সময়ে-অসময়ে সারাবছর ধনিয়াপাতার বাজারে চাহিদা আছে। বর্ষাকালে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বেডের উপর বাঁশের কঞ্চির খাঁচা বানিয়ে পলিথিনের ছাউনি দিয়ে বা কম খরচে তৈরী পলি বা শেডনেট (Polyhouse) হাউসের নিচে চাষ করা হয়। অসময়ের ফসল হিসাবে চাষ করলে এর ভালো বাজারদর পাওয়া যায়। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলে একরকম বিলিতি ধনিয়া পাতা চাষ করতে দেখা যায়। এটি স্বাদে-গন্ধে একেবারে সাধারণ ধনিয়া পাতার মতো। এটি সাধারনত বর্ষার সময় চাষ করতে দেখা যায়।
আজ আমরা জানবো কি ভাবে আমরা এই চাষ বাড়ির ছাদে করতে পারি।
মাটি প্রস্তুতকরণ (Soil preparation) -
সবার প্রথমে আমরা ৩০% মাটি, ৩০% কোকো পিঠ এবং ৪০% জৈব সার নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নেবো। এর পর একটি পাত্রের মধ্যে কিছু ছোটো ছোটো ইঁটের টুকরো রেখে জল নিকাশি ব্যবস্থা করতে হবে। এর পর মিশ্রিত মাটি দিয়ে পাত্রটিকে ভরে নেবো। তবে লক্ষ রাখতে হবে যাতে উপরটা সমান ও মসৃন হয় বড় মাটির দলা যাতে না থাকে। এর পর ভালো ভাবে জল দিয়ে মাটি টা ভিজিয়ে দিতে হবে।
বীজ রোপণ (Seed plantation) -
এরপর অন্তত ১২ ঘন্টা আগে ভেজানো ধনে পাতার বীজ সেই পাত্রে দিতে হবে তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে একটি আরেকটির উপর না হয়ে যায় তারপর আবার সেই মাটি অল্প পরিমানে আবার পাত্রে ছিটিয়ে বীজ গুলো ঢেকে দিতে হবে তবে যেন বেশি মোটা মাটির পরিমান না হয় ১ ইঞ্চির কম হলেই ভালো। এই ভাবে পুরো সূর্যের মধ্যে একে রাখতে হবে এবং সবসময় যেন ভেজাভাব থাকে তা খেয়াল রাখতে হবে।
অঙ্কুরোদগম –
বীজ বপনের মোটামুটি ৭ দিনের মধ্যে এটি থেকে ভাল ভাবে অঙ্কুরোদগম হয়ে পাতা বেরিয়ে আসবে।
খেয়াল রাখতে হবে যেন সবসময় ভেজাভাব থাকে তবে একবারে বেশি জল না দিয়ে বারবার জল দিতে হবে স্প্রেয়ার এর মাধ্যমে। যদি চারার পরিমাণ একটি টবে বেশি হয়ে যায় তবে অন্য পাত্রে তা স্থানান্তর করার দরকার।
এর বৃদ্ধির জন্য মোটামোটি ভাবে ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা প্রয়োজন, এর থেকে বেশি তাপমাত্রা হলে একটা গ্রীন নেটের শেড দিতে পারলে ভালো হয়। এর পাতা তৈরী হয়ে যাবে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই, তখন তা উপর থেকে কেটে নিন হালকা জৈব সার ছিটিয়ে আবার জল দিন কিছু দিন পর আবার নতুন পাতা বেরিয়ে আসবে।
রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রণঃ
গুঁড়ো রোগঃ
কপার-অক্সি-ক্লোরাইড @ ৪ গ্রাম/লিটার, সালফার @ ৩ গ্রাম/ লিটার ইত্যাদি জলে গুলে স্প্রে করতে হবে।
গোড়া পচাঃ
কপার-অক্সি-ক্লোরাইড @ ৪ গ্রাম/লিটার, স্ট্রেপটোসাইক্লিন @ ৪ গ্রাম/ ১০ লিটার বা ভালিডামাইসিন @ ২ মিলি/লিটার, অ্যাজাক্সিস্ট্রবিন ও টেবুকোনাজল @ ২ গ্রাম/ লিটার, ইত্যাদি জলে গুলে ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন - Fennel Flower – সহজ পদ্ধতিতে কালোজিরা চাষ করে আয় করুন অতিরিক্ত অর্থ
পাতা কাটা পোকাঃ
ইমিডাক্লপ্রিড @ ০.২৫ মিলি/ লিটার, অ্যাসিটাপ্রিমিড @ ০.৫ মিলি/ লিটার, অ্যাসিফেট @ ০.৭৫ গ্রাম/লিটার, কার্বোসালফান @ ২ মিলি/লিটার একক বা মিশ্রন জলে গুলে প্রয়োগ করতে হবে।
জাবপোকাঃ
ডাইফেনথিউরন @ ০.৫ গ্রাম/ লিটার, থায়মিথস্কাম @ ০.৫ গ্রাম/ লিটার, ফিপ্রনিল @ ১ মিলি/ লিটার, স্পাইরোমেসিফেন @ ০.৫ মিলি/ লিটার জলে গুলে প্রয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুন - Kharif Medicinal Crop – জেনে নিন এই মরসুমে কোন কোন ঔষধি উদ্ভিদের চাষ আপনার জন্য সেরা
Share your comments