রসুন, এর বৈজ্ঞানিক নাম অ্যালিয়াম স্যাটিভাম৷ এটি শুধু রান্নাতেই নয়, বহু শারীরিক সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে৷ প্রাচীনকালে, মিশর, গ্রীস, রোমান, চিনা সভ্যতায় ওষুধ হিসেবে রসুন ব্যবহৃত হত বলে জানা যায়৷ আদার মতোই গুণি এই রসুনের দামও তাই ভালোই৷ তবে আপনি চাইলেই বাড়িতে রসুন চাষ করতে পারেন৷ তা বাড়ির বারান্দাতেই হোক বা ছাদে, এক বা একাধিক টবে চাষ করতে পারেন রসুন৷ তবে রসুন চাষের আগে একনজরে দেখে নিন এর গুণাগুণ৷
রসুনের গুনাগুন- বহুগুণে সমৃদ্ধ রসুন বিভিন্ন ভিটামিন, ম্যাঙ্গানিজ এবং নিউট্রিয়েন্টস-এ পরিপূর্ণ৷ সাধারণ সর্দি-কাশি কমাতে আদার মতোই অনেকে রসুন খান৷ এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে৷ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে৷ রসুন খেলে হাড়ের জোরও বাড়ে৷
এতে উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট অ্যালঝাইমার্স-এর মতো রোগকে দূরে রাখতে সহায়তা করে৷ এটি ত্বকের বহু সমস্যা বিশেষত অ্যালার্জি কমাতে সাহায্য করে৷ কাঁচা রসুনে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে৷ এটি হার্টের পক্ষে খুবই ভালো৷ কিডনি ভালো রাখতেও এর জুড়ি মেলা ভার৷ এবার চলুন দেখে নেওয়া যাক কত সহজে বাড়িতেই আপনি রসুন চাষ করে ফেলতে পারবেন৷
কীভাবে চাষ করবেন?
রসুন চাষের জন্য সবথেকে প্রথমে আদর্শ স্থান বেছে নিতে হবে৷ লক্ষ্য রাখবেন প্রচুর আলো, বাতাস পাওয়া যাবে এমন স্থানেই রসুন চাষ করতে হবে৷ একটি মাঝারি আকৃতির টবে প্রায় ১৫-২০টির মতো রসুন গাছ করতে পারেন৷ জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ ঝুরঝুরে মাটিতে রসুন ভালো হয়৷ এবং সেই সঙ্গে প্রয়োজন উষ্ণ এবং আর্দ্র জলবায়ু৷ অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ আদর্শ সময়৷ বছরের অন্যান্য সময়েও ঘরোয়াভাবে রসুন চাষ করতে পারেন৷
বাড়িতে এনে রাখা রসুন থেকেই করে ফেলতে পারবেন রসুন চাষ৷ রসুনের শল্ক কন্দের কোয়া থেকে রসুন গাছ হয়৷ বড় সাইজের রসুনের প্রতিটি কোয়া টবে মাটিতে গর্ত করে রসুনের মুখটা অর্ধেক প্রবেশ করাতে হবে এবং তারপর হালকা জল ছিটিয়ে দিতে হবে৷ এবং মাঝে মাঝে পরিমিত জল দিতে হবে৷ কারণ রসুনের টবে জল জমলে রসুন পচে যায়৷ তাই মনে করে টবের নিচে একটি ছিদ্র করে দিতে হবে যাতে অতিরিক্ত জল সেখান দিয়ে নির্গত হয়ে যায়৷ আর সেই সঙ্গে লক্ষ্য রাখতে হবে টবে যেন আগাছা না হয়, হলে তা সাবধানে তুলে ফেলতে হবে যাতে রসুন গাছে কোনওভাবে আঘাত না লাগে৷
রসুন সংগ্রহ-
প্রায় সপ্তাহ খানেক পরে চারা দেখতে পাবেন৷ রসুন গাছের পাতা বাদামি রং হয়ে এলে বুঝতে হবে রসুন তুলে ফেলার সময় হয়ে এসেছে৷ এরপর তা ছায়াতে ২-৩ দিন রেখে দিতে পারলে ব্যবহারের উপযোগী হয়ে ওঠে৷ আপনি চাইলে বিক্রির জন্যও বেশিমাত্রায় রসুন চাষ করতে পারেন৷ যেহেতু এতে খুব বেশি পরিচর্যায় প্রয়োজন হয় না এবং এটি সহজে হয় তাই অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন রসুন চাষে৷
বর্ষা চ্যাটার্জি
Share your comments