বিগত বছর থেকে লকডাউনের ধাক্কায় সাধারণ মানুষের আর্থিক হাল জর্জরিত। অনেক ব্যক্তি আছেন যারা নিজের ব্যবসা শুরু করতে চান কিন্তু অর্থাভাবে পারছেন না। তারা সরকারের এই প্রকল্পে লোণ নিয়ে নিজের ব্যবসা শুরু করতে পারেন, আবার অনেকে ব্যবসা সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যেও লোণের আবেদন করে থাকেন। এই প্রকল্পের আওতায় লোণ নিয়ে ব্যবসা করে বহু মানুষ আজ স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।
লোণ অনেকেই নিয়ে থাকেন। কিন্তু আজ আমরা এই নিবন্ধে সরকারের মুদ্রা লোণ সম্পর্কিত তথ্য প্রদান করতে চলেছি। সরকারের মুদ্রা লোণ হল এমন একটি প্রকল্প, যার সহায়তায় আপনি কম সুদে লোণ নিয়ে নিজের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
মুদ্রা লোণ (PM Mudra Loan) -
এই যোজনায় তিন ভাগে লোণ দেওয়া হয়ে থাকে৷ এই তিনটি ভাগ হল -
১) শিশু মুদ্রা লোণ - এই বিভাগের ভিত্তিতে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোণের আবেদন করা যাবে৷
২) কিশোর মুদ্রা লোণ - এর ভিত্তিতে ৫০,০০০ টাকা থেকে ৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোণের আবেদন করা যেতে পারে৷
৩) তরুণ মুদ্রা লোণ – এই বিভাগে ৫,০০,০০০ থেকে ১০,০০,০০০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোণের আবেদন করা যায়৷
প্রধানমন্ত্রীর মুদ্রা লোণ পেয়ে উপকৃত হয়েছেন বহু মানুষ।
প্রধানমন্ত্রীর মুদ্রা লোণ প্রকল্পে সুবিধাভোগী (Beneficiaries of the PM Mudra Loan) -
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণার অন্তর্গত কাঁচরাপাড়ার বাসিন্দা অঞ্জলি তিওয়ারি নামে এক ভদ্রমহিলা জানিয়েছেন, তাদের অবস্থা ভালো ছিল না, কোনরকমে দিন অতিবাহিত হত। তিনি এবং তার স্বামী আয়ের জন্য ব্যবসা করার পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু তাদের কাছে মূলধন ছিল না। এমন সময় তারা এই মুদ্রা লোণের সম্পর্কে শোনেন এবং ব্যাঙ্কে গিয়ে লোণের আবেদন করেন।
তারা জানিয়েছেন যে, এই প্রকল্পের আওতায় তারা ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে চেয়েছিলেন এবং তাদের আবেদন অনুযায়ী ৩০,০০০ টাকা লোণ পেয়েছেন। এখন এই টাকা দিয়ে তারা রান্নার মশলা (খাদ্যপণ্য) উৎপাদন করছেন এবং তাদের জীবনে সমৃদ্ধি এসেছে।
এই রাজ্যেরই আর এক বাসিন্দা শম্পা হালদার তিনিও তার প্রয়োজন মতো মুদ্রা লোণ নিয়ে নিজের মুদি দ্রব্যের দোকান করেছেন। তিনি এও জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আবারও এই প্রকল্পের আওতায় বেশি লোণ নিয়ে তার ব্যবসাকে আরও বাড়াতে চান।
যে যে ব্যাঙ্ক থেকে লোণ দেওয়া হয় -
-
স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া –র বিভিন্ন শাখা
-
সিটিব্যাঙ্ক
-
এইচডিএফসি ব্যাংক
-
ইন্দাসিন্ড ব্যাংক
-
দেনা ব্যাংক
-
কানারা ব্যাংক
-
এলাহাবাদ ব্যাংক
-
কারুর বৈশ্য ব্যাংক
-
ইউকো ব্যাংক
-
ব্যাংক অফ বরোদা
-
ইউনিয়ন ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া
-
এইচডিএফসি ব্যাংক
এছাড়াও আরও কয়েকটি ব্যাঙ্ক মুদ্রা লোণ দিয়ে থাকে।
আবেদন পদ্ধতি –
এনাদের মতো আপনিও মুদ্রা লোণ প্রকল্পের আওতায় লোণ নিয়ে শুরু করতে পারেন নিজের ব্যবসা। দু’ভাবে আপনি মুদ্রা লোণ পেতে পারেন –
১) লোণের জন্য স্থানীয় ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় নথি সহ আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দিন এবং
২) আপনি অনলাইনেও আবেদন করতে পারেন। এর নিম্নে প্রদত্ত লিঙ্কে ক্লিক করুন- https://www.udyamimitra.in/MudraLoan
এই প্রকল্পের আওতায় বহু মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। অর্থ বর্ষ ২০১৯-২০২০ –তে প্রধানমন্ত্রীর মুদ্রা লোণ প্রকল্পের আওতায় অনুমোদিত টাকার পরিমাণ ৩,২৩,৫৭৩.৮৮ এবং এখনও পর্যন্ত লোণ প্রকল্পে নেওয়া হয়েছে ৩,১৬,০৯৯.৩৮ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা সম্পর্কে বিশদে জানতে হলে নিম্নে প্রদত্ত এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট -এ লগ ইন করুন –
প্রকল্পের আওতায় যে কোনও ব্যক্তি সহজেই লোণ নিতে পারবেন। এই স্কিমের আওতায় লোণ নেওয়ার সময় কোনও গ্যারান্টির দরকার নেই। এই প্রকল্পটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের তাদের ব্যবসা সম্প্রসারিত করতে সহায়তা করবে।
আরওপড়ুন - বাংলা শস্য বীমা যোজনায় আপনার নাম রয়েছে তো? কৃষকবন্ধুরা নিজের স্থিতি পরীক্ষা করুন এই পদ্ধতিতে
মুদ্রা লোণ প্রধানমন্ত্রীর প্রচলিত একটি প্রকল্প। কয়েক বছর পূর্বে এর প্রচলন করা হলেও এখনও পর্যন্ত কিছু ব্যাঙ্ক এই প্রকল্পের আওতায় আবেদনকারীকে লোণ দিয়ে থাকে। যে কোন মানুষ, যিনি ছোট ব্যবসার উদ্যোক্তা, তিনি মুদ্রা লোণের জন্য আবেদনের যোগ্য। তবে আবেদনের জন্য ১৮ বছরের উপর বয়স হওয়া আবশ্যিক। মুদ্রা লোণ বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক থেকে দেওয়া হয়। এই লোণ নিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যবসাকে আরও উন্নত করতে পারবেন এবং অনেক মহিলা উদ্যোক্তা, যারা টাকার অভাবে কিছু করতে পারছেন না, তাদেরও সুরাহা হবে।
আরওপড়ুন - বাংলা শস্য বীমা যোজনায় আপনার নাম রয়েছে তো? কৃষকবন্ধুরা নিজের স্থিতি পরীক্ষা করুন এই পদ্ধতিতে
Share your comments