দৈনদিন জীবনে আমাদের আটা, বিস্কুট, আরও নানা বেকারি প্রস্তুতি তে গমের প্রয়োজন হয়। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা,পাঞ্জাব, মধ্য প্রদেশ এ গমের উৎপাদন বেশী হয়। গম উৎপাদনে ভারতের স্থান ২য়। পশ্চিমবঙ্গের বহু অঞ্চলে গমের ব্যাপক চাষ হয়।
গম চাষে মাটির প্রকৃতিঃ
উঁচু ও মাঝারি দো-আঁশ মাটি গম চাষের জন্য বেশি উপযোগী৷ লোনা মাটিতে গমের ফলন কম হয় ৷ সাধারণত উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি গম চাষের জন্য উপযুক্ত ৷ তবে মাঝারি নিচু জমিতেও গম চাষ হয় ৷ দোঁআশ ও বেলে-দোঁআশ মাটি গম চাষের জন্য সর্বোত্তম ৷ সহজে পানি নিষ্কাশিত হয় এমন ভারী অর্থাৎ এঁটেল ও এঁটেল-দোঁআশ মাটিতেও গমের চাষ করা যায় ৷
জাত নির্বাচন : ভালো ফলনের জন্য নতুন উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতগুলোই নির্বাচন করা উচিত। বারি গম ১৯ (সৌরভ), বারি গম ২০ (গৌরব), বারি গম ২১ (শতাব্দী), বারি গম ২২ (সুফি), বারি গম ২৩ (বিজয়),বারি গম ২৪ (প্রদীপ)- এই জাতগুলো হলো তাপসহিষ্ণু ও উচ্চফলনশীল জাত। এছাড়াও বারি গম ২৫ হলো লবনাক্ততাসহিষ্ণু, তাপসহিষ্ণু ও উচ্চফলনশীল জাত, বারি গম ২৬ হলো উচ্চফলনশীল ও তাপসহিষ্ণু জাত। এটি পাতার দাগ রোগ সহনশীল ও পাতার মরিচা রোগ প্রতিরোধী জাত। বারি গম ২৭ একটি উচ্চ ফলনশীল স্বল্পমেয়াদি গমের জাত, যা পাতার দাগ রোগ প্রতিরোধী।
বপনের সময়ঃ
গম বপনের সময় উপযুক্ত সময় হলো অগ্রহায়ণের মাসের ১ম থেকে ২য় সপ্তাহ পর্যন্ত ( নভেম্বর মাসের ১৫ থেকে ৩০ পর্যন্ত )। তবে তাপ সহনশীল জাত ডিসেম্বার মাসের ১৫-২০ তারিখের মধ্যে বুনলেও অন্যান্য জাতের তুলনায় বেশি ফলন দেয়। যেসব এলাকায় ধান কাটতে ও জমি তৈরী করতে বিলম্ব হয় সে ক্ষেত্রে কাঞ্চন, আকবর , অঘ্রাণী, ও গৌরব বপন করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
বীজের হারঃ
হেক্টর প্রতি ১২০ কেজি বীজ ব্যবহার করতে হবে। বীজ গজানোর ক্ষমতা ৮০% এর বেশী হলে ভালো হয়।
বীজ শোধনঃ
প্রোভেক্স/ভিটাভেক্স ২০০ প্রতি কেজি বীজে ৩ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। বীজ শোধনের ফলে চারা সবল ও সতেজ হয় এবং গম গজানোর হার ও ফলন বৃদ্ধি পায়। বীজ শোধন করলে শতকরা ১০-১২ কেজি বৃদ্ধি পায়।
বপন পদ্ধতিঃ
সারিতে বা ছিটিয়ে গম বীজ বপন করা যায়। সারিতে বপনের জন্য জমি তৈরীর পর লাংগল দিয়ে সরু নালা তৈরী করে ২০ সেমি বা ৮ ইঞ্চি দূরে দূরে সারিতে এবং ৪-৫ সেমি গভীরে বীজ বপন করতে হবে। আগাম বপনের জন্য পাওয়ার টিলার চালিত বীজ বপন যন্ত্রের সাহায্যে গম আবাদ করা যায়। যন্ত্রটির সুবিধা হলো ধান কাটার পরপর একই সময়ে চাষ, বীজ বপন ও মই দেওয়ার কাজ করা যাবে। যন্ত্রটিতে ২০ কেজি বীজ রাখার মতো একটি হপার থাকে এবং ২০ সেমি. দূরে দূরে ৬ সারিতে ৩-৪ সেমি. গভীরে বীজ বোনা যায়। বীজ বোনার সঙ্গে সঙ্গে বীজ ঢেকে দেয়া হয় করে বলে পাখি কম ক্ষতি করে এবং শতকরা প্রায় ২০ ভাগ বীজের সাশ্রয় হয়।
সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
সেচ সহ চাষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ইউরিয়া সারের দুই তৃতীয়াংশ এবং সম্পূর্ন টিএসপি, এমপি ও জিপসাম শেষ চাষের পূর্বে প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকী এক তৃতীয়াংশ ইউরিয়া চারার তিন পাতা বয়সে প্রথম সেচের পর দুপুর বেলা মাটি ভেজা থাকা অবস্থায় প্রতি হেক্টরে ৬০-৭০ কেজি ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে। উল্লেখ্য যে, সেচ ছাড়া চাষের ক্ষেত্রে সমস্ত ইউরিয়া শেষ চাষের সময় অন্যান্য রাসায়নিক সারের সাথে প্রয়োগ করতে হবে। তবে সেচ ছাড়া চাষের ক্ষেত্রে বৃষ্টিপাত হলে বৃষ্টির পর জমি ভেজা থাকা অবস্থায় উপরি প্রয়োগের জন্য নির্ধারিত ইউরিয়া প্রয়োগ করা ভালো। গম চাষে নিম্নলিখিত হারে সার প্রয়োগ করতে হবে-
সারের নাম -
সারের পরিমাণ/ হেক্টর -
সেচ সহ (কেজি) | সেচ ছাড়া (কেজি) | |
ইউরিয়া | ১৮০-২২০ | ১৪০-১৮০ |
টিএসপি | ১৪০-১৮০ | ১৪০-১৮০ |
এমপি | ৪০-৫০ | ৩০-৪০ |
জিপসাম | ১১০-১২০ | ৭০-৯০ |
গোবর/ কম্পোস্ট (টন) | ৭-১০ | ৭-১০ |
জমিতে প্রায়শ বোরন সারের ঘাটতি দেখা যায় বলে প্রতি হেক্টরে ৬.৫ কেজি হারে বরিক এসিড শেষ চাষের সময় অন্যান্য রাসায়নিক সারের সাথে প্রয়োগ করতে হবে।
অন্যান্য পরিচর্যাঃ
সেচ প্রদানঃ
মাটির প্রকারভেদে গম আবাদে ২-৩টি সেচের প্রয়োজন হয়। প্রথম সেচ চারার তিন পাতার সময় (বপনের ১৭-২১ দিন পর), দ্বিতীয় সেচ শীষ বের হওয়ার সময় (বপনের ৫০-৫৫ দিন পর) এবং তৃতীয সেচ দানা গঠনের সময় (বপনের ৭৫-৮০ দিন পর) দিতে হবে। তবে মাটির প্রকারভেদে ও শুষ্ক আবহাওয়ায় ভালো ফলনের জন্য অতিরিক্ত এক বা একাধিক সেচ দেওয়া ভালো। প্রথম সেচটি খুবই হালকাভাবে দিতে হবে। তা না হলে অতিরিক্ত পানিতে চারার পাতা হলুদ এবং চারা সম্পূর্ণ বা আংশিক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেচের পর পরই জমি থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে। তাই বপনের পর জমির ঢাল বুঝে ২০-২৫ ফুট অন্তর নালা কেটে রাখতে হবে।
আগাছা দমনঃ
বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে জমিতে ‘জো’ অবস্থায় আগাছা দমনের জন্য নিড়ানী দিতে হবে। নিড়ানীর ফলে মাটি আলগা হবে এবং আর্দ্রতা বজায় থাকবে। চওড়া পাতা জাতীয় আগাছা (বথুয়া ও কাকরি) দমনের জন্য ২,৪ ডি এমাইন বা এফিনিটি জাতীয় আগাছা দমনকারী ঔষধ প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৩৫ মিলিলিটার হিসেবে ভালভাবে মিশিয়ে স্প্রে মেশিনের সাহায্যে মেঘমুক্ত দিনে একবার প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যাবে। সময়মত আগাছা দমন করলে ফলন শতকরা ১৫ ভাগ বৃদ্ধি পায়।
পাখি তাড়ানো: বীজ বপনের পর ১০ থেকে ১২ দিন পর্যন্ত পাখি তাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
চিটা ব্যবস্থাপনা: উত্তরাঞ্চলের মাটিতে মাঝে মাঝে গমে চিটা দেখা যায় এবং এর ফলে ফলন কমে যায়। অনুমোদিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ এবং বিঘা প্রতি ৮০০ গ্রাম বরিক এসিড বা ১ কেজি ৩০০ গ্রাম বোরাক্স প্রয়োগ করে চিটা দূর হয়।
রোগ–পোকা ব্যবস্থাপনাঃ
গমের ব্লাস্ট রোগঃ
গমের শীষে ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। শীষের আক্রান্ত স্থানে কালো দাগ পড়ে এবং আক্রান্ত স্থানের উপরের অংশ সাদা হয়ে যায়। তবে শীষের গোড়ায় আক্রমণ হলে পুরো শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে যায়। আক্রান্ত শীষের দানা অপুস্ট হয় ও কুচকিয়ে যায় এবং দানা ধুসর বর্ণের হয়ে যায়। পাতায়ও এ রোগের আক্রমণ হতে পারে। এক্ষেত্রে পাতায় চোখের ন্যায় ধুসর বর্ণের ছোট ছোট দাগ পড়ে।
প্রতিকারঃ
১। বপনের পূর্বে প্রতি কেজি বীজের সাথে ৩ গ্রাম হারে প্রোভ্যাক্স-২০০ ডব্লিউপি অথবা ৩ মিলি হারে ভিটাফ্লো ২০০ এফএফ ছত্রাকনাশক মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। বীজ শোধন করলে গমের অন্যান্য বীজবাহিত রোগও দমন হবে এবং ফলন বৃদ্ধি পাবে।
২। গমের ক্ষেত ও আইল আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
৩। প্রতি শতাংশ জমিতে ৬ (ছয়) গ্রাম নাটিভো ৭৫ ডব্লিউ জি অথবা নভিটা ৭৫ ডব্লিউ জি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে। স্প্রে করলে গমের পাতা ঝলসানো রোগ, বীজের কালো দাগ রোগ এবং মরিচা রোগ ইত্যাদিও দমন হবে
৪। শীষ বের হওয়ার সময় একবার এবং ১২-১৫ দিন পর আর একবার উপরে উল্লিখিত ছত্রাকনাশক প্রতিষেধক ব্যবস্থা হিসেবে স্প্রে করতে হবে।
গমের পাতার মরিচা রোগ:
পাকসিনিয়া রিকন্ডিটা নামক ছত্রাকের আক্রমনে এ রোগ হয়ে থাকে। প্রথমে পাতার উপর ছোট গোলাকার হলুদ দাগ পড়ে। শেষ পর্যায়ে এই দাগ মরিচার মত বাদামী বা কালচে রংয়ে পরিনত হয়। হাত দিয়ে আক্রান্ত পাতা ঘষা দিলে লালচে মরিচার মত গুড়া হাতে লাগে। এ রোগের লক্ষণ প্রথমে নীচের পাতায় , তারপর সব পাতায় ও কান্ডে দেখা যায়। দেশের উত্তরাঞ্চলে এ রোগ বেশী হয়ে থাকে।
প্রতিকারঃ
১। রোগ প্রতিরোধী গমের জাত কাঞ্চন, আতবর , অঘ্রাণী, প্রতিভা, সৌরভ ও গৌরবের চাষ করতে হবে।
২। সুষম হারে সার প্রয়োগ করতে হবে।
৩। টিল্ট ২৫০ ইসি ১ মিলি আড়াই লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
গমের পাতার দাগ রোগঃ
বাইপোলারিস সরোকিনিয়ানা নামক ছত্রাক এ রোগ ঘটায়। গাছ মাটির উপর আসলে প্রথমে নীচের পাতাতে ছোটছোট বাদামী ডিম্বাকার দাগ পড়ে। পরবর্তীতে দাগসমূহ বাড়তে থাকে এবং গমের পাতা ঝলসে দেয়। রোগের জীবাণু বীজে কিংবা ফসলের পরিত্যাক্ত অংশে বেঁচে থাকে। বাতাসের অধিক আর্দ্রতা এবং উচ্চ তাপমাত্রা ( ২৫ ডিগ্রী সে. ) এ রোগ বিস্তারের জন্য সহায়ক।
প্রতিকার:
১। রোগমুক্ত জমি হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
২। গাছের পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
৩।প্রতি কেজি গম বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম ভিটাভেক্স ২০০ মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
৪। টিল্ট ২৫০ ইসি ১ মিলি প্রতি আড়াই লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
গমের গোড়া পচা রোগ:
স্ক্লেরোশিয়াম রলফসি নামক ছত্রাক দ্বারা গমের এ রোগ হয়। এই রোগের ফলে মাটির সমতলে গাছের গোড়ায় হলদে দাগ দেখা যায়। পরে তা গাঢ় বাদামী বর্ণ ধারণ করে এবং আক্রান্ত স্থানের চারদিক ঘিরে ফিলে। পরবর্তীতে পাতা শুকিয়ে গাছ মারা যায়। রোগের জীবাণু মাটিতে কিংবা ফসলের পরিত্যাক্ত অংশে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে। সাধারণত বৃষ্টির পানি কিংবা সেচের পানি দ্বারা এক জমি হতে অন্য জমিতে বিস্তার লাভ করে ।
প্রতিকারঃ
১।রোগ প্রতিরোধী কাঞ্চন, আকবর , অঘ্রাণী, প্রতিভা, সৌরভ ও গৌরব জাতের চাষ করতে হবে।
২। মাটিতে সবসবয় পরিমিত আর্দ্রতা থাকা প্রয়োজন।
৩। ভিটাভেক্স ২০০ নামক ঔষধ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
গমের আলগা ঝুল রোগ:
আসটিলাগো ট্রিটিসি নামক ছত্রাকের আত্রমনে এ রোগ হয়। গমের শীষ বের হওয়ার সময় এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। উক্ত ছত্রাকের আত্রমনের ফলে গমের শীষ প্রথম দিকে পাতলা পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে। পরে তা ফেটে যায় এবং দেখতে কালো ঝুলের মত দেখায়। ছত্রাকের বীজকণা সহজেই বাতাসের মাধ্যমে অন্যান্য গাছে এবং অন্য জমির গম গাছে সংক্রমিত হয়। রোগের জীবাণু বীজের ভ্রুণে জীবিত থাকে। পরবর্তী বছর আত্রান্ত বীজ জমিতে বুনলে বীজের অংকুরোদ্গমের সময় জীবাণু সক্রিয় হয়ে ওঠে।
প্রতিকারঃ
১। রোগ প্রতিরোধী কাঞ্চন, আকবর , অঘ্রাণী, প্রতিভা, সৌরভ ও গৌরব জাতের চাষ করতে হবে।
২। রোগমুক্ত জমি হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
৩। ভিটাভেক্স ২০০ নামক ঔষধ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
গমের কালো দাগ রোগ:
ড্রেক্সলেরা প্রজাতি ও অলটারনারিয়া প্রজাতির ছত্রাক দ্বারা গমের এ রোগ হয়। এ রোগের ফলে গমের খোসায় বিভিন্ন আকারের বাদামী অথবা কালো দাগ পড়ে। বীজের ভ্রুণে দাগ পড়ে এবং পরবর্তীতে দাগ সম্পূর্ণ বীজে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগের জীবাণু বীজের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে থাকে।
প্রতিকারঃ
১। সুস্থ বীজ সংগ্রহ করে বপন করতে হবে।
২। ভিটাভেক্স ২০০ নামক ঔষধ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
গমের ইঁদুর দমনে বিষ টোপের ব্যবহার:
ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ শুরু হলে ফাঁদ পেতে বা বিষটোপ (জিঙ্ক ফসফাইড বা ল্যানিরেট) দিয়ে দমন করতে হবে। গম পাকার সময় ইঁদুর সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করে । বিএআরআই উদ্ভাবিত ২% জিঙ্ক সালফাইড বিষ টোপ ইঁদুর দমনে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। ১ কেজি পরিমাণ বিষটোপ তৈরির উপাদান-
উপাদান পরিমাণ ( গ্রাম )
গম ৯৬৫
বার্লি ১০
জিঙ্ক ফসফাইড (সক্রিয় উপাদান ৮০%) ২৫
পানি ১০০
এলুমিনিয়ামের পাত্রে ১০ গ্রাম বার্লি ও ১০০ এমএল পানি মিশিয়ে ২-৩ মিনিট জ্বাল দিতে হবে। বার্লি আঠালো হয়ে গেলে পাত্রটি নামিয়ে ফেলতে হবে। ঠান্ডা হওয়ার পর ২৫ গ্রাম জিঙ্ক ফসফাইড আঠালো বার্লির সাথে ভালোভাবে মেশাতে হবে। জিঙ্ক ফসফাইড মেশানোর পর ৯৬৫ গ্রাম গমের দানা পাত্রে ঢেলে এমন ভাবে মেশাতে হবে যেন প্রতিটি গমের দানার গায়ে কালো আবরণ পড়ে। এরপর গম দানা এক ঘন্টা রোদে শুকালে তা বিষটোপে পরিণত হবে। পরে তা ঠান্ডা করে পলিথিন ব্যাগ বা বায়ুরোধক পাত্রে রাখতে হবে।
ব্যবহারের নিয়মঃ
গমের জমিতে সদ্য মাটি উঠানো গর্ত সনাক্ত করতে হবে। ৩-৫ গ্রাম জিঙ্ক ফসফাইড বিষটোপ কাগজে রেখে শক্ত করে পুটলি বাঁধতে হবে। গর্তের মুখের মাটি সরিয়ে এ পুটলি ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিতে হবে অথবা সতেজ গর্তের আশে পাশে কাগজে বা মাটির পাত্রে বিষটোপ রেখে দিতে হবে। বিষটোপ খেলে ইঁদুর সাথে সাথে মারা যাবে।ফসল সংগ্রহঃ
গম পেকে হলুদ বর্ণ ধারণ করলে চৈত্র মাসের প্রথম থেকে মধ্য চৈত্র (মার্চের _এপ্রিল)পর্যন্ত কেটে গম সংগ্রহ করতে হয়।
Share your comments