আন্তর্জাতিক সংস্থা 'নাসা'র তথ্য অনুসারে ১০ টি বায়ু শোধনকারী উদ্ভিদ এর মধ্যে মানি প্ল্যান্ট (Money plant farming) উদ্ভিদ অন্যতম কারণ এটি বায়ুমণ্ডলে থাকা বিষাক্ত পদার্থ নষ্ট করে ফেলে। এছাড়াও এটি সুপ্রসন্ন ভাগ্যর চিহ্ন হিসেবে পরিচিত। মানি প্ল্যান্ট গুড লাক ট্রি, সিলভার ভাইন, ত্যারো ভাইন, হান্টারস রোব, সোলোমন আইল্যান্ড আইভি এবং ডেভিলস আইভি নামে পরিচিত।
কৃষকেরা মানি প্ল্যান্ট উদ্ভিদ বায়ু পরিষ্কারক হিসেবে চাষ করেন। ব্যবসায়ে অত্যাধিক লাভ এর আশায় বাড়িতে, অফিসে, বিপণন কেন্দ্র গুলোতে মানি প্ল্যান্ট রাখা হয়। আপনি যদি এর সঠিক উপায় যত্ন সম্পর্কে জানেন তবে খুব সহজেই এর যত্ন-আত্তি নিতে পারবেন।
বীজের জাত নির্বাচন (Seed selection) :
মানি প্ল্যান্ট উদ্ভিদের বীজ বাজার থেকে কিনে পটে লাগাবেন। এছাড়াও আপনার বন্ধুদের থেকে কিংবা আপনার প্রতিবেশীর কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে পারবেন। বীজ বপন করার আগে খেয়াল রাখতে হবে যে বীজগুলো যেন ভেজা না হয়, পুরোপুরি শুকনো ও পরিষ্কার হতে হবে। পরিষ্কার করার জন্য উষ্ণ তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে। এরপর বীজ পট কিংবা কন্টেইনারে বপন করুন।
মাটি এবং পাত্র নির্বাচন:
এমন একটি পট নির্বাচন করুন যাতে মানি প্ল্যান্ট হেলে পড়ে না যায়। ঘরোয়া উপায়ে মানি প্ল্যান্ট লাগাতে চাইলে ৬ ইঞ্চির একটি পট নিন। শুরুতে আপনি চাইলে মাটি, সিরামিক বা প্লাস্টিকের পট নিতে পারেন। পরবর্তীতে যখন গাছটি বড় হবে ও তখন বড় পট ব্যবহার করবেন।
মানিপ্ল্যান্টে জল দেওয়ার নিয়ম:
যখনি গাছের সামান্য উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে তখনি প্রতিদিন অল্প পরিমাণে গাছে জল দিন। যখন গাছটি বড় হবে তখন প্রতি সপ্তাহে ২/৩ ইঞ্চি জল শোষণ করতে পারে যখন মাটি পুরোপুরি শুকনো থাকে।
গাছ দ্রুত বৃদ্ধি হয় যদি আপনি ঘরের তাপমাত্রায় এটিকে রাখতে পারেন। মানি প্ল্যান্ট ঠান্ডা আবহাওয়ার চেয়ে গরম আবহাওয়া বেশি সহ্য করতে পারে।
রোগ:
পুষ্টি জনিত ঘাটতি -
১.ক্যালসিয়াম - অভাবে পাতা কুঁকড়ে হুকের মত হয়ে যায় ।
২.নাইট্রোজেন - পাতা বুড়িয়ে যায়, ফলিয়েজ হালকা সবুজ, হলুদ কান্ড।
৩.ম্যাগনেসিয়াম - ধীর গতিতে বৃদ্ধি হয়,হালকা হলুদ পাতা, পাতায় গাড় দাগ পড়ে।
৪.ফসফরাস - ছোট পাতা,লালাভ বেগুনি রঙের ছাপ, বয়স্ক পাতা কালো হয়ে যায়।
৫.পটাশিয়াম - পাতায় পোড়া ভাব, পাতার শিরার মাঝে হলুদ হয়ে যায়।
৬.সালফার - ধীর গতিতে বৃদ্ধি, হালকা হলুদ রঙের পাতা।
পরিচর্যা -
বসন্ত কিংবা গ্রীষ্মে গাছকে পুনরায় পটিং করুন কারন এ সময়ে গাছ খুবই দ্রুত বৃদ্ধি পায়। যেহেতু গাছ প্রতি বছর বড় হয় তাই আপনাকে প্রতি বছরই বড় পটে স্থানান্তর করতে হবে।
আরও পড়ুন - Vegetables farming on terrace: জেনে নিন টবে সব্জি চাষ পদ্ধতি
সার প্রয়োগ:
বসন্ত ও গ্রীষ্মে প্রতি ২ সপ্তাহে একবার সার প্রয়োগ করতে হবে। মানি প্লান্টের বৃদ্ধির হার একে যে পটে রাখা হয় সে পটের আকৃতির উপর নির্ভর করে। এছাড়াও তরল NPK সার, জৈব সার বা গোবর দিতে পারেন। তবে ডিমের খোসা, বেকিং সোডা এর বৃদ্ধির জন্য খুবই উপকারী ।
মানিপ্ল্যান্টের পরিচর্যা:
২-৩ বছর পর পর পাত্র বদলাবেন। আগাছা ছেঁটে দিলে গাছ সুন্দর দেখাবে। শীতকালে গাছের অধিক পরিমাণে জল দরকার নেই তাই কম জল দিলেও চলবে। গাছ শুকিয়ে গেলে গাছের গোড়ায় ভিজে খড়,পাতা দিতে পারেন। গাছকে যতোটা সম্ভব সূর্যালোকের কাছে রাখতে হবে। তবে অত্যাধিক গরম বা ঠান্ডা পরিবেশে রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন - Long Bean Farming - বরবটির উচ্চ ফলনশীল জাতের চাষ করে আয় করুন দ্বিগুণ অর্থ
Share your comments