মৃত্তিকা সম্পর্কিত অনেক প্রকল্প সরকার ইতিমধ্যে শুরু করেছে | এইসব প্রকল্পের ব্যাবহারে কৃষকবন্ধুরা তাদের ফসল ফলিয়েছে ব্যাপক হারে | তবে, সরকার প্রচলিত এক পরিকল্পনা মৃত্তিকা স্বাস্থ্য পরিকল্পনা (Soil Health Card Scheme) মাধ্যমে আপনি আপনার আয় বাড়াতে পারেন দ্বিগুন | এই পরিকল্পনার মাধ্যমে কিভাবে আপনি ফলন বাড়িয়ে তুলবেন, তা এই নিবন্ধে বিস্তারিত বলা হবে | এগুলি ছাড়াও আপনি এই প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করে আপনার নিজের ব্যবসাও শুরু করতে পারেন এবং এই ব্যবসা শুরু করার জন্য সরকার আপনাকে আর্থিক সহায়তাও দেবে।
মাটির স্বাস্থ্য পরিকল্পনা প্রকল্প(Soil Health Card Scheme):
২০১৫ সালে প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রকল্পটি প্রচলন করেছিলেন | এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল কৃষকদের ব্যাপকভাবে ফসল সরবরাহ করা | এই প্রকল্পের সাহায্যে, চাষীভাইরা যে শুধু তাদের ফসল বৃদ্ধি করেছে তাই নয় এর থেকে মুনাফাও পেয়েছে ব্যাপকভাবে |প্রধানত, এই প্রকল্পটি কৃষকরা যে মাটিতে ফসল ফ্লাটে চলেছেন তা পরীক্ষা করে, যাতে এটি নির্ধারণ করা যায় যে এই মাটি কি আদৌ ফসল ফোলানোর উপযোগী | এর মাধ্যমে কোন মাটিতে কোন ফসলের প্রচুর ফলন হবে অর্থাৎ নির্ভুল মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে সকল তথ্য জানা যায় |
আরও পড়ুন -KMC Recruitment: নিয়োগ চলছে কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনে, দেখুন বিস্তারিত তথ্য
এছাড়া, এই মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয়, সেই মাটিতে ফসলের বৃদ্ধি ও জন্মানোর জন্য ঠিক কত পরিমানে সার ও অন্যান্য পদার্থের প্রয়োজন হতে পারে | এই তথ্যের মাধ্যমে, কৃষকরা একটি ধারণা পেয়ে যায় যার সাহায্যে ফসল বৃদ্ধিতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়না | যদি কেউ এই পরীক্ষা না করে থাকে, তবে সেই সব চাষীরা কতটা ফসলের চাষ করবেন বা কত পরিমান ফসল উৎপন্ন হবে বা কোন ফসলে সারের পরিমান ঠিক কতটা তা বুঝতে পারেনা |তবে এই প্রকল্প আসার পরে কৃষকরা অনেকটাই উপকৃত হচ্ছেন।
কৃষকদের লাভ হবে কিভাবে(How farmers get profit):
এখন কৃষকভাইদের মনে প্রধান প্রশ্ন, কিভাবে এই প্রকল্পটি তাদের আয় দ্বিগুন পরিমানে বাড়াবে? চলুন তা দেখে নেওয়া যাক! প্রথমত, আপনি মাটির এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের আর্থিক সহায়তা পেয়ে নিজের সয়েল ল্যাব শুরু করতে পারবেন। মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে এখন অনেক বেশী পরিমাণ অর্থ লাভ করতে পারবেন কৃষক। বিপুল সংখ্যক যুবক এই প্রকল্পের সুযোগ নিচ্ছেন এবং নিজ গ্রামেই একটি ল্যাব চালু করছেন, যার কারণে তারা প্রচুর লাভ পাচ্ছেন।
কি কি তথ্য থাকবে ওই কার্ডে(Information of the card):
কার্ডে যে তথ্য গুলি থাকবে সেগুলি হল ফার্মাস বা চাষির নাম, চাষি যে জমিতে চাষ করছেন তার অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশগত ভৌগলিক অবস্থান, চাষির জমি থেকে সংগৃহীত মাটির নমুনা নম্বর, জমটি কোন মৌজায়, জমিটি চাষ যোগ্য অথবা চাষ যোগ্য কিনা, জমিতে জল সেচ কেমন করে হয়। মাটির চরিত্রও জানা যাবে। সঙ্গে আরোও থাকবে রবি শশ্য, খারিফ শশ্য ও প্রি-খারিপ — যাবতীয় চাষের তথ্য। আর চাষিদের সুবিধার্থে এই তথ্যগুলিই সংগ্রহে নেমেছে ব্লক কৃষি দফতরের কর্মীরা। এ কাজের জন্য প্রতিটি ব্লক কৃষি দফতরের কর্মীদের নিয়ে ওই ব্লকে কাজ করার জন্য একটি করে টিম করা হয়েছে। টিমে থাকছেন ব্লক কৃষি দফতরের কৃষি প্রযুক্তি সহায়ক, আত্মা প্রকল্পের ব্লক টেকনিক্যাল ম্যানেজার ও অ্যাসিস্টেন্ট ব্লক টেকনিক্যাল ম্যানেজাররা।
প্রকল্প গ্রহণের খরচ(Expenditure):
যদি কেউ মাটির পরীক্ষাগার শুরু করতে চান, তবে তার পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়। তবে ল্যাব স্থাপনের জন্য সরকার আর্থিক সহায়তা স্বরূপ ৭৫ শতাংশ অর্থ প্রদান করে, যার পরে এই পরীক্ষাগারটি কেউ শুরু করতে চাইলে তাকে কেবল ৩.৭৬৪ টাকা খরচ করতে হয়। এই পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করলে কৃষকের লাভ হবে দ্বিগুণ। এছাড়া, একদিকে এই পরীক্ষাগার থেকে কৃষকদের আবাদে ফলনের প্রচুর বৃদ্ধি হবে, অন্যদিকে গ্রামের বেকার যুবকরাও কর্মসংস্থান পাবে অনায়াসে। প্রধানত, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে ব্যাপকভাবে |
আরও পড়ুন -Milkfish Farming: বাড়ছে মিল্কফিশ চাষ, জেনে নিন এর সহজ চাষ পদ্ধতি
Share your comments