদের রং নীল হয়। এদের পিছনদিকে হলুদ রঙের লোম থাকে। এরা গাছের শাখা প্রশাখা উঁচু বাড়ীতে এবং পাহাড়ি এলাকাতে বড় মৌচাক তৈরি করে। এদের মৌচাক গুলি ১.২ মিটার লম্বা এবং ১ মিটার চওড়া হয়। এরা মানুষদের আক্রমণ করে। এদের আক্রমনাত্বক স্বভাবের জন্য এদেরকে ব্যবসায়িক ভাবে ব্যবহার করা কষ্টকর। একেকটা মৌচাক বছরে প্রায় ৩৭ কেজি মধু উৎপন্ন করে।
এপিস ফ্লরেয়া - এরা মৌমাছিদের প্রজাতির মধ্যে সবথেকে ক্ষুদ্র। এইজন্য এদেরকে ক্ষুদ্র মৌমাছি বলে। এরা সমতল এলাকাতে থাকে এবং এরা গাছের শাখা প্রশাখাতে, ফাটা দেওয়ালে, ছাদের কোনায় আর গর্তে মৌচাক বানায়। এরা ছোটো মৌচাক বানায় যেগুলো আকারে ১০-১৫ সেন্টিমিটার হয়। এদের মধু উৎপাদন করার ক্ষমতা অনেক কম, একেকটি মৌচাক থেকে ৩০০-৪৫০ গ্রাম মধু পাওয়া যেতে পারে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এদের পাওয়া যায়।
এপিস মেলিফেরা - ইউরোপ মহাদেশের এটি একমাত্র মৌমাছির প্রজাতি । এদেরকে ইউরোপইয়ান মৌমাছিও বলা হয়। এখন কিছু কিছু এশিয়ার দেশ এই মৌমাছির চাষ করে। এরা সাধারণত ছোটো গাছে এবং বাড়ীর কোনাতে মৌচাক বানায়। এরা বছরে ৪৫-১০০ কেজি মধু দেয় প্রত্যেক মৌচাক থেকে।
এপিস সেরানা - এদেরকে এশিয়াতে পাওয়া যায়। এরা মাঝারি আকারের হয়। এরা সমতলে এবং জঙ্গলে থাকে। এরা শান্ত প্রকৃতির হয়। সমতলে যারা থাকে তারা ছোটো এবং হলুদ রঙের হয়। পাহাড়ি এলাকাতে যারা থাকে তারা বড় হয় আর কালো রঙের হয়। একেকটি মৌচাক থেকে ১৮-২০ কেজি মধু পাওয়া যেতে পারে।
- দেবাশীষ চক্রবর্তী
Share your comments