নিম বহু বছর ধরে আয়ুর্বেদে ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আজও অনেকেই অনেক রোগের চিকিত্সার জন্য নিম পাতা ব্যবহার করেন। নিমের মূল, নিম গাছের বাকল, পাতা, ফুল বা নিমের বীজ এবং বীজের তেলের কর্নেল, প্রতিটি অংশেরই নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে। নিমের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা বহু রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে।
নিমের উপকারিতা -
নিম ব্রণর চিকিৎসায় সহায়ক। পিম্পলস ছাড়াও ত্বকের অনেক সমস্যার চিকিত্সায় নিম বেশ উপকারী। নিমের পেস্ট প্রয়োগের ফলে আপনার ত্বক ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থেকে মুক্তি পাবে এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই রোগ মুক্ত হয়ে যাবে। নিমের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের দাগ দূর করে, ত্বককে পরিষ্কার দেখায়। নিম তেলে উপস্থিত ফ্যাটি অ্যাসিড এবং উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন ই বার্ধক্যের প্রভাব হ্রাস করে এবং মুখকে সতেজ রাখে।
নিম পাতা খেলে মিলবে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি -
নিম খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে জ্বালা হয় না, যা আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং প্রদাহের মতো আলসার এবং অন্ত্রের রোগ থেকে দূরে রাখে।
নিম ক্যান্সারের জন্য উপকারী -
নিমে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, যা শরীরে ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। নিমের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ফ্রি র্যাডিকেলগুলির ক্ষতিকারক প্রভাব প্রতিরোধ করে, যা শরীরকে ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে। নিম ক্যান্সার প্রতিরোধ ছাড়াও হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
নিম ছত্রাকের সংক্রমণ দূর করে -
নিমের অ্যান্টিফাঙ্গাল প্রভাবের কারণে ত্বকে কোনও সংক্রমণ হয় না এবং এর গ্রহণও প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে তোলে।
নিম ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় সহায়ক -
ডায়াবেটিসের চিকিত্সায় নিম কতটা কার্যকর তা পরিষ্কার নয়, তবে এটি নিশ্চিত যে নিম খাওয়ার ফলে দেহে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ে। নিমের মধ্যে এমন কিছু রাসায়নিক রয়েছে যা ইনসুলিনকে সক্রিয় করে, যা দেহে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায় এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে।
নিম ম্যালেরিয়া নিরাময়ে কার্যকর -
এটি মশার দ্বারা সৃষ্ট রোগ নিরাময়ে সহায়ক। নিমের ধোঁয়া থেকে মশা পালায়, ফলে মশা বাহিত ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে।
নিমের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া -
নিমের রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা, তবে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। নিম ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট কয়েকটি প্রধান পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এখানে দেওয়া হল -
- নিম খাওয়ার কারণে ছোট বাচ্চাদের মধ্যে কিডনি ও লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- নিম তেল অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে রোগী শরীরে অসাড়তা অনুভব করতে পারে এবং কোমায় যেতে পারে।
- অতিরিক্ত মাত্রায় নিম খাওয়ার ফলেও পেটে জ্বালা হতে পারে। সুতরাং, এটি ব্যবহারের আগে এর পরিমাণের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিন।
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
Share your comments