বাংলা তথা ভারতীয় সিনেমার স্বর্ণযুগের এক অধ্যায়ের যবনিকা পতন। প্রয়াত দাদার কীর্তির স্রষ্ঠা তরুণ মজুমদার । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। গত ১৪ জুন কিডনিজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। রবিবার তাঁকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয়। সেখান থেকে আর তাঁকে ফেরাতে পারেননি চিকিৎসকরা। সোমবার সকাল ১১টা ১৭ মিনিটে মৃত্যু হয় প্রবীণ পরিচালকের।
১৯৩১ সালের ৮ জানুয়ারি অধুনা বাংলাদেশের বগুড়ায় জন্ম তরুণ মজুমদারের। বাবা বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। মাত্র ২৮ বছর বয়সে প্রথম ছবি উত্তম কুমার সুচিত্রা অভিনীত ‘চাওয়া পাওয়া’ ছবিটি দিয়ে সিনেমা জগতে পা রাখেন। এরপর একের পর এক হিট ছবি তরুণ মজুমদারের ঝুলিতে। ‘বালিকা বধূ’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
১৯৬৩ সালে তিনি একক পরিচালক হিসবে কাজ শুরু৷ ১৯৬৫ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নায়ক করে ‘একটুকু বাসা’এবং ‘আলোর পিপাসা’পরিচালনা করেন বসন্ত চৌধুরীকে নায়কের ভূমিকায় রেখে ৷ এর পর টালিগঞ্জে তাঁর যাত্রা ক্রমশই মজবুত হয়ে ওঠে ।
আরও পড়ুনঃ এক বছর পর কলকাতায় মিঠুন চক্রবর্তী, রাজ্য রাজনীতিতে শুরু জল্পনা
আশির দশকের শুরু৷ তখনও ডিজিটাল দুনিয়ার রমরমা নেই৷ বাঙালি সবে কাটিয়ে উঠছে উত্তম-শোক৷ তখনই এল‘দাদার কীর্তি’৷ আদ্যোপান্ত সরল, আবেগপ্রবণ এক বাঙালি যুবককে আঁকলেন তরুণ মজুমদার৷
আরও পড়ুনঃ ভুয়া লিংকে ক্লিক করার পরই অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে গেল অভিনেতার
গত ২২ বছর ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তরুণ মজুমদার। এছাড়াও বর্ষীয়ান পরিচালকের শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা ও ডায়াবিটিস রোগও ছিল। একাধিক জটিলতা নিয়েই SSKM- এ ভর্তি করা হয় তাঁকে। অভিজ্ঞ চিকিৎসক সোমনাথ কুণ্ডু ও সৌমিত্র ঘোষের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। তবে অশক্ত শরীরে নিতে পারেননি চিকিৎসার ধকল। চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন প্রবীণ 'তরুণ'। এও এক ব্যথার উপশম, সমস্ত ক্ষতের মুখে পলি... আপাতত কালের কষ্টিপাথরে লিখে দিয়ে গেলেন এক নাম, সেই নাম চিরতরুণই৷
Share your comments