করলা/উচ্ছে ইংরেজিতে Bitter Gourd/ Bitter Melon নামে পরিচিত। স্বাদে তিতা হলেও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই সবজীটি বিশ্বজুড়ে চাষ করা হয়। বৈজ্ঞানিকদের মতে, এতে পালং শাকের তুলনায় দ্বিগুণ ক্যালসিয়াম এবং ব্রোকোলির তুলনায় বিটা ক্যারোটিন দ্বিগুণ পরিমাণে রয়েছে।
করলার মধ্যে বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি যৌগ উপস্থিত থাকায় এটি আমাদের অনেক রোগ থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, ঠিক কি কি গুণ রয়েছে এই সবজীটির।
করলার স্বাস্থ্যগুণ (Health Benefits Of Bitter Melon) -
ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে -
করলা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পথ্য হিসাবে বিবেচিত হয়। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের বেশি পরিমাণে তেতো খাওয়া উচিত। করলা/উচ্ছের রস এবং এই গাছের পাতা নিয়মিত সেবন করলে তা রক্তে চিনির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে।
হজমের পক্ষে ভাল –
খাবার হজম করতে সহায়ক এবং হজম শক্তি বর্ধক এই সব্জি। তবে শুধু হজম শক্তিই নয়, করলা ফাইবারে পূর্ণ হওয়ায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়।
হার্ট ভালো রাখে -
এর তিক্ত রস এলডিএল অর্থাৎ খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস করে।
প্রস্টেট ক্যান্সার (Prostate Cancer) -
করলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অ্যালার্জি ও যে কোন রোগের সংক্রমণ রোধ করে। এটি ক্যান্সার কোষের বিস্তার রোধ করে। নিয়মিত করলা খেলে স্তন ক্যান্সার (Breast cancer), কোলন ক্যান্সার (Colon cancer) এবং প্রস্টেট ক্যান্সারের (Prostate cancer) ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ (Weight control) -
ক্যালরি ও ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় করলা ওজন হ্রাসে সহায়তা করে। এটি অ্যাডিপোজ কোষ যা দেহে ফ্যাট সংরক্ষণ করে, তার গঠন এবং বৃদ্ধি বন্ধ করে। এটি পরিপাক ক্রিয়া উন্নতি করে এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলি শরীরকে ডিটক্সাইয়েটে সহায়তা করে যাতে চর্বি হ্রাস করতে পারে।
ক্ষত নিরাময়ে করলা -
করলার দুর্দান্ত একটি বৈশিষ্ট্য এটি। কোন স্থানে ক্ষত হলে করলার ব্যবহার তৎক্ষণাৎ ওই স্থানের রক্ত প্রবাহ এবং রক্ত জমাট বাঁধা নিয়ন্ত্রণ করে, যার ফলে ক্ষতের দ্রুত নিরাময় হয়।
রক্ত পরিশোধক -
করলাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সহায়তা করে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
দেহে শক্তি জোগায় -
নিয়মিত করলা সেবনে দেহে শক্তির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।
দৃষ্টি শক্তি উন্নত করে -
করলা ভিটামিন এ সমৃদ্ধ, এটি ছানি প্রতিরোধ করে এবং দৃষ্টি শক্তিশালী করে।
এছাড়াও এটি অনিদ্রার মতো সমস্যা হ্রাস করে। ডায়রিয়া ও পেটের অন্যান্য সমস্যাও কমাতে সহায়ক এই সব্জি। আমাদের দেহের ইমিউন সিস্টেমকে (Immune system) বাড়িয়ে তুলে শরীরকে রোগে সংক্রামিত হওয়ার থেকে সুরক্ষা প্রদান করে করলা।
আরও পড়ুন - Cranberry Juice – জানেন কি ত্বক ও চুলের পরিচর্যায় ক্র্যানবেরী কিভাবে ব্যবহার করবেন?
বিশেষ দ্রষ্টব্য –
অনেক পুষ্টিগুণ থাকা সত্ত্বেও গর্ভবতী মহিলাদের করলা খাওয়া একদমই অনুচিত। কারণ এটি জরায়ুর সংকোচন ঘটায়। তাই গর্ভাবস্থায় এই সব্জি এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
Share your comments