প্রতিদিন একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের ৩৫ গ্রাম তৈল বা ফ্যাটের প্রয়োজন হয়। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৯ ধরনের তৈল বীজের চাষ হয়। যেমন সরষে, তিল, সূর্যমূখী, বাদাম, সয়াবিন, কুসুম, নাইজার, তিসি, ও রেড়ি(অভোজ্য তেল)। বাজারে বাদাম হিসেবে চিনে বাচামের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে সাথে সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করলে এর থেকে উৎকৃষ্ট মানের তেল পাওয়া যায় যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।
চিনে বাচামের চাষ পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত বর্ননা দেওয়া হল –
উন্নত জাত – জে এল-২৪, এ কে-১২-২৪, আই সি জি এস-১১, টি এ জি-২৪।
চাষের জমি – জল নিকাশী ব্যবস্থাযুক্ত বেলে দোঁয়াশ মাটি এর জন্য উপযুক্ত।
বীজ বোনার সময় – বাদাম বছরে দুবার (১)প্রাক খরিফ (ফাল্গুন-চৈত্র) ও (২)খরিফ (জৈষ্ঠ-আষাঢ়) মরশুনে বোনা যায়।
বীজের হার – খোসা ছাড়ানো বাদাম একর প্রতি ২৫-৩৫ কেজি লাগবে।
বীজ শোধন – থাইরাম ২-২.৫ গ্রাম প্রতি কেজি বীজে ভালোভাবে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। এক একরের বীজের সাথে ৪০০ গ্রাম রাইজোবিয়া কালচার মেশাতে হবে।
জমি তৈরি – ৪/৫ বার লাঙ্গল বা মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নেওয়অ জরুরি।
সার প্রয়োগ – খরিফ মরশুমে বিনা সেচে চাষের সময় শেষ চাষের আগে ৮ কেজি নাইট্রোজেন, ১২ কেজি ফসফরাস ও ২০ কেজি সিঙ্গল সুপার ফসফেট ভালোভাবে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। সিঙ্গল সুপার ফসফেট ফসলে সালফারের চাহিদা মেটাবে। ফুল এলে ৮০-১০০ কেজি জিপসাম প্রয়োগ করতে হবে।
বীজ বপন – বীজ সারিতে বুনতে হবে। সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেমি।
পরিচর্যা – ফুল ফোটার আগে নিড়ানী দিয়ে মাটি আলগা করে দিলে ফুলের যে অংশ মাটিতে ঢুকে যায় তা ঢোকার পক্ষে সহজ হবে।
শস্য সুরক্ষা – টিক্কা রোগ প্রতিরোধ করতে মাটিতে ম্যাগনেশিয়াম প্রয়োগ জরুরী। মরচে রোগে কার্বেন্ডাজিম + ম্যানকোজেবের ২.৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে। জাবপোকা, চিরুনী পোকা, লেদা পোকার জন্য ফিপ্রোনিল ১ মিলি প্রতি লিটার জলে স্প্রে করতে হবে।
ফসল কাটা – মাটির তলা থেকে বাদাম তুলে যদি দেখা যায় খোসার ভেতরের দিক কালো ছোপ চেখা দিলে ও দানা খোসার ওপরের রং লালচে হয়ে এলে বাদাম তোলার জন্য উপযুক্ত হয়। ভালোভাবে না বুঝে দানা তুলে নিলে দানায় তেলের ভাগ কমে যেতে পারে ও সেই দানা বীজ হিসেবে ব্যবহারের উপযুক্ত হবে না।
- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)
Share your comments