ডাটা চাষ রবি (শীতকালে) ও খরিফ (গ্রীষ্মকালে) উভয় মৌসুমে শাক-সবজি হিসেবে করা যায়। ডাটায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-এ, বি, সি, ডি এবং ক্যালসিয়াম ও লৌহ বিদ্যমান। ডাটার কাণ্ডের চেয়ে পাতা বেশি পুষ্টিকর। খুব কম সবজিতে এত পরিমাণে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন ও খনিজ লবণ থাকে। এই ডাটা শাকের চাহিদাও থাকে বাজারে সারাবছর |
বপন সময়:
খরিফ মৌসুম (মার্চ-এপ্রিল) ও রবি মৌসুম (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর)।
বীজ হার:
বিঘা প্রতি ১৯৮-৩৩০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন অথবা, শতাংশ প্রতি ৬-১০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন।
জমি তৈরিঃ
প্রায় সোয়া দুই হাত (২.১৮ হাত) প্রশ্বস্ত এবং প্রয়োজনীয় পরিমাণ লম্বা করে বেড তৈরি করতে হবে।দুবেডের মাঝে এক ফুট (৩০ সেমি.) নালা থাকবে।
ডাটার জাত পরিচিতি:
বারি ডাঁটা-১ (লাবনী) ফেব্রুয়ারী-জুন
বারি ডাঁটা-২ BARI ফেব্রুয়ারী-জুন
বাঁশপাতা, আখি, সুফলা-১ সারা বছর
কে এস ০১ মাঘ থেকে বৈশাখ মাস
লাবনী বপনের সময় জানুয়ারী-জুন
আরও পড়ুন -Fish disease treatments: দেখে নিন মাছ চাষের বিভিন্ন রোগের প্রতিকারব্যবস্থা
এছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানির আরো অনেক জাত আছে যেগুলো সারা বছর চাষ করা যায়। যেমন-পান্না, রেড টাওয়ার, গ্রীন টাওযার, রেড আর্মি, ভুটান, অপরাপা, স্বরূপা, সফট ইত্যাদি।
বীজ বপন:
বীজ সরাসরি ছিটিয়ে অথবা লাইন করে বপন করা যায়। লাইনের ক্ষেত্রে বেডের উভয় পাশে ১০ সেমি.বাদ রেখে লম্বালম্বি ২০ সেমি. দূরে দূরে লাইন করে বীজ বপন করতে হবে। বপনের পর কাঠি বা হাতদিয়ে ঢেকে দিতে হবে। বীজ বপনের সময় সম পরিমাণ ছাই বা বালি মিশিয়ে বপন করলে সমভাবেপড়বে। জমিতে রস না থাকলে ঝাঝরি দিয়ে হালকা সেচ দিতে হবে। ভালো স্বাদ পাওয়ার জন্য পাতা নরম বা মোলায়েম অবস্থায় শাক সংগ্রহ করতে হবে। কীটনাশক প্রয়োগ করে থাকলে ৫-৭ দিন পর শাক সংগ্রহ করতে হবে।
সার প্ৰয়োগ:
প্রতি শতকে গোবর ৪০ কেজি, ইউরিয়া ৫০০ গ্রাম, টিএসপি ৩০০ গ্রাম এবং এমওপি ৪০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে | ইউরিয়া তিন ভাগের এক ভাগ সহ অন্যান্য সব সার বীজ বোনার আগেই মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি দুই ভাগ ইউরিয়া বীজ গজানোর ১০-১৫ দিন পর এবং ২০-২৫ দিন পর দিতে হবে।
আগাছা দমন:
বীজ বপনের এক সপ্তাহ পর গাছ পাতলা করণ ও আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। সারিতে ৫সেমি. পর পর চারা রেখে পাতলা করে দিতে হবে। জমির উপর চটা লেগে গেলে ভেঙ্গেদিতে হবে। এতে করে দ্রুত গাছ বৃদ্ধি পাবে এবং গোড়া পচা রোগ থেকে রক্ষা পাবে।
সেচঃ
শুষ্ক মৌসুমে এক সপ্তাহ পর পর সেচ দিতে হবে। নতুবা শাক খসখসে হয়ে যাবে।
বীজ উৎপাদন ও সরক্ষণ:
দুটি জাতের মধ্যে ৫০০ মি. দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বীজ উৎপাদনের জন্য মার্চের প্রথম সপ্তাহে বীজ বপন করতে হবে। বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব উভয়ই এক ফুটহতে হবে। রোগ-পোকা দমনের জন্য প্রয়োজনীয় বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হবে। বীজ কালো রং ধারন করলে সংগ্রহ করা যাবে। সাধারনত বীজ বপনের ৯০-১০০ দিনেরমধ্যে বীজ সংগ্রহ করা যায়।
ফসল সংগ্রহ:
ভালো স্বাদ পাওয়ার জন্য পাতা নরম বা মোলায়েম অবস্থায় শাক সংগ্রহ করতে হবে। কীটনাশক প্রয়োগ করে থাকলে ৫-৭ দিন পর শাক সংগ্রহ করতে হবে। বিঘা প্রতি ডাটা শাক পাওয়া যায় ৬৬-৮২.৫ কেজি।
আরও পড়ুন -Cage fish farming: খাঁচায় মাছ চাষ করে কৃষকদের ব্যাপক সাফল্য
Share your comments