কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়ে গেলে তাদের আর্থিক সমস্যা থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ‘বাংলা শস্য বীমা যোজনা’ প্রকল্প প্রচলন করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় এ বছর রাজ্যের কৃষকদের ফসল সুরক্ষায়, শস্য বীমা সম্পূর্ণ বিনা খরচায় করা হচ্ছে।
২০২০-২১ রবি মরশুমে যে ফসলগুলির বীমা করা যাবে - গম, ছোলা, মুসুরি, সরষে, ভুট্টা, আলু এবং গ্রীষ্মকালীন ফসল বোরো ধান, ভুট্টা, মুগ, তিল, বাদাম ও আখের জন্য বীমা করা যাবে।
কৃষকরা তাদের পরিচয় পত্র, ভোটার কার্ড, ব্যাঙ্ক পাসবই এবং ফসল রোপণের শংসাপত্র-সহ এগ্রিকালচার ইনসিওরেন্স কোম্পানির কার্যালয়ে অথবা তাদের প্রতিনিধি বা কৃষি আধিকারিকের কার্যালয়ে যোগাযোগ করুন।
বীমা করার শেষ তারিখ:
-
আলু, গম, রবি ভুট্টা, ছোলা, মুসুরি, সরষে – এই ফসলগুলির জন্য ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০
-
বোরো ধান - ৩১ জানুয়ারি, ২০২১
-
গ্রীষ্মকালীন ভুট্টা, মুগ, তিল, বাদাম ও আখ - ১৫ মার্চ, ২০২১
-
বাণিজ্যিক ফসল শর্ত সাপেক্ষ।
বাংলা শস্য বীমা ২০১৯ প্রকল্পে অথবা কৃষকবন্ধু প্রকল্পে নথিভুক্ত কৃষকদের বীমা সরাসরি হয়ে যাবে। অবশিষ্ট কৃষকরা ফসলের বীমার জন্য যোগাযোগ করুন এই নম্বরে – ১৮০০-৫৭২-০২৫।
নিজের নাম তালিকায় রয়েছে কি না অথবা স্থিতি পরীক্ষা করতে বাংলা শস্য বীমা পোর্টাল- https://banglashasyabima.net/- এ কৃষক নিজের ভোটার কার্ড নম্বর দিয়ে যাচাই করতে পারেন।
২০২০-২১ বর্ষ থেকে বাংলা শস্য বীমা যোজনায় যে নতুন বিষয়গুলির সংযোজন ঘটেছে -
- কেসিসি (Kisan Credit Card) থাকলে লোণ এবং বীমা দুটির জন্য আবেদন করাই সহজ হবে। তবে নতুন নির্দেশিকা অনুসারে কেসিসি না থাকলেও এই বীমা করা যাবে।
- ২০১৯-২০ বর্ষেই বাঁকুড়া জেলার রবি মরসুমে বোরো ধান, গম, মুসুর, সরিষা, তিল, চীনাবাদাম এবং আলু- এই শস্যগুলি বীমার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
- রবি মরসুমে বোরো ধান, গম, মুসুর, সরিষা, তিল, চীনাবাদাম- এই শস্যগুলি বীমার প্রিমিয়ামের সম্পূর্ণ অর্থ পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিবহন করছে।
- শুধুমাত্র আলু এবং আখ এই দুটি বাণিজ্যিক ফসলের জন্য কৃষককে সর্বাধিক ৪.৮৫% প্রিমিয়াম জমা দিতে হবে। অবশিষ্ট প্রিমিয়াম রাজ্য সরকার বহন করবে।
কারা আবেদনের যোগ্য (Eligibility) -
- কৃষককে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- জমির মালিক/ভাগচাষী সকলেই বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন।
- এই স্কিম অনুসারে, আবেদনকারীরা ফসলের ক্ষতির সম্মুখীন হলে কেবল বীমা কভারেজ পাবেন বলে সুবিধাভোগীকে কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতির সঠিক প্রমাণ এবং জমির দলিল সহ প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হবে।
আবেদন পদ্ধতি (Application procedure) –
অনলাইন আবেদন পদ্ধতি –
অনলাইনে এই ‘বাংলা ফসল বীমা’ যোজনার আবেদন করতে হলে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইট ‘মাটির কথা’ থেকে সরাসরি আবেদন করতে পারবেন। নিম্নে তার লিঙ্ক দেওয়া হল-
এই প্রকল্পে রেজিস্ট্রেশনের জন্য কৃষক উপরোক্ত লিঙ্কে ক্লিক করে ফার্মার কর্নার-এ নিজের নাম নথিভুক্ত করে প্রয়োজনীয় তথ্য পরস্পর পূরণ করে সাবমিট করতে পারেন।
অফলাইন আবেদন পদ্ধতি -
অফলাইনে আবেদনের জন্য এই ফর্ম কৃষকরা নিকটবর্তী গ্রাম পঞ্চায়েত, কিষাণ মান্ডি বা ব্লক অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
ফর্ম পূরণ -
কৃষকের নাম, পিতার/স্বামীর নাম, ঠিকানা- মৌজা/গ্রামের নাম ইত্যাদি তথ্য কৃষককে পূরণ করতে হবে। অধিসূচিত ফসল অর্থাৎ কোন ফসলের জন্য বীমা করছেন, জমির পরিমাণ এবং জমির দলিল, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেলস, কৃষকবন্ধু প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত থাকলে তার নম্বর ইত্যাদি সকল তথ্য বিশদে পূরণ করার পর ফর্মে কৃষকের নিজস্ব স্বাক্ষর করতে হবে অথবা আঙুলের ছাপ দিতে হবে। এরপর তা জমা দিন।
বিশদ তথ্যের জন্য, (ADA) অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টর অফ এগ্রিকালচার অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন বা টোল ফ্রি নাম্বারে ১৮০০-১০৩-১১০০ কল করতে পারেন।
সরকারের এই উদ্যোগে বন্যা, খরায় ফসলের ক্ষতির চিন্তা থেকে কৃষক থাকবেন নিশ্চিন্ত।
বিশেষ দ্রষ্টব্য - বিস্তারিত জানার জন্য যোগাযোগ করুন ব্লক, মহকুমা/জেলা কৃষি আধিকারিক অথবা বীমা কোম্পানির কার্যালয়ে
Image source - Google
Share your comments