মাছ চাষে ঘাসের ব্যবহার

পুকুরে যথেষ্ট ঘাস (শতকে ১ কেজি হিসাবে) প্রয়োগ করলে মাছ খা’ক না খা’ক, ঘাসের পঁচন (Decomposition) শুরু হলে তার নির্যাস জৈব সার হওয়ায় প্রচুর জু’প্লাঙ্কটন তৈরি সাপেক্ষে সব ধরনের মাছের আমিষ জাতীয় খাবার সরবরাহ করে। ঘাস যখন আধ-পঁচা (Semi decomposed ) হয় তখন রুই মাছের বিশেষ পছন্দের খাবার হয়; এই ধরনের খাবার খেলে রুই মাছের রঙ মেরুন-লাল রঙের হয়; যেটির বাজার মূল্য বেশী। ঘাসের মধ্যে ‘ভিটামিন বি’ এর উপস্থিতি বেশী এবং এই ‘ভিটামিন বি’ মাছের খাদ্য হজম ও আত্তীকরনে সহায়তা করে।

স্বপ্নম সেন
স্বপ্নম সেন
fish

১। গ্রাস কার্প ও সর পুটী মাছ ঘাস খায়; কিন্তু  ঘাস খাওয়ার পরবর্তীতে fish dung, সিলভার কার্পের বিশেষ প্রিয় খাবার ।

২। ঘাস প্রয়োগ করার ২-৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘাসের গায়ে যে ‘পেরিফাইটন’ (Periphyton)   জমা / সৃষ্টি  হয় তা মাছের আমিষ  জাতীয় এবং পছন্দের খাবার।

৩। পুকুরে  যথেষ্ট ঘাস (শতকে ১ কেজি হিসাবে) প্রয়োগ করলে মাছ খা’ক না খা’ক, ঘাসের পঁচন (Decomposition) শুরু হলে তার নির্যাস জৈব সার হওয়ায় প্রচুর জু’প্লাঙ্কটন তৈরি সাপেক্ষে   সব ধরনের মাছের আমিষ  জাতীয় খাবার সরবরাহ করে।

৪। ঘাস যখন আধ-পঁচা (Semi decomposed ) হয় তখন রুই মাছের  বিশেষ পছন্দের খাবার হয়;   এই ধরনের খাবার খেলে রুই মাছের রঙ মেরুন-লাল রঙের হয়; যেটির বাজার মূল্য বেশী।

৫। ঘাসের ঝুলন্ত (Suspended) এবং সূক্ষ্ম অংশে (Fine particle ) প্রচুর ‘ব্যাকটেরিওপ্ল্যাঙ্কটন’  বংশবিস্তার করে ও উৎপাদিত হয়; যা মাছের উচ্চ মানের আমিষের প্রয়োজন মেটায়।

৬। ঘাস পুরো পঁচে  গেলে (Completely decomposed) মৃগেল ও কাতলা মাছের খাবার হয়।

৭। পঁচে যাওয়া ঘাসের তলানিতে ‘কাইরোনমিড’ (Chironomid) বংশ বিস্তার করে মাছের  (বিশেষ করে কার্পিও/  মিরর কার্প ও মৃগেল সহ তলায় বাসকারী মাছের) আমিশ জাতীয়   খাবারের জোগান দেয়; (কাইরোনমিড এর খাদ্য রুপান্তরের হার হ’ল এর গ্রীহিত খাদ্যের   প্রায় ৭৫%, যেখানে অন্যান্য প্রাণীর খাদ্য রুপান্তরের  হার ২২-৩০% এর  বেশি নয়  ) । 

৮। ঘাসের মধ্যে ‘ভিটামিন বি’ এর উপস্থিতি বেশী  এবং এই ‘ভিটামিন বি’ মাছের খাদ্য হজম ও আত্তীকরনে সহায়তা করে।

৯। ঘাসকে জৈব সার হিসাবে ব্যবহার করলে  পুকুরের জল ধারন ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে।

১০। ঘাস ব্যবহার করলে জলের রঙ সবুজ/নীলচে থাকে।

 

fish

১১। পুকুরের ঘাস প্রয়োগ করলে মাছের স্বাদ, গন্ধ ও রঙ একেবারেই প্রাকৃতিক রুপেই পাওয়া যায়।

১২। পুকুরের ৫-৮% জায়গায়  কচুরি পানা/অন্যান্য জলজ ঘাস জন্মানোর সুযোগ দিলে  মাছ চাষিরা যে সুবিধা গুলি চাষের ক্ষেত্রে পাবেন; সেগুলো হল - 

-   পানার শিকড়  অথবা জলজ ঘাসে  ‘পেরিফাইটন’ জমা/ সৃষ্টি হবে,

-   কচুরি পানার উপস্থিতি জুওপ্ল্যাঙ্কটনের বংশবৃদ্ধির জন্য ইতিবাচক (Friendly),[ দেখা গেছে  এর চার পাশে ‘জুওপ্ল্যাঙ্কটনের’ ডিম              গুলো ‘কেরোসিন’ তেলের মত ভাসতে দেখা যায়]   

-   গোবর/ জৈব সারের জন্য বাড়তি পয়সা গুনতে হবেনা, 

-  প্রচণ্ড গরমে তাপ দাহের মধ্যেও  মাছ স্বাভাবিক জৈবিক ক্রিয়ার ভিতরে থাকবে,

- শীতেও মাছ কম কষ্ট পাবে, 

- তাপের প্রভাবে পুকুরের জলের জলীয় বাস্পে পরিনত হওয়া কমাবে,

- মুক্ত অ্যামোনিয়া ঘাস/ পানার শিকড়  দিয়ে শোষিত হওয়ায় ‘অ্যামোনিয়াজনিত 

- বিষাক্ততায়’ (Ammonia toxicity) মাছের মৃত্যুর প্রবণতা কমে আসবে,

- জলের ঘোলা ভাব কমাবে,

- মাগুর-শিং মাছের আশ্রয় স্থল হিসাবে কাজ করবে,

- জলজ ঘাসের শিকড়ে জন্ম নেয়া ও লুকিয়ে থাকা প্রানি কূল (কেঁচো ও কাইরোনমিড দলভুক্ত)  মাছের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হবে।

- দেশি ঘাসের পাশাপাশি আবাদ কৃত ঘাস ‘নেপিয়ার’ উৎপাদন সাপেক্ষে সরবরাহ করা সহজতর।

             - নেপিয়ারে দেশি ঘাসের চাইতে পুষ্টি গুন বেশীই,

             - নেপিয়ার অত্যন্ত দ্রুত বর্ধনশীল, 

             - ঘাস প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা GOOD AQUACULTURE PRACTICE কে চর্চা করতে পারব।

 - রুনা নাথ

Published On: 19 April 2018, 02:01 AM English Summary: Use of grass in fisheries

Like this article?

Hey! I am স্বপ্নম সেন . Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters