গোটা বিশ্বে আখের উৎপাদনে ভারত বর্ষ দ্বিতীয় স্থান রয়েছে ব্রাজিল এর পরই আমাদের দেশের স্থান। উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে আখ চাষে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করে। কিন্তু অন্যান্য রাজ্যেও আখ চাষ চাষীদের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয়। তাই এর রোগ ব্যাধি এলে এই চাষীরা দিশেহারা হয়ে পরে। আর এই আখের একটি প্রধান রোগ হলো উইল্ট।
আখের বয়স যখন ৮-৯মাস হলে এ রোগের আক্রমণ দেখা যায়। আক্রান্তর গাছের পাতা নেতিয়ে পড়ে এবং উপর থেকে শুকাতে থাকে। আক্রান্ত আখ লম্বালম্বিভাবে চিড়লে কান্ডের মধ্যভাগে গিরার নিকটে গাঢ় লাল রং দেখা যায়। লাল পচা রোগের মতই উইল্ট রোগে আক্রান্ত আখের গিটের অংশে ইটের ন্যায় লাল হয় কিন্তু এক্ষেত্রে ছোপ সাদা আড়াআড়ি দাগ দেখা যায় না। রোগের প্রকোপ বেশী হলে আক্রান্ত ইক্ষুর ভিতরে ফাঁপা হয় এবং কান্ড শুকিয়ে যায়। খুব অল্প সময়ের মধ্যে আক্রান্ত জমির ইক্ষু শুকিয়ে যায়।
- এই রোগ দেখতে প্রায় লালপচা রোগের মতই।
- আক্রান্ত গাছের পাতাগুলো আস্তে আস্তে হলুদ হয়ে মরে যায়।
- আক্রান্ত গাছ লম্বালম্বি কাটলে ভিতরের অংশে বেগুনি অথবা লাল রং দেখা যায়।
- ভিতরের মজ্জার কোষগুলো শুকিয়ে যেতে থাকে এবং ফাঁপা খোলের মত এলাকার সৃষ্টি হয়।
- চার-পাঁচ মাস বয়সে রোগের আক্রমণ হলেও বয়স্ক আখ ছাড়া অন্য গাছে এ রোগের লক্ষণ ততটা বোঝা যায় না।
প্রতিরোধের উপায়ঃ
বীজ আখ শোধন – আখ লাগানোর আগে আখের টুকরোগুলো ০.১% ব্যাভিস্টিন দ্রবণে (জল ও ব্যাভিস্টিনের অনুপাত ১০০০ : ১) ৩০ মিনিট ধরে শোধন করে রোপণ করতে হবে। হেক্টর প্রতি প্রয়োজনীয় ৭-৭.৫ টন বীজ আখ শোধনের জন্য ২৫০ গ্রাম ব্যাভিস্টিন ২৫০ লিটার জলে মিশিয়ে দ্রবন তৈরী করতে হবে।
আর্দ্র গরম বাতাসে বীজ শোধন ( এম এইচ এ টি) – আখের টুকরো অথবা অর্ধেক বা সম্পূর্ণ আখ এম এইচ এ টি প্লান্টে ৫৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ও ৯৫% এর অধিক আর্দ্রতায় ৪ ঘন্টা শোধন করা হয়। এরপর বীজ ঠান্ডা হলে ০.১% ব্যাভিস্টিন বা নোইন দ্রবণে ৩০ মিনিট শোধন করে মাটিতে রোপণ করতে হবে। তাপ শোধিত বীজ ব্যাভিস্টিন বা নোইন দ্রবণে শোধন না করে সরাসরি রোপণ করলে দেড় গুন বীজের প্রয়োজন হয়।
গরম জলে বীজ শোধন – সম্পূর্ণ আখ বা বীজ খন্ড গরম জলে বীজ শোধন যন্ত্রে ৫০ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রায় ৩ ঘন্টাকাল শোধন করা হয়। শোধিত বীজ ঠান্ডা হলে ০.১% ব্যাভিস্টিন বা নোইন দ্রবণে ৩০ মিনিট শোধন করে মাটিতে রোপণ করতে হবে। তাপ শোধিত বীজ ব্যাভিস্টিন বা নোইন দ্রবণে শোধন না করে সরাসরি রোপণ করলে দুই গুন বীজের প্রয়োজন হয়।
রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার – মোজাইক রোগমুক্ত বীজ প্লটের বীজ ব্যবহার করে এ রোগের আক্রমণ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:এম ইসলাম/বাংলাদেশ
- অমরজ্যোতি রায়(amarjyoti@krishijagran.com)
Share your comments