জৈব ও অজৈব বা রাসায়নিক দুরকম উৎস থেকেই গাছের খাদ্য উপাদান আসে কিন্তু মাটির কথা ভুলে শুধু সবজিকে বড় করতে আমরা জৈব সারের গুরুত্বের দিকটি মাথায় রাখি না। জৈব বস্তুর অভাবে মাটির স্বাস্থ্য ও প্রকৃতি ক্রমশ চাষের অনুপযোগি হয়ে উঠছে। চাষের জমিকে চাষযোগ্য রাখতে তাই রাসায়নিক সারের সাথে সাথে জৈব সার প্রয়োগ জরুরি।
- যে কোন সবজি চাষ শুরুর আগে প্রাথমিক চাষের সময় একর প্রতি ৪-৫ টন শুকনো গোবর সার / ১ – ১.৫ টন কেঁচো সার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে।
- এই গোবর / কেঁচো সার প্রয়োগের ৭ – ১০ দিন আগে ১০০ কেজি সার ছায়া জায়গায় রেখে তার সাথে ১ কেজি ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি / হার্জিয়ানাম ও ১ কেজি সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স মিশিয়ে উল্টে পাল্টে জমিতে মিশিয়ে দিন।
- জৈব সার চাষের সময় দেবার সময় একর প্রতি ৩ কেজি নিমের নির্জাস দানা / ৩০০ কেজি নিমখোল ও ১০ কেজি ভ্যাশ ( Vascular Arbascular Mychoriza) পাউডার জমিতে দিন।
- এই জৈব সারের সঙ্গে রাসায়নিক সার দেবেন না। সবজির ভেদে জমি তৈরীর রকম ফের থাকায় জৈব সার ও খাদ্য উপাদান ও জৈব রোগনাশক প্রয়োগের থেকে ৫ / ৭ দিন ব্যবধান রেখে শেষ বারে বীজ বোনা বা চারা রোয়ার আগে সবজি অনুযায়ী ‘টেলর মেড’ নির্দিষ্ট রাসায়নিক সার প্রয়োগ করুন।
সবজি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সার ব্যবস্থাপনা
- সবজি অনুযায়ী একর প্রতি নাইট্রোজেন – ফসফরাস- পটাশ সারের স্মার্ট প্যাকেজ সাজিয়ে দিলাম। নির্দিষ্ট সবজি দেখে এন- পি- কের মাত্রা অনুযায়ী ইউরিয়া, সিঙ্গল সুপার ফসফেট ও মিউরেট অফ পটাশ প্রয়োগ করুন।
- সব সবজিতেই ১/২ নাইট্রোজেন + সমস্ত ফসফরাস + ১/২ পটাশ সার শেষ জমি তৈরীর সময় দিয়ে দিন।
- প্রথম চাপান সার বীজ বোনা / চারা রোয়ার ২১ – ২৫ দিনে বাকী নাইট্রোজেনের ১/৪ ও পটাশের ১/৪ ভাগ দিয়ে সেচ ও গোড়ায় মাটি তুলে দিন।
- দ্বিতীয় চাপানের ক্ষেত্রে বাকী ১/৪ নাইট্রোজেন + ১/৪ পটাশ বোনা রোয়ার ৪২ – ৪৫ দিনে সেচ ও গোঁড়ায় মাটি তোলার সঙ্গে সম্পন্ন করুন।
- জমির অনুখাদ্য দেখে একর প্রতি ১০ কেজি জিঙ্ক সালফেট ৪ কেজি বোরক্স ও ৪০০ গ্রাম অ্যামোনিয়াম মলিবডেট শেষ চাষে মিশিয়ে দিন। তবে বেশীরভাগ চাষিরা মাটি পরীক্ষা করেন না। তাই অনুখাদ্য বেশী-কম হওয়ায় সমস্যা থেকে বাঁচতে প্রথম ও দ্বিতীয় চাপান প্রয়োগের সময় জলে গোলা গ্রেড – ২ অনু খাদ্য মিশ্রন ২-৩ গ্রাম / লিটার জলে গুলে স্প্রে করে দিন।
সারনীতে সবজি অনুযায়ী স্মার্ট সার ব্যবস্থাপনা
সবজি |
একর প্রতি কেজিতে প্রয়োগ অনুপাত (নাইট্রোজেন : ফসফরাস : পটাশ) |
টমাটো |
৭০ : ৩৫ : ৩৫ |
ক্যাপসিকাম |
৪০ : ৩৫ : ৩৫ |
লঙ্কা |
৩৬ : ২৪ : ২৪ |
গরমের বেগুন |
৪৮ : ২৪ : ২৪ |
পেঁয়াজ |
৬০ : ৪০ : ৪০ |
কুমড়ো জাতীয় সবজি |
৫০ : ২৫ : ২৫ |
তথ্য সূত্র: ড. শুভদীপ নাথ (সহ উদ্যানপালন আধিকারিক, উ: ২৪ পরগণা)
- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)
Share your comments