বর্তমানে কিছু কৃষক কৃষিকাজের পাশাপাশি পশুপালনের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন। পশুপালনের মধ্যে ছাগল পালন করলে আপনি এখন অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারেন। ছাগল পালনে সবচেয়ে বড় সুবিধা হ'ল বাজার এর জন্য স্থানীয়ভাবে উপলব্ধ হয়। যার কারণে বাজারের কোনও সমস্যা নেই। ছাগল, গ্রামাঞ্চলে বরাবরই জীবিকার নিরাপদ উত্স হিসাবে স্বীকৃত।
একটি ছোট প্রাণী হওয়ার কারণে ছাগল রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয়ও স্বল্প। এমনকি খরার সময়ও এর খাবার সহজেই পাওয়া যায়। এছাড়া এটি সহজে বিক্রি করে নিজেদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা যায়। অর্থনৈতিক সুবিধাসহ এর চাহিদা বেশি থাকায় অনেক প্রগতিশীল কৃষক এবং শিক্ষিত যুবক বাণিজ্যিকভাবে এই শিল্প গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।
সারা পৃথিবী জুড়ে অনেক ধরনের ছাগলের জাত আছে। এরমধ্যে কিছু জাত তার মাংসের জন্য ও কিছু জাত ডেয়ারির জন্য বিখ্যাত। অনেকে এদেরকে পোষা প্রাণী হিসাবেও ব্যবহার করে। পুরো পৃথিবীতে প্রায় ৩০০ রকমের ছাগলের জাত আছে। এরা আকারে, আয়তনে, এবং বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী একে অপরের থেকে আলাদা। সাধারণতঃ দুধ, মাংস, এবং চামড়ার জন্য এদের ব্যবহার করা হয়। সব ছাগল সব ধরনের জন্য ব্যবহার করা হয় না। ব্যবসার জন্য এদের প্রয়োজন হলে, সবসময় ভালো প্রজাতির ছাগল ব্যবহার করা উচিত।
ডেয়ারি ছাগলের জাত (Dairy Goat Breed) -
এই ধরনের ছাগল দুধ দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। সানীন, টোগেনবার্গ, বারবারি, যামুনাপুরি খুব ভালো জাতের দুধ দেওয়া ছাগল। কিছু ডেয়ারি জাত ছাগল মাংসের জন্নো ব্যবহার করা যেতে পারে।
মাংস জাত ছাগল (Goat Breed For Meat Purpose) -
এই ধরনের ছাগল মাংসের জন্য বিখ্যাত। মাতো, ব্ল্যাক বেঙ্গল মাংস জাত ছাগলের উদাহরণ।
চামড়া জাত ছাগল -
এই ধরনের ছাগলের চামড়া খুব উন্নত মানের হয়। এদের চামড়া খুব জনপ্রিয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে এটি খুব মূল্যবান। ব্ল্যাক বেঙ্গল, মারাডি হচ্ছে এই ধরনের জাতের উদাহরণ।
কিছু জাতের নাম, উদ্দেশ্য এবং কোন দেশে পাওয়া যায় তার একটা তালিকা দেওয়া হলো।
জাতের নাম | ব্যবহারের উদ্দেশ্য | দেশ |
এলপাইন | দুধ | ফ্রেঞ্চ আল্পস |
বারবারি | মাংস | ভারত |
ব্ল্যাক বেঙ্গল | মাংস, চামড়া | বাংলাদেশ |
ডন | দুধ, চামড়া | রাশিয়া |
আইরিশ | মাংস, দুধ | আয়ারল্যান্ড |
কিকো | মাংস | নিউজিল্যান্ড |
খারি | মাংস, চামড়া | নেপাল |
কুচি | দুধ, মাংস | ভারত |
সিরোহি ও ব্ল্যাক বেঙ্গলের মতো উন্নত জাতের ছাগল প্রতি কেজি ৩,৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। ছাগল পালনের ব্যয় মাত্র ১০,০০০ টাকা। আর কেউ যদি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ছাগল পালন করেন, তবে তার মোট বার্ষিক আয় ৫০,০০০-৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ছাগল পালন গ্রামের বেকার যুবক/মহিলাদের কর্মসংস্থানের এক অনন্য পন্থা।
আরও পড়ুন - জেনে নিন পুকুরের সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে সিঙ্গি মাছ চাষের আধুনিক পদ্ধতি (Singi Fish Cultivation)
Share your comments