আমরা প্রায় প্রত্যেকেই খেজুরের গুণ সম্পর্কে কম বেশি অবগত। একথা সর্বজনবিদিত যে, খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কিন্তু খুব কম সংখ্যক লোকই সম্ভবত এর প্রজাতি সম্পর্কে জানেন। খেজুর বিভিন্ন প্রজাতির হয়, যার বিভিন্ন ধরণের পৃথক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আসুন, বিভিন্ন ধরণের খেজুরের প্রজাতি এবং কোন প্রজাতির খেজুর আমাদের কোন রোগ থেকে রক্ষা করবে, তা দেখে নেওয়া যাক।
মেডজুল প্রজাতির খেজুর -
খেজুরের এই জাতটি সুগার ফ্রি অর্থাৎ খুব মিষ্ট হয় না। সুতরাং, অমিষ্ট হওয়ায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব উপকারী। এই খেজুরটি খেলে শরীরের ক্লান্তি হ্রাস পায়, কারণ এটি আমাদের দেহে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ সহ শক্তি সরবরাহ করে। এটি প্রতিদিন খেলে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবেন।
আজওয়া প্রজাতির খেজুর –
কথিত আছে, মহম্মদ সাহেব বিভিন্ন জাতের খেজুর পছন্দ করতেন। তিনি এই জাতীয় খেজুর খেয়ে রোজা ভাঙতেন, সুতরাং এই প্রজাতির খেজুর অন্যান্য জাতগুলির মধ্যে শ্রেষ্ঠ হিসাবে বিবেচিত হয়। মুসলিম সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষ এই জাতের খেজুর খেয়ে তাদের রোজা তোলেন।
কলমি প্রজাতির খেজুর –
এই প্রজাতির খেজুরে রয়েছে গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ, যা শরীরের উচ্চ অনাক্রম্যতা মাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়ক। কলমি প্রজাতির খেজুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ জাতীয় খেজুর খেলে পেটের রোগ হয় না। হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিবর্ধক এই খেজুর, এছাড়া গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল সিস্টেমকে সঠিকভাবে পরিচালনা করে এবং ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য-র মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
অন্যান্য জাত -
অন্যান্য জাতের খেজুর হল খুদরী, অম্বর, জাহিদি, সফাভি, মবরুম এবং সুক্কারি। যে প্রজাতিরই খেজুর হোক না কেন, প্রত্যহ ৪-৬ টি করে গ্রহণ করলে তা আপনাকে পরিবর্তিত মরসুমে সর্দি, আর্থরাইটিস, হাড়ের ব্যথা, পেটের ব্যথা সহ অনেক মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করে। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, ব্রেন হেলথের গ্রোথে এবং সঠিক ওজন বজায় রাখতেও সহায়ক এই ফল।
অন্যান্য কিছু গুণাবলী-
হার্টকে সুস্থ রাখে:
ডায়াটারি ফাইবারে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরে "এল ডি এল" বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত পটাশিয়াম হার্টের অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস করে।
অস্থি মজবুত হয় -
খেজুরে উপস্থিত খনিজ এবং ভিটামিন অস্থিকে মজবুত করে তোলে। ফলে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, এই ফলটিতে উপস্থিত সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং ম্যাগনেসিয়াম এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
স্বপ্নম সেন
Share your comments