বীজবাহিত রোগের হাত থেকে বীজ ও ফসল বাঁচানোর জন্য বীজ শোধন অত্যন্ত জরুরী। চাষের প্রাথমিক পর্যায়ে বীজশোধন করা থাকলে পরিচর্যা কালে খরচ ও শ্রম বাঁচিয়ে ভালো উৎপাদন পাওয়া যায়। নামি সংস্থার বীজ পুরো প্যাকেট শুদ্ধ কিনলে তা শোধন করা থাকে ও প্যাকেটের পিছনে লেখা থাকে। কিন্তু খুচরো কেনা বীজ বা নিজের তৈরি বীজের ক্ষেত্রে বীজ শোধন আবশ্যিক। তিন ভাবে বীজ শোধন করা যায়।
গরম জলে বীজ শোধন – কপি জাতীয় ফসলের বীজ, বেগুন, টমেটো, লঙ্কা ইত্যাদি ফসলের বীজ এই পদ্ধতিতে শোধন করে জীবানুঘটিত রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা যায়। এই পদ্ধতিতে ৪৮ – ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম জলে ১৫ – ২০ মিনিট বীজ ভিজিয়ে পাত্রের মুখ বন্ধ করে বীজ তুলে রেখে ছায়াতে শুকিয়ে নিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে জলের তাপমাত্রা যেন ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার বেশী না হয়, বেশী হলে বীজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর জন্য গরম জলের পাত্রে এক টুকরো মোম ফেলে দিলে মোম গলতে শুরু করলে তাপ দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
শুকনো পদ্ধতিতে বীজ শোধন – এই পদ্ধতিতে জৈব রোগ নাশক ট্রাইকোডারমা ভিরিডি ও সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ৫ গ্রাম করে বা শুধু ট্রাইকোডারমা ভিরিডি ১০ গ্রাম প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ভালোভাবে মেশাতে হবে। রাসায়নিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেকোন একটি বীজ শোধনকারী রোগনাশক যেমন - ডায়থেন ২ গ্রাম / কেজি বীজের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। ভালো ভাবে মেশানোর জন্য অল্প বীজ হলে বীজশোধক পাউডার বীজ একটি মুখ বন্ধ পাত্রে নিয়ে ৮ – ১০ মিনিট ভালো ভাবে ঝাঁকিয়ে মেশাতে হবে। বীজের পরিমাণ বেশি হলে পরিষ্কার বড় পাত্রে বীজ ও বীজশোধক রেখে গ্লাভস পরে মাখিয়ে নিতে হবে। জৈব বীজশোধকের বেলায় বীজের গায়ে অল্প জলের ছিটা দিলে ভালো হয়।
আরও পড়ুন কীটনাশক বিক্রির লাইসেন্সের আবেদন পত্রের সঙ্গে প্রদেয় নথিপত্রের তালিকা
ভিজে পদ্ধতিতে বীজ শোধন – ৫ গ্রাম ট্রাইকোডারমা ভিরিডি ও ৫ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স বা শুধু ১০ গ্রাম ট্রাইকোডারমা প্রতি লি. জলে গুলে ১/২ – ১ ঘন্টা বীজ ভিজিয়ে ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে। রাসায়নিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কার্বেন্ডাজিম / থাইরাম ২ মিলি প্রতি লিটার জলে গুলে ১/২ ঘন্টা বীজ ভিজিয়ে ছায়ায় শুকিয়ে নিয়ে বোনার জন্য ব্যবহার করতে হবে। ছোট বীজ যেমন বেগুন, টমেটো, লঙ্কা, কপি ইত্যাদির ক্ষেত্রে একটি সুতির কাপড়ে বীজ বেঁধে পুটুলি করে ওষুধ গোলা জলে বীজ ভেজানো সুবিধাজনক।
- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)
Share your comments