কৃষিক্ষেত্রে ফলন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কৃষকেরা কীটনাশক ব্যবহার করেন।তবে কৃষকদের নির্বিচারে কীটনাশক ব্যবহারের কারণে পরিবেশে দূষণ দেখা দেয়। কীটনাশক মিশিত ফসল গ্রহণের ফলে মানদেহেরও ক্ষতি হয়। তাই এখন অনেক রাজ্যেই জৈব সারের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়, কারণ জৈব সারের চাষকৃত ফসলে কোন ক্ষতি হয়না, ফলে রাসায়নিকের পরিবর্তে বাড়ছে জৈব সারের চাহিদা। বিশেষত জলবায়ু এবং মাটির প্রকৃতির উপর নির্ভর করে কোন মাটিতে কি ধরণের জৈব সার প্রয়োজন। একমাত্র এ বিষয়ে দক্ষ কর্মীরা ল্যাবরেটরিতে মাটি পরীক্ষার (Soil test) মাধ্যমে বুঝতে পারেন, কোন মাটিতে কোন ধরণের এবং কতটা পরিমাণে সারের প্রয়োজন। এমনকি, মাটির উর্বরতা ও ফলন বৃদ্ধি বিষয়ক তথ্যও তাঁরাই সরবরাহ করতে পারেন। সেই কারণে বায়ো-ফার্টিলাইজার টেকনোলজির জ্ঞান রয়েছে, বর্তমানে এমন পড়ুয়াদের চাহিদা ব্যাপক এবং এই চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। সম্প্রতি নিমপীঠের বিবেকানন্দ ইন্সটিটিউট অফ বায়োটেকনোলজি এই বিষয়ে এক বৎসরের একটি স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্স (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত) পড়াচ্ছে।
কারা পড়তে পারে?
যে কোন শাখায় স্নাতক হলেই এই কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদন করা যাবে। তবে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র/ছাত্রী হলে তাদের বিষয়টি বুঝতে সুবিধা হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে আবেদনকারীকে ভর্তি নেওয়া হবে। বর্তমানে এই কোর্সে ভর্তি চলছে, এ বছরের শেষে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। ২০ টি আসনে সরকারী সংরক্ষণ অনুযায়ী পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া হবে।
কীভাবে আবেদন করা যাবে?
আবেদনের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট www.vibsran.org থেকে ফর্ম ডাউনলোড করতে হবে। আবেদন ফি ২৫০ টাকা, অন্তিম সময়সীমা ৩১ শে অক্টোবর। এই সময়ের মধ্যে আবেদনকারীর ফর্ম প্রদত্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঠিকানায় (বিবেকানন্দ ইন্সটিটিউট অফ বায়ো-ফার্টিলাইজার, শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রম, নিমপীঠ, পিন – ৭৪৩৩৩৮) জমা করতে হবে।
কোর্স ফি – পড়ার জন্য খরচ সর্বমোট প্রায় ২৭০০০ টাকা। বহিরাগতদের হোস্টেলে থেকে পড়ার সুবিধা রয়েছে।
কোর্সটিতে পড়ানো হবে মাইক্রোবায়োলজি, প্ল্যান্ট নিউট্রিশন, সয়েল অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট, এগ্রিকালচার মাইক্রোবায়োলজি, টিস্যু কালচার, প্ল্যান্ট প্রোটেকশন ইত্যাদি বিষয়গুলি। এখানে থিওরির সাথে প্র্যাক্টিকালে বেশী জোর দেওয়া হয়। এই কোর্স চলাকালীন পড়ুয়াদের ইন্টার্নশিপের সুযোগ প্রদান করা হবে। অর্থাৎ তাদের পাঠানো হবে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং- এ। এ বিষয়ে বিশদ তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন অমরজ্যোতি রায়-এর সাথে। চলভাষ – ৮২৫০৯৪৩০৬০/৯১২৬০১১৮৪৮।
কর্মক্ষেত্র –
জৈব সার ও জৈব কীটনাশক প্রস্তুতকারক সংস্থা, সয়েল টেস্টিং ল্যাব, এগ্রিক্লিনিক – এ সকল বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে কাজের ব্যাপক সুযোগ। এছাড়া দক্ষ কর্মী নিজের উদ্যোগে সার তৈরির বিভাগও করতে পারেন। এক্ষেত্রে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবেন।
পরিশেষে বলা যায়, এই কোর্সটি করলে ভবিষ্যতে এর থেকে উপার্জন করতে পারবেন এই বিষয়ের পড়ুয়ারা এবং সুনিশ্চিতভাবে তাদের এক সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে উঠবে।
তথ্যসূত্র – অমরজ্যোতি রায়
অনুবাদ – স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
Share your comments